Thank you for trying Sticky AMP!!

শিল্পীর নীরবে চলে যাওয়া

মোহসিনা আলী। ছবি: সংগৃহীত

শিল্পী মোহসিনা আলী অনেকটা নীরবেই চলে গেলেন। ২১ জুন রাত ১০টায় ৯৬ বছর বয়সে তিনি মারা যান। মোহসিনা আলী অবিভক্ত ভারতের কলকাতায় শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত আর্ট কলেজ থেকে শিল্পকলায় গ্র্যাজুয়েশন করেন। এক বছর তিনি প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী কামরুল হাসানের ডিজাইন সেন্টারে কাজ করেন। তবে এরপর আর কোনো প্রতিষ্ঠানকে কর্মস্থল হিসেবে বেছে না নিয়ে তিনি ঘর-সংসারের পাশাপাশি নীরবে–নিভৃতে শিল্পচর্চা করে যান। পরিবারকে সময় দেন। পরিবার–অন্তঃপ্রাণ সেই শিল্পীর শিল্পকর্মের মুনশিয়ানা আজও তাঁর ভক্ত–সুহৃদদের মুগ্ধ করে। তিনি কবিতাও লিখতেন। তাঁর কবিতার খাতায় নিজ হাতে আঁকা স্কেচসহ কবিতা আমার দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। 

মোহসিনা আলী, আমাদের প্রিয় ‘লিপি’ আপা এমন একটি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, যে পরিবারের সদস্যরা অবিভক্ত ভারতে একটি আলোকিত সমাজ গড়ে তোলার জন্য সমস্ত মেধা, প্রজ্ঞা, সৃষ্টিশীলতাকে নিবেদন করে গেছেন। ঢাকার গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষÿহামিদা খানম, পথিকৃৎ আলোকচিত্রী সাইদা খানম, শিক্ষাবিদ মমতাজ খানম মোহসিনা আলীর বোন। প্রখ্যাত সুরকার, গীতিকার, রবীন্দ্রসংগীত বিশেষজ্ঞ আবদুল আহাদ তাঁর ছোট ভাই, প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ সালাহউদ্দীন আহমেদ ছিলেন বোন অধ্যক্ষÿহামিদা খানমের স্বামী এবং কবি মাহমুদা খাতুন সিদ্দিকা তাঁদের খালা। 

শিল্পী মোহসিনা আলীর বাবা আব্দুল সামাদ খাঁ ছিলেন সরকারি স্কুলের পরিদর্শক। ফরিদপুর আদি বাড়ি হলেও বাবার চাকরির কারণে মোহসিনা আলীর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে রাজশাহী ও পাবনায়। মেয়েদের জন্য কোনো স্কুল না থাকায় পড়তে হয়েছে ছেলেদের স্কুলে। বিদ্যালয়ের পড়া শেষে চল্লিশের দশকে মোহসিনা আলী চলে যান কলকাতায়।

আমরা বিশ্বাস করি, শিল্পসত্তার লয় নেই, বিনাশ নেই। ছাই চাপা দিয়ে আর যা–ই হোক শিল্পীর ভেতরের আগুন নিভিয়ে দেওয়া যায় না। কখনোই শিল্পীর ভেতরের আগুন নেভে না। শিল্পী মোহসিনা আলী আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকবেন অনন্তকাল। 

দিল মনোয়ারা, সাংবাদিক