Thank you for trying Sticky AMP!!

শুধু আইসক্রিম খেয়েই ওজন কমিয়েছেন তিনি!

আইসক্রিম খেয়ে ৩২ পাউন্ড ওজন কমিয়েছেন হাওয়ার্ড। ছবি: ফ্যাক্ট

ওজন কমানোর চেষ্টায় অনেকে খেয়ে থাকেন আধপেটা। কেউ আবার বলতে গেলে না খেয়ে থাকেন! আবার খাবারের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয় স্নেহজাতীয় খাবার। খাবার খেয়েও কিন্তু ওজন কমানো যায়। এমনকি সেটা আইসক্রিম খেয়েও যে সম্ভব, তা-ই করে দেখালেন অ্যান্থনি হাওয়ার্ড ক্রো। যুক্তরাষ্ট্রের ৩২ বছর বয়সী এই অনলাইন ট্রেনার ও ইউটিউবার স্রেফ আইসক্রিম খেয়েই কমিয়েছেন ৩২ পাউন্ড ওজন! 

ওজন কমাতে হুট করে খাবার কমিয়ে দেওয়া ভালো কোনো কথা নয়। এতে মেজাজটাও থাকে খিটখিটে, গতি কমে আসে কাজকর্মে। এখনকার ট্রেনাররা বলছেন, হিসাব করে খেলে আইসক্রিম খেয়েও ওজন কমানো যায়। শুধু বলে নয়, কথাটা কাজে প্রমাণ করে দেখাতেই মাঠে নেমেছিলেন হাওয়ার্ড।
প্রতিদিন ২০০০ ক্যালরির আইসক্রিম, ৫০০ ক্যালরির প্রোটিন, সঙ্গে পানীয়; এভাবে ১০০ দিন খাওয়া-দাওয়া করে ক্রো ওজন কমিয়েছেন। ৩২ পাউন্ড ওজন কমার সঙ্গে বেড়েছে তাঁর রক্তপ্রবাহের গতি। অনেকের কাছে এটা সফলতা মনে হলেও হাওয়ার্ডের কাছে তা ছিল ভীষণ কষ্টসাধ্য, ‘যে খাদ্যাভ্যাস আমি মেনে চলেছি, কোনো সন্দেহ নেই এ পথে যাত্রা শুরুর পর সেটা ছিল সবচেয়ে কষ্টসাধ্য ব্যাপার।’
ওজন কমাতে প্রথাগত ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে এর আগেও বেশ কয়েকবার ডায়েটিং নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন হাওয়ার্ড। একবার টানা ৩০ দিন ফাস্টফুড ছাড়া আর কিছু খাননি! হাওয়ার্ড তখন ‘ডায়েটিং প্রজেক্ট’ সেভাবে শুরু করেননি। এর মধ্যে ইউটিউবে নিজের চ্যানেল নিয়ে পড়ে থাকতেন দৈনিক চার থেকে সাত ঘণ্টা। মজে থাকতেন ব্লগ নিয়ে, বন্ধ করেছিলেন জিমে যাওয়া। জীবন নিয়ে কোনো আগ্রহ ছিল না।
হঠাৎ তাঁর মনে হলো, এভাবে চলতে দেওয়া ঠিক নয়। তখনই গা ঝাড়া দিয়ে উঠলেন। ‘ডায়েটিং প্রজেক্ট’ গুরুত্বের সঙ্গে শুরু করলেন। হাওয়ার্ড প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন, ওজন কমাতে ব্যায়াম কিংবা খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণের থেকে ক্যালরির ওপর গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। অর্থাৎ যে পরিমাণ খাও, সে পরিমাণ পরিশ্রম করো। আইসক্রিম না ফাস্টফুড খেয়ে ক্যালরি নিচ্ছেন, সেটা কোনো বিষয় নয়। মূল ব্যাপার হলো যতটুকু ক্যালরি গ্রহণ করছেন, ততটুকু খরচ করছেন কি না। কারণ, জমে থাকা ক্যালরিই শেষে রূপ নেয় মেদ বা চর্বিতে।
তাতে আপনি মোটা হতে বাধ্য। আইসক্রিম ‘ডায়েটিং’ দিয়ে হাওয়ার্ড প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন, খাবারটা মোটেও অস্বাস্থ্যকর নয়। এ মত প্রচার করতেই নিজের ইউটিউব চ্যানেল ‘অ্যাবস অ্যান্ড আইসক্রিম’ খুলেছিলেন হাওয়ার্ড।
টানা ১০০ দিন আইসক্রিম খেয়ে হাওয়ার্ডের রক্তের ‘লিপিড’ বেড়েছে। ভালো কোলেস্টেরল ‘এইচডিএল’ (হাই ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন কোলেস্টেরল) বেড়ে তাঁর রক্তে। কমেছে ‘খারাপ কোলেস্টেরল’ খ্যাত ‘এলডিএল’ (লো ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন কোলেস্টেরল)। এ ছাড়া হাওয়ার্ডের রক্তে গ্লুকোজ কমার পাশাপাশি ক্ষতিকর চর্বি ‘ট্রাইগ্লিসারাইড’ও কমেছে। যদিও এটা চিনি ও ফ্যাটে ভর্তি আইসক্রিম!
বিপজ্জনক এই আইসক্রিম ‘প্রজেক্ট’ নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় ছিলেন হাওয়ার্ডের স্ত্রী। হাওয়ার্ডের ভাষায়, এটা যত দ্রুত সম্ভব শেষ করার ব্যাপারে সবচেয়ে তাগাদা দিয়েছে আমার স্ত্রী। তাঁর নিজেরও দুশ্চিন্তা ছিল নিজেকে নিয়ে। কেননা, হাওয়ার্ড যে ৩২ পাউন্ড ওজন কমিয়েছেন, এর মধ্যে বেশির ভাগই ঝরেছে তাঁর পেশি থেকে। ওজন কমানো ও স্থূলতা বিশেষজ্ঞ স্পেনসার নাদোলস্কাই এ প্রজেক্ট চলাকালীন মাঝেমধ্যে দেখাশোনা করেছেন হাওয়ার্ডের। নাদোলস্কাইয়ের মতে, হাওয়ার্ডের শরীর-স্বাস্থ্য রীতিমতো ভালো রয়েছে।
কিন্তু হাওয়ার্ড এখানেই থামতে চান না। ডায়েটিং নিয়ে করতে চান আরও নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা। তাঁর ভাষায়, ‘যত কষ্টই হোক না কেন, এটা আমার শেষ ডায়েটিং—তা আমি অবশ্যই চাই না। হয়তো আবার একদিন খাবার নিয়ে মাথায় কিছু একটা খেলে যাবে আর আমিও কাজে নেমে পড়ব।’ সূত্র: মেনস হেলথ