Thank you for trying Sticky AMP!!

ভ্যান নিয়ে মুংলী রানীর সংগ্রাম

মুংলী রানী

২০০২ সালে মুংলী রানীকে খেলার মাঠ ছেড়ে যেতে হয় শ্বশুরবাড়িতে। তবে বিভিন্ন নির্যাতনে তিন সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে ফিরতে হয়। কিন্তু এক মাস পর দরিদ্র বাবাও তাঁকে নিজের পথ খুঁজে নিতে বললেন। মানুষের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নিয়ে প্যাডেল আলা পুরাতন ভ্যান আর পান-সুপারি কিনলেন। গ্রামে ঘুরে ঘুরে পান বিক্রি শুরু। এরপর মাছের ব্যবসা। ব্যবসার লাভের টাকায় ভ্যানে চার্জার ব্যাটারি লাগিয়ে এখন ভ্যানে যাত্রী বহন করছেন।

মুংলী রানীর (৩১) স্বামীর বাড়ি জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বামনপাড়া গ্রামে। মুংলী সাত-আট বছর ধরে তাঁর বাবার বাড়ি জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামেই থাকছেন।

বাবার বাড়ি একেবারেই চলে আসার পর গ্রামের এক ব্যক্তি মুংলীকে ভ্যানে করে পান-সুপারির ব্যবসা করার পরামর্শ দেন। প্রায় এক বছর পান-সুপারির ব্যবসা করে ছয় হাজার টাকা জমালেন। একদিন স্থানীয় তিলকপুর হাটে মাছ কিনতে গিয়ে শুনলেন মাছের ব্যবসা খুবই লাভজনক। তারপর নদীর মাছ পাইকারি বিক্রি শুরু করেন। মাছ আনা, আবার হাটে-হাটে গিয়ে মাছ বিক্রি করতে গিয়ে সংসার সামলাতে পারছিলেন না। তাই মাছের ব্যবসা ছেড়ে ভ্যানে যাত্রী বহন শুরু করেন। মুংলীর তিন ছেলেমেয়ে স্কুলে পড়ছে। অন্যের জায়গায় বসবাস করছেন। এখন স্বপ্ন দেখছেন, একটু জায়গা কিনে বাড়ি করার।

মুংলী অসুস্থ হলে ভ্যান চালাতে পারেন না। এই ভ্যান চালানোর জন্য মানুষের অনেক টিপ্পনী, কুকথা শুনতে হয়েছে। তবে তাতে মুংলীর কিছু যায় আসে না। সংসার তো চালাতে হবে।

তিলকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও বিষ্ণুপুর গ্রামের বাসিন্দা বাদেশ আলী বললেন, ‘আমি নিজেই মুংলীর শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দরবার-সালিস করে মুংলীকে রেখে এসেছিলাম। কিন্তু কিছুদিন ভালো থাকার পর আবারও একইভাবে নির্যাতন করত। তারপর শুরু হয় মুংলীর সংগ্রাম।’

আক্কেলপুর উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রিতা রানী পাল বলেন, ‘মুংলী রানী ব্যাটারিচালিত ভ্যান চালান তা জানার পর তাঁকে আমার কার্যালয়ে ডেকে পাঠিয়েছিলাম। তিনি আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। আমার দপ্তরে বিভিন্ন ট্রেডের প্রশিক্ষণ আছে। একটি ট্রেডে তাঁকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করব।’