Thank you for trying Sticky AMP!!

বইয়ের টানে, বন্ধুদের টানে

শুধু বই কেনা নয়। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতেও বইমেলায় আসা চাই তরুণদের। মডেল: আকিব, সামি, সানজিদা ও সামির। ছবি: সুমন ইউসুফ

গল্প, হাসি, আড্ডা আর ঘোরাঘুরির ফাঁকে ফাঁকে টুকিটাকি কেনাকাটা। মেলা মানেই তো এমন কিছু। আর সেটা যখন হয় বইমেলা তখন পুরো মেলার প্রাণই হয়ে যায় তরুণেরা।
গোটা ফেব্রুয়ারি মাস জুড়েই বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। শিশু থেকে বৃদ্ধ বিভিন্ন বয়সী মানুষের পদচারণে মাসভর মুখর থাকে মেলার প্রাঙ্গণ। তবে দর্শনার্থীদের বেশির ভাগটা জুড়েই কিন্তু থাকে তরুণ প্রজন্ম। মেলার প্রাঙ্গণ ঘুরে সেই চিত্রই দেখা গেল।
কখনো দলবেঁধে, কখনো বা বিচ্ছিন্নভাবে তরুণ-তরুণীরা বইমেলায় আসছেন। এঁদের সবাই যে বই কিনতে এসেছেন তা কিন্তু নয়। কেউ কেউ দু-একটা বই কিনলেও বেশির ভাগই এসেছেন ঘুরতে, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার জন্য ছুটে এসেছেন বইমেলায়।

বইমেলায় নতুন বইয়ের টানে আসেন তরুণেরা

তেমনই একজন দেবযানী দত্ত, পড়ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে। বই কিনেছেন কি না জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি প্রায় প্রতিদিনই বন্ধুদের সঙ্গে মেলায় আসি, বই পছন্দ করে রাখছি, মেলার শেষ দিকে একসঙ্গে কিনব। তা ছাড়া বইমেলায় যাওয়ার কথা বললে অভিভাবকেরাও বাধা দেন না বলে বন্ধুদের সঙ্গে অনেক আড্ডা দেওয়া যায়।’
বই কেনার পাশাপাশি বন্ধুদের সঙ্গে বিভিন্ন স্টলে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। তবে বইয়ের টানেই ছুটে এসেছেন বলে জানান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান ও রকিব হাসান। একজন কিনছেন, সঙ্গে আরও চার-পাঁচজন ঘুরতে আসছেন, এটাকেও ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
অনেকে দূর থেকেও ঘুরতে আসছেন বইমেলায়। যেমন মিরপুর থেকে প্রেমিকাকে নিয়ে ঘুরতে এসেছেন শিহাবুর রহমান। পড়ছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শেষ বর্ষে। তিনি বলেন, ‘ঢাকায় ঘোরাঘুরির জায়গার অভাব, তাই বইমেলায় এসেছি। পরিবেশটা উৎসবমুখর এবং নিরাপদও।’
মেলায় বইয়ের চেয়েও বাংলা একাডেমির সামনের রাস্তার দুপাশে বসা বাহারি জিনিসপত্রের দোকান আর নানান রকম খাবারই ফারিয়া তাবাসুমের বেশি ভালো লাগে। কিন্তু এবার রাস্তার পাশের দোকানগুলো উঠিয়ে দেওয়ায় উৎসবের আমেজ একটু কমে গেছে বলে মনে করেন ইডেন মহিলা কলেজের এই শিক্ষার্থী।
তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম শোনালেন আশার কথা, ‘আমি এই তরুণদের দেখে অনুপ্রাণিত হই। তাদের কাছে সব সময় টাকা থাকে না, তাই বইমেলা থেকে তারা সব সময় বইও কিনতে পারে না। কিন্তু এই তরুণেরা হয়তো অন্য কোথাও যেতে পারত, তারা সেটা না করে বইমেলায় আসছে, নতুন বইয়ের গন্ধ নিচ্ছে, তারপর ঘরে ফিরে যাচ্ছে। যদিও এখনকার তরুণদের বই পড়ার সময় নেই অত, তারা ফেসবুক, ইন্টারনেট নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকে।’