Thank you for trying Sticky AMP!!

রংতুলিতে ডাকটিকিটের ঐতিহ্য

শিশুদের রংতুলিতে বাংলাদেশের ডাকটিকিটের ছবি

আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকার গ্যালারি জুমে ঢুকেই থমকে দাঁড়াতে হলো। গ্যালারির সরু করিডরে সাঁটানো প্রতিটি ডাকটিকিট যেন একেকটি গল্প বলছে। আলো-আঁধারির ছায়ায় কোথাও বাংলাদেশের গ্রামীণ ঐতিহ্য নকশিকাঁথার নকশা ফুটে উঠেছে সাদা–কালো ক্যানভাসে আবার কোথাও নানা রঙের ব্যঞ্জনা পেয়েছে রিকশার বর্ণিল আকৃতি। গ্যালারিতে ঢুকেই হাতের ডানে এক জায়গায় খুব সংক্ষেপে গুছিয়ে লেখা প্রদর্শনী সম্পর্কে সবিস্তারে।

আয়োজনের নাম—ডাকটিকিটে দেখি আমার দেশ। ৯ অক্টোবর শুরু হওয়া প্রদর্শনীটির সমাপনী দিন ছিল ১৮ অক্টোবর। প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী ২৮ জন শিশুশিল্পী। এ শিল্পীরা মনসিজ আর্ট একাডেমির উদ্যোক্তা সাদিয়া শারমিনের তত্ত্বাবধানে ২১ দিনের কর্মশালা করে। এরপর নিজেরাই শিল্পকর্ম আঁকে। শিল্পকর্ম বলতে বিভিন্ন সময়ের ৩২টি ডাকটিকিটের অনুলিপি ও ১২টি নতুন ডাকটিকিটের নকশা। ডাকটিকিটের বিস্তৃত এবং ঋদ্ধ ইতিহাস ফুটে উঠেছে শিশুদের আঁকায়।

এক জায়গায় চোখে পড়ল বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর প্রকাশিত প্রথম আটটি ডাকটিকিটের অনুলিপি। একটি ডাকটিকিটের নকশায় ‘Dacca University’ লেখার ওপরে রক্তাক্ত হাতের ছাপ। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নৃশংসতার কথা মনে করিয়ে দিল ডাকটিকিট। আরেকটু সামনে এগিয়ে দেখলাম, শিল্পীরা তাদের বিচিত্র কল্পনা ফুটিয়ে তুলেছে ডাকটিকিটের ক্যানভাসে। সে কল্পনায় পল্লির জীবনধারা যেমন ফুটে উঠেছে ভিন্ন আঙ্গিকে, তেমনি আজকের তরুণদের স্বপ্ন কিংবা ফুটবলে মেয়েদের এগিয়ে যাওয়াও উঠে এসেছে নানা রঙের ছটায়।

সবচেয়ে চমকপ্রদ লাগল ডাকটিকিটের সময়চিত্র। ডাকহরকরা থেকে আধুনিক পোস্ট অফিস পর্যন্ত কীভাবে এল, সে সময়চিত্রের ছয়টি ডাকটিকিটের ফ্রেমে চিত্রায়িত হয়েছে। এ যেন একলহমায় ডাকটিকিটের বিবর্তনের ইতিহাস জানার সুযোগ।

সাদিয়া শারমিন জানালেন, বাংলাদেশ ডাক বিভাগ এ প্রদর্শনী উপলক্ষে একটি বিশেষ খাম ও সিলমোহর উদ্বোধন করেছে। শিশুদের ডাকটিকিটের ওপর চিত্রাঙ্কনের পেছনে প্রধানতম উদ্দীপনা হিসেবে কাজ করেছে ডাকটিকিটের ঐতিহ্য। ডাকটিকিটগুলোর পেছনের ইতিহাস তাদের অনুপ্রাণিত করেছে। এর মাধ্যমে শিশুরা চিরপরিচিত বাংলাদেশকেই যেন এক নতুনতর আঙ্গিকে অনুধাবন করেছে।