Thank you for trying Sticky AMP!!

শান্তিরক্ষায় সামরিক বৈমানিক নাইমা ও তামান্না

স্মিত একটা হাসির রেখা ফুটে উঠল ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট নাইমা হক ও ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তামান্না-ই-লুৎফীর ঠোঁটের কোণে। বাংলাদেশের সামরিক ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নারী বৈমানিক হিসেবে তাঁরা যাচ্ছেন। গতকাল সোমবার ঢাকা সেনানিবাসের বিমানবাহিনী ঘাঁটি বাশারের ৩১ স্কোয়াড্রনের মিলনায়তনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেন।

১৪ বছর ধরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সদস্যরা শান্তিরক্ষা মিশনে যাচ্ছেন এবং সাত বছর ধরে নারী কর্মকর্তারা যাচ্ছেন। কিন্তু নারী বৈমানিক এই দুজনের আগে কেউ যাননি। ৭ ডিসেম্বর কঙ্গোর উদ্দেশে রওনা দেবেন তাঁরা।

নাইমা ও তামান্না দুজনেরই বেড়ে ওঠা ঢাকায়। তামান্নার বাবা বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তাই ছোটবেলা থেকে বিমানচালকই হতে চেয়েছিলেন তিনি। নাইমার বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। মা-বাবা দুজনই চেয়েছিলেন মেয়ের বৈমানিক হওয়ার ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিতে। তাঁদের পরিবারে ছেলেমেয়েকে কখনো আলাদা মনে করা হয় না। দুজনের পরিবারই তাঁদের সব সময় সাহস জোগায়। তাঁরা অকুতোভয় হলেও এবার নাকি পরিবার কিছুটা ‘নার্ভাস’। কঙ্গোতে যাওয়ার বিষয়ে নাইমা ও তামান্না দুজনই রোমাঞ্চিত। বাংলাদেশের মেয়েদের জন্য এটা বড় অর্জন। এই দুজনকে দেখে অনেক পরিবার তাদের মেয়ের বৈমানিক হওয়ার স্বপ্নপূরণ করতে উদ্যোগী হবে।

সম্প্রতি হয়ে যাওয়া ঢাকা লিট ফেস্টে এই দুজন হার স্টোরি: অ্যাডভেঞ্চারস অব সুপারগার্লস বইটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বইটিতে নাইমা ও তামান্নার সাহসিকতার গল্পও আছে। কেমন লেগেছে তাঁদের? নাইমা বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে এটা অনেক বড় পাওয়া। খনা থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতার গল্প আছে। এমন ইতিহাসে অবদান রাখা নারীদের পাশে নিজেদের স্থান দেখে খুব ভালো লেগেছে।’

তামান্না অবশ্য বক্তিগত সাফল্য হিসেবে দেখতে চাচ্ছেন না বিষয়টিকে। তিনি মনে করেন, বইটিতে তিনি স্থান পেয়েছেন বিমানবাহিনীর জন্য।

এই দুই সামরিক বৈমানিক ২০১৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর যশোরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ঘাঁটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান এ সলো টেস্টের সফলতার মাধ্যমে সামরিক পাইলট হিসেবে স্বীকৃতি পান। নাইমা হক ও তামান্না-ই-লুৎফী দুজনই চান আরও অনেক মেয়ে বিমানবাহিনীতে যোগদান করুক।

‘মেয়েদের জন্য চমৎকার কাজের পরিবেশ এখানে। চ্যালেঞ্জিং কাজে নারীরা আসুক।’ বলেন নাইমা। গতকাল সকালে গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এমআই-১৭ হেলিকপ্টার চালনা করেন এই দুই বৈমানিক। হেলিকপ্টারের সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসছিলেন, মনে হচ্ছিল চোখেমুখে তৃপ্তি, আত্মবিশ্বাসের দৃঢ়তা। এমন সাহস তাঁদের শান্তিরক্ষার কাজে নিশ্চয় সফল করবে।