Thank you for trying Sticky AMP!!

ভবিষ্যৎ নয়, শিশুরা বর্তমান নাগরিক: বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ

হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ বলেছেন, অনেক মা–বাবা তাঁর শিশুসন্তানকে সম্পত্তি মনে করেন। শাসনের নামে ইদানীং নির্যাতন করে থাকেন। তবে সন্তান সম্পত্তি নয়। শিশু নিজেই নাগরিক। অনেকে বলে থাকেন, শিশুরা ভবিষ্যৎ নাগরিক, যা সঠিক নয়। শিশুরা বর্তমান নাগরিক। সংবিধান ও দেশের প্রচলিত আইনে শিশুর নিজেরই সুরক্ষা পাওয়ার আইনগত অধিকার রয়েছে।

আজ শনিবার ‘ডাইভারশন ফ্রম দ্য পুলিশ স্টেশন আন্ডার দ্য চিলড্রেন অ্যাক্ট-২০১৩’ শীর্ষক এক কর্মশালায় বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ এসব কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে ইউনিসেফের সহযোগিতায় সুপ্রিম কোর্ট স্পেশাল কমিটি ফর চাইল্ড রাইটস ওই কর্মশালার আয়োজন করে।

বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ শিশু অধিকারসংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্ট বিশেষ কমিটির সদস্যও। বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ বলেন, শিশু অপরাধীদের ক্ষেত্রে শাস্তি না দিয়ে তাদের সংশোধনের পন্থায় আনতে হবে।

কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী বলেন, শিশুরা অপরাধ করার প্রবণতা নিয়ে জন্মায় না। অপরাধী হয়েও জন্মায় না। পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে তারা অপরাধে জড়িয়ে যায়। এ জন্য দায়ী কে, তা–ও আমাদের চিন্তা করতে হবে।

শিশু অধিকারসংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্ট বিশেষ কমিটির চেয়ারপারসন বিচারপতি ইমান আলী বলেন, শিশুরা খারাপ পথে যায়, খারাপ কাজ করে, চুরি করে, মারামারি করে, নিশ্চয়ই এর পেছনে কোনো একটা কারণ আছে। সে জন্য বলব যে আদতে শিশুরা এই খারাপ কাজ বা খারাপ ব্যবহারের জন্য দায়ী নয়। শিশুরা মারামারি করে কারণ তাদের পরিবারের মধ্যে মারামারি হয় বলে এটাকে জীবনের অংশ হিসেবে মেনে নেয়। যে ঘরে দৈনন্দিন মারামারি হয়, সে ঘরে শিশুরা বড় হচ্ছে মারামারি দেখতে দেখতে। মারামারি তাদের জন্য কিছুই না।

নিউজিল্যান্ড সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী বলেন, নিউজিল্যান্ডে গিয়েছিলাম সে দেশের শিশু বিচার ব্যবস্থা দেখার জন্য, সেখানে তখন আমাকে বলা হয়েছিল যে থানা থেকেই উনারা ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ শিশু আসামিকে মামলা থেকে বাদ দিয়ে দেন। ১০০ থেকে ৭৫ জন চলে গেলে মাত্র ২৫ জন যাবে কোর্টে। কোর্টে যাওয়ার পরে কোর্ট থেকে আরও ১০ থেকে ১৫ ভাগ ডাইভারশনের (বিকল্প পথ) মাধ্যমে অব্যাহতি পায়। আজ এখানে উপস্থিত হয়েছি, এই ডাইভারশনের ব্যাপারে আলোচনা করার জন্য।

পুলিশ সদস্য ও সমাজসেবা কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বিচারপতি ইমান আলী বলেন, আমাদের কাজটা হচ্ছে শিশুদের কীভাবে ভালো পথে নিয়ে আসব, কী করলে ভালো হবে, এগুলো নিয়ে চিন্তা করা। প্রবেশন অফিসার ও শিশুদের নিয়ে কাজ করা পুলিশ সদস্যদের যোগাযোগ বাড়ানোর ওপরও গুরুত্ব দেন তিনি।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার, বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র (শিশু অধিকারসংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্ট বিশেষ কমিটির সাচিবিক দায়িত্ব পালনকারী) মোহাম্মদ সাইফুর রহমান, ঢাকা মহানগর পুলিশের ডেপুটি কমিশনার ফরিদা ইয়াসমিন, সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক (ইনস্টিটিউশন) মো. আবু মাসুদ ও ইউনিসেফ বাংলাদেশের চাইল্ড প্রোটেকশন স্পেশালিস্ট শাবনাজ জাহেরীন উপস্থিত ছিলেন।