Thank you for trying Sticky AMP!!

রোগ প্রতিরোধের শিক্ষা

ইশরাত আনজুম

ভর্তি পরীক্ষায় আমার যা রেজাল্ট ছিল, অনায়াসেই হয়তো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের অন্য যেকোনো বিষয়ে ভর্তি হতে পারতাম। কিন্তু পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে বেছে নিলাম পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস। শুনে পরিচিত অনেকেই ভীষণ অবাক হয়েছিল। ফার্মেসি, জেনেটিকস ও মাইক্রোবায়োলজির মতো সুপরিচিত আর ভালো বিষয় ছেড়ে হঠাৎ পাবলিক হেলথ কেন! তবে আমার ঠিকই আত্মবিশ্বাস ছিল। আসলে বিষয়টা এত গুরুত্বপূর্ণ এবং এই বিষয়ে কাজ করার সুযোগ এত বেশি যে আমি জানি এ ক্ষেত্রে আমি ভালো কিছু করতে পারব।

 ‘পাবলিক হেলথ’ বিষয়টি আমাদের বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের কাছে অনেকটা অপরিচিত হলেও বিশ্বদরবারে এর বেশ সুনাম আছে। যার ওপর ভিত্তি করে ২০১১ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস’ বিভাগ চালু হয়। পাবলিক হেলথ বা জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা শিক্ষার বিষয়বস্তু হচ্ছে, মানুষের রোগ নিয়ে গবেষণা করা। পাশাপাশি প্রতিরোধের পদ্ধতি ও ব্যবস্থাপনার পথ আবিষ্কার করা। আমাদেরকে মূলত মানবদেহ, বায়োকেমিস্ট্রি, নৃবিদ্যা, ইপিডিমিওলজি, বায়োস্ট্যাটিস্টিকস, প্রজনন ও জনস্বাস্থ্য, মাতৃমঙ্গল শিশু স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা গবেষণা পদ্ধতি, পেশাগত স্বাস্থ্য, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা, হসপিটাল ব্যবস্থাপনা, রিসার্চ ম্যাথোডলজি, প্রোগ্রামিং অ্যান্ড সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট প্রভৃতি বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে পড়ানো হয়। এ ছাড়া নিয়মিত বিভিন্ন হাসপাতাল বা গবেষণাগারে গিয়ে, সেমিনারে অংশগ্রহণ করে আমরা পেশাজীবনের জন্য প্রস্তুত হই।

পাবলিক হেলথে ক্যারিয়ার গড়ার খুব ভালো সুযোগ রয়েছে। আমেরিকা, কানাডা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও থাইল্যান্ড এই বিষয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য বৃত্তি দেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউএনডিপি, ইউএনএফপিএ, আইসিডিডিআরবিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় পাবলিক হেলথে স্নাতকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। এ ছাড়া সেভ দ্য চিলড্রেন, এফএইচআই-৩৬০, আইডিআরসির মতো প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মসংস্থান রয়েছে। বাংলাদেশেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাবলিক হেলথ বিশেষজ্ঞদের ব্যাপক চাহিদা। এ ছাড়া সরকারের অধীনে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ, পরিবেশ, পুষ্টি পরিকল্পনা ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়ে পাবলিক হেলথ গ্র্যাজুয়েটরা কাজ করতে পারেন।

ডাক্তারের কাজ রোগ প্রতিকার করা, কিন্তু পাবলিক হেলথ বিশেষজ্ঞের কাজ রোগ প্রতিরোধ করা। এর গুরুত্ব বুঝে অনেকেই এখন এ বিষয়ে পড়তে আগ্রহী হচ্ছেন।

ইশরাত আনজুম: 
পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগ, ৪র্থ বর্ষ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়