Thank you for trying Sticky AMP!!

রাবিয়া'স হাউসের রাবিয়ার পথচলার গল্প

রাবিয়া খাতুন

রাবিয়া খাতুন চেয়েছিলেন পড়ালেখা শেষে চাকরি করবেন। কিন্তু এমএ পরীক্ষার পরই বিয়ে এবং স্বামী চান না স্ত্রী বাড়ির বাইরে কাজ করুক। রাবিয়ার মন ভেঙে গেলেও থেমে থাকেননি। ছোট ভাই আবুল হাসনাতকে নিয়ে ২০১৬ সালের শেষের দিকে ইউটিউব চ্যানেলে চালু করলেন ‘রাবিয়া’স হাউস’। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি।

রাবিয়া’স হাউস রান্নাবান্না–বিষয়ক একটি চ্যানেল। ছোটবেলা থেকেই রান্নাবান্না ও কুটিরশিল্পের প্রতি রাবিয়ার আগ্রহ ছিল। তাঁর বনশ্রীর বাসায় গিয়ে দেখা গেল, দেয়ালজুড়ে টাঙানো তাঁর করা বিভিন্ন শিল্পকর্ম। তবে এসব কাজকে ছাপিয়ে গেছে তাঁর রন্ধনশিল্প। ইউটিউব চ্যানেলে নতুন নতুন রেসিপি নিয়ে হাজির হন তিনি। রান্না শুধু দেখানো হয় না, বিস্তারিতভাবে শিখিয়েও দেওয়া হয়। রাবিয়া রান্না করেন আর ভাই আবুল হাসনাত তা ক্যামেরায় ধারণ ও সম্পাদনা করেন।

সম্প্রতি কথা বলার সময় রাবিয়া জানান, রাবিয়া’স হাউস ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা প্রায় ৫ লাখ। প্রতিদিন ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ নতুন সাবস্ক্রাইবার যোগ হচ্ছেন রাবিয়ার চ্যানেলে। ‘চুলায় প্লেইন কেক তৈরির হাতেখড়ি’ শিরোনামের ভিডিওটি বেশি জনপ্রিয়।

রাবিয়া বললেন, ‘প্রথমে রূপচর্চাবিষয়ক একটি ভিডিও আপলোড করেছিলাম। তেমন কেউ দেখেননি। যখন থেকে রান্নার ভিডিও দেওয়া শুরু করলাম, তখন থেকে হুহু করে সাবস্ক্রাইবার বাড়তে থাকল।’ ২০১৮ সালে রাবিয়া অর্জন করেন ইউটিউবের সিলভার প্লে বাটন।

রাবিয়া খাতুনের জন্ম ঢাকার রাজারবাগে। বাবা আবুল কালাম পুলিশ কর্মকর্তা। মা আয়েশা খাতুন গৃহিণী। রাবিয়া সিদ্ধেশ্বরী মহিলা কলেজ থেকে এমএ করেছেন। পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগেই ২০১১ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে। রাবিয়া ছোটবেলায়ই শিখে ফেলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অনেক আঞ্চলিক রান্না। টিভিতে রান্নার অনুষ্ঠানগুলো দেখতেন এবং মোবাইল ফোনে রেকর্ড করে রাখতেন।

রাবিয়া এখন রামপুরার বনশ্রীর একটি বাড়িতে মা, ভাই ও একমাত্র সন্তান ইহানকে নিয়ে থাকেন। রাবিয়ার বাবা কাতারপ্রবাসী এবং স্বামী লন্ডনে আইন নিয়ে পড়াশোনা করছেন। ভাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

রাবিয়া বলেন, ‘ইউটিউব থেকে আয় ভালোই। ইউটিউবের মাধ্যমে আমি এখন স্বাবলম্বী।’ তাঁর মতে, কেউ যদি একাগ্রতা ও ধৈর্যের সঙ্গে প্রতিনিয়ত নতুন কিছু দিতে পারেন, তাহলে ইউটিউবের মাধ্যমে মাসে ৫০ হাজার থেকে শুরু করে কয়েক লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। রাবিয়া তাঁর আয়ের প্রায় পুরো টাকা তাঁর ভাই হাসনাতের পড়ালেখায় ব্যয় করেন। ভবিষ্যতে দেশেই একটি খাবারের দোকান দিতে চান রাবিয়া।