Thank you for trying Sticky AMP!!

ভালোবাসার জ্বলন্ত জুটি


চৌধুরী সাহেবের ম্যাচ বাক্স। বাক্স থেকে বের হয়ে আসার সময় চৌধুরীর একমাত্র মেয়ে জ্বলি ধাক্কা খায় জ্বালালের সাথে। জ্বালাল আবার তার বাবার দেহরক্ষী। কিন্তু এর আগে তাদের কখনো দেখা হয়নি।
ইউ ননসেন্স! পথ দেখে চলতে পারো না!
মুখ সামলে কথা বলুন, ম্যাডাম!
ইউ ইডিয়ট। কত্ত বড় সাহস! গায়ে ধাক্কা দিয়ে আবার মুখে মুখে কথা!


জ্বিল্লুর চৌধুরী বিশাল শিল্পপতি। ফলে, তাঁর অনেক শত্রু। কিন্তু সব শত্রুই ঘায়েল হয় দেহরক্ষী জ্বালালের কাছে।
জ্বালাল, আজ তুমি না থাকলে আমার যে কী হতো! তোমার কাছে আমি চিরঋণী হয়ে রইলাম, বাবা!
না হুজুর, না! এভাবে বলবেন না! আপনি আমার বাবার মতো!


ঠিক সে সময় কলেজে যাচ্ছিল জ্বলি। বাবার সঙ্গে জ্বালালকে কথা বলতে দেখে সে অবাক।
ইউ...
ইউ...!
ওকে তুই চিনিস? ও হচ্ছে আমার বডিগার্ড জ্বালাল। যা-ই হোক, তুই ওকে তোর গাড়িতে করে কলেজে নিয়ে যা।


না, বাবা! আমি একাই যেতে পারব।
মা রে, আমার শত্রুরা সব সময় আমাদের পেছনে লেগে আছে। যা, ওকে সাথে নিয়ে যা।
উপায় না দেখে বাবার কথাই মানতে হলো জ্বলিকে


জ্বালালের সঙ্গে গাড়ি থেকে নামতে দেখে জ্বলির সখীরা মহা-উৎসাহী। কিছুক্ষণ পরপরই বিষয়টি নিয়ে জ্বালাতন করতে শুরু করল তারা।
কী রে, জ্বলি, ছেলেটা কে?
ও কেউ না, নোবডি!
নোবডি হোক, ইয়েস বডি হোক, ছেলেটা কিন্তু ভেরি ভেরি স্মার্ট!


গাড়িতে করে বাসায় ফেরার পথে বাধল ঝামেলা। চৌধুরী সাহেবের শত্রু জ্বিলমত খাঁর ছেলে জ্বালাও-পোড়াও খাঁ তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে হামলা করল জ্বলির গাড়িতে। বের করে আনল ওকে গাড়ি থেকে।
হা হা, সুন্দরী, আজ থেকে তুমি আমার!
বাঁচাও! বাঁচাও!
জ্বালাও খাঁ, জ্বলিকে ছেড়ে দে...!
না ছাড়লে কী করবি রে ড্যাম ম্যাচের কাঠি? হা হা হা।


তুমুল মারপিটের পর জ্বালাও ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের হাত-পা ভেঙে দিয়ে জ্বলিকে উদ্ধার করল জ্বালাল।
ঢিঁশাআআআআআআ...


রাত। জ্বলি শুয়ে আছে তার বাবার
দামি বাক্সে, জ্বালাল তার ছোট্ট কম দামি বাক্সে। দুজনের চোখেই ঘুম নেই।
তারা বুঝতে পারছে, তাদের ভেতরে ভালোবাসার আগুন জ্বলে গেছে।
জ্বলি আর দেরি না করে ফোন
করল জ্বালালকে।
আই বিলিভ, উই আর অ্যা পারফেক্ট ম্যাচ!
আই লাভ ইউ, মাই হট জ্বলি বেবি!


পরদিন পার্কে খুব রোমান্টিক এক গানের তালে তালে নাচতে লাগল জ্বলি ও জ্বালাল। হাঁটতে গিয়ে তা দেখে ফেললেন চৌধুরী সাহেব। সঙ্গে সঙ্গে দলবল নিয়ে ধরে ফেললেন জ্বালালকে।
কম দামি ম্যাচের কাঠি, কত্ত বড় সাহস, তুই আমার মেয়ের দিকে হাত বাড়াস!
চৌধুরী সাহেব, আমাদের দাম কম হতে পারে, কিন্তু আমরাও পারি পৃথিবীর সবকিছু জ্বালিয়ে দিতে...!
আমার খেয়ে, আমার পরে এত বড় কথা! তুই আমার মেয়ের ছায়া মাড়াবি না, বেত্তমিজ! আর জ্বলি, আজ থেকে তুই বাসার বাইরে যাবি না।

১০
কিন্তু প্রেম মানে না কোনো বাধা। তাই সে রাতেই গোপনে জ্বলিদের বাক্সে ঢুকে পড়ে জ্বালাল। জ্বলিকে নিয়ে পালিয়ে যায় গোপন জায়গায়। এদিকে সকালে উঠে মেয়েকে না পেয়ে চৌধুরী সাহেব হানা দেন জ্বালালের বাসায়। জ্বালালকে না পেয়ে তাঁর মা জ্বিনাত বানুকে ধরে নিয়ে আসে তাঁর চ্যালারা। বেঁধে রাখে নোংরা এক বাক্সে।

১১
ঠিক একই সময়ে জ্বালালের অনুপস্থিতিতে চৌধুরী সাহেবকে আক্রমণ করে বসে জ্বালাও-পোড়াও ও তার বাহিনী। বেঁধে রাখে ওই একই নোংরা বাক্সে, জ্বালালের মায়ের সঙ্গেই। গায়ে পানি ঢেলে দেওয়ার হুমকি দিয়ে লিখে দিতে বলে তাঁর যাবতীয় সম্পত্তি।

১২
সেই খবর শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে জ্বালাল। তুমুল মারপিট করে উদ্ধার করে তার মা ও চৌধুরী সাহেবকে।

১৩
সবশেষে ভুল বুঝতে পারেন চৌধুরী সাহেব। ক্ষমা চান জ্বালালের কাছে।
আমার ভুল হয়ে গেছে, বাবা জ্বালাল! আমাকে তুমি মাফ করে দাও!
চৌধুরী সাহেব, জ্বালাল আপনার ছেলের মতো। ওর কাছে আপনি মাফ চাইছেন কেন!
ঠিকই বলেছেন, বেয়াইন সাহেব। আজ থেকে জ্বালাল আমার ছেলে, জ্বলি আপনার মেয়ে। আমি ওদের বিয়ের ব্যবস্থা করছি।

১৪
অবশেষে জ্বলি ও জ্বালালের বিয়ে হয়ে গেল এবং ‘অতঃপর তাঁহারা সুখে-শান্তিতে বসবাস করিতে লাগিল’।
তুমি যে ম্যাচের আগুন জ্বালিয়ে দিলে
মোর প্রাণে মোর প্রাণে...
সমাপ্ত