Thank you for trying Sticky AMP!!

বাহ, বোতল!

বোতলের সিপিতে তৈরি করা হয়েছে বাংলাদেশের মানচিত্র

বোতলের যে কত বাহার, তা প্রদর্শনীতে না গেলে বোঝাই যেত না। যেমন প্রদর্শনীতে পা ফেলতেই স্বাগত জানাল বোতলের একটি সুবিশাল ফটক। আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে যেতেই চোখে পড়ল লাল-সবুজ বোতল সাজিয়ে বানানো বাংলাদেশের মানচিত্র। বোতলের ঢাকনাগুলোকেও কাজে লাগিয়েছেন আয়োজকেরা। অপূর্বভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি। শুধু তা–ই নয়, ঢাকনা দিয়েই বানানো হয়েছে বেঙ্গল টাইগার আর স্মৃতিসৌধ। এসব প্রদর্শনীরই এক কোনায় ছিল বোতল দিয়ে বানানো স্মারকের দোকান। যেখানে বিক্রি করা হচ্ছে বোতলের বিভিন্ন অংশ দিয়ে তৈরি খেলনা, ঝাড়বাতি, শোপিসসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র। বোতল নিয়ে ব্যতিক্রমী শিল্পকর্ম দেখে তাই মনে মনে বলি—বাহ, বোতল! 

বোতলের কাঠামোতে তৈরি দোকান। ছবি: ছুটির দিনে

১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে রাজধানীর বনানী টিঅ্যান্ডটি মাঠে এই ভিন্নধর্মী প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি ক্লিন। ৩০ লাখের বেশি বোতল দিয়ে বানানো নানা শিল্পকর্ম নিয়ে প্রদর্শনীটি চলেছে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রদর্শনীতে ঘুরতে ঘুরতে মাঝমাঠে তৈরি করা মঞ্চটিও নজর কাড়ল। কেননা, মঞ্চে অতিথিদের বসার আসনগুলোও তো বানানো হয়েছে বোতল দিয়েই। সেই মঞ্চের পাশেই স্তূপ করে রাখা হয়েছে লাখ লাখ বোতল। 

প্লাস্টিকের বোতল দিয়েই কেন প্রদর্শনীটি? প্রশ্নটি করেছিলাম বিডি ক্লিনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সমন্বয়ক ফরিদ উদ্দিনকে। তিনি জানালেন, প্লাস্টিকজাতীয় বর্জ্যের দূষণরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতেই তাঁদের এই আয়োজন। যেমনটি তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়তই বোতল ব্যবহারের পর সেগুলো যত্রতত্র ফেলে দিই। পরবর্তী সময়ে এই বোতলগুলো মাটিকে দূষিত করে। ৩০ লাখ শহীদের রক্তে রঞ্জিত এই মাটিকে দূষণমুক্ত রাখতেই আমরা এই প্রদর্শনীটির আয়োজন করেছি।’ 

অতিথিদের বসার জন্য মঞ্চে পাতা ছিল প্লাস্টিকের বোতলে বানানো এমন আসন।

সচেতনতামূলক এ কাজের জন্য গত ১০ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ফেলে দেওয়া বোতল সংগ্রহ করেন সংগঠনটির সদস্যরা। তাঁরা বস্তা নিয়ে ঘুরে ঘুরে রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পুকুর, নর্দমা, ঝোপঝাড়সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে বোতল সংগ্রহ করেছেন। এ ছাড়া প্রদর্শনীর জন্য বোতল সংগ্রহে সহায়তা করেছে ঢাকার বিভিন্ন রেস্তোরাঁ। তবে রাস্তাঘাট আর নর্দমা থেকেই প্রদর্শনীর বেশির ভাগ বোতল সংগ্রহ করা হয়েছে। ফরিদ উদ্দিন বললেন, ‘অপ্রিয় হলেও সত্য, আমাদের অন্যতম দুটি পছন্দের পর্যটনকেন্দ্র খাগড়াছড়ি আর সাজেক থেকেই সংগ্রহ করা হয়েছে প্রায় দুই লাখ বোতল।’ এত অল্প সময়ে এত বোতল প্রাপ্তিও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় আমরা বুঝে অথবা না বুঝেই আমাদের চারপাশ দূষিত করে চলছি। 

প্রদর্শনী শেষে বোতলগুলো বিক্রি করে দেওয়া হবে প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার করে, এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে। বিক্রি থেকে প্রাপ্ত অর্থ পরিচ্ছন্নতার কাজেই ব্যয় করা হবে বলে জানান আয়োজকেরা।