Thank you for trying Sticky AMP!!

মন্দিরে যখন নারীরা নেতা

এই নারীরাই নেতৃত্ব দিচ্ছেন পূজায়। ছবি: সাদ্দাম হোসেন

প্রায় ৪০ জন নারী এক হয়ে মন্দিরের আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করছেন। কেউ কোদাল দিয়ে মাটি কেটে চত্বরটি সমান করায় ব্যস্ত। পুরো চত্বর নারীদের আনাগোনায় মুখর হয়ে আছে।

এবারই প্রথম দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলা সদর ইউনিয়নের খলসিবুনিয়া পূর্বপাড়া (কাছারিবাড়ি) গাছতলা মন্দিরে। আর ওই মন্দিরে পূজা উদ্‌যাপনের দায়িত্ব নিয়েছেন ওই এলাকার নানা বয়সী নারীরা।

এর আগে আরেকটি মন্দিরে প্রতিবছর দুর্গাপূজার আয়োজন করা হতো। কিন্তু এবার নারীদের আয়োজন দেখে আগের ওই মন্দিরে পূজার আয়োজন বন্ধ করে দিয়েছেন এলাকাবাসী। এবার পুরুষেরা অংশগ্রহণ করবেন নারীদের আয়োজিত ওই পূজা অনুষ্ঠানে।

এলাকাবাসী জানান, শুধু নারীরা একজোট হয়ে কোনো পূজার আয়োজন করছেন, তা এবারই প্রথম দেখছেন ও শুনছেন। পুরুষেরা ওই কাজে কোনো হস্তক্ষেপ করছেন না। আর খুব বেশি প্রয়োজন না হলে পুরুষদের ডাকছেনও না ওই নারীরা।

ওই মন্দির ঘিরে রয়েছে মোট ২৭৫টি হিন্দু পরিবারের বসবাস। প্রতিটি পরিবার থেকে কোনো না কোনো নারী ওই দলের সঙ্গে যুক্ত আছেন।

সম্প্রতি গিয়ে দেখা গেল, প্রতিমা শুকানোর কাজ চলছে।

নারীদের এই পূজায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন বীণা রানী বিশ্বাস। তিনি বললেন, গাছতলার ওই মন্দিরে প্রতি মাসেই কোনো না কোনো পূজা অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘকাল ধরেই ওই পূজা চলে আসছে। জায়গাটিও দেবোত্তর সম্পত্তি। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেখানে কোনো দুর্গাপূজার আয়োজন হয়নি। তাই এবার এলাকার নারীরা একজোট হয়ে ওই মন্দিরে দুর্গাপূজা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বীণা বিশ্বাস বলেন, সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ওই কথা এলাকার পুরুষদের জানানো হয়। প্রথম প্রথম বাধা দিলেও একসময় আর পুরুষেরা বাধা দিচ্ছেন না। সবাই পুরোপুরি উৎসাহ না দিলেও নিরুৎসাহিতও করছেন না।

পূজা করার সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে আর্থিক সংকট। অর্থ পেতে বিভিন্ন জায়গায় ধরনা দিচ্ছেন নারীরা। তাঁদের আয়োজন যেন সফল হয়, সেই আবেদন করেছেন সমাজের বিত্তশালীদের কাছে।

ওই পূজা কমিটির সভাপতি লিপু বিশ্বাস বললেন, ‘আর্থিক সহযোগিতা বিশেষ করে সরকারের সহযোগিতা পেলে আমাদের কাজটি অনেক সহজ হবে।’

নারীদের পূজার উদ্যোগে খুশি বটিয়াঘাটা উপজেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অনুপম বিশ্বাস। তিনি বললেন, কোথাও নারীরা পিছিয়ে নেই। পূজার মতো এমন অনুষ্ঠানে নারীরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, এটা উৎসাহব্যঞ্জক। আমরা সব রকমের সহযোগিতা করছি।’