Thank you for trying Sticky AMP!!

শোলা বদলে দিয়েছে শান্তাকে

শান্তা সাহা, ছবি: লেখক

বিয়েবাড়িতে নানা রকমের আয়োজন থাকে। গায়েহলুদ, বিয়ের আলপনা, বিয়ের মুকুট ও মঞ্চ সাজানো—কিছু দরকার হলেই ডাক পড়ে শান্তা সাহার। সামনে তো পয়লা বৈশাখ, তাই শোলার তৈরি জিনিসের চাহিদা বেশি। দিন-রাত আলপনা, মনোরম নকশা করে চলেছেন তিনি।
নরসিংদী সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তিনি। পড়াশোনার পাশাপাশি করেন শোলার কাজ। বিভিন্ন কার্ডের নকশাও করেন। এ দিয়ে নিজের পড়াশোনা ও পরিবারের খরচ মেটান।
শান্তা বলেন, ‘যখন একটু বুঝতে শিখেছি, তখন থেকেই দেখছি মা-বাবা, ভাই, কাকা–কাকি—সবাই শোলা দিয়ে নানা কাজ করেন। তাঁদের দেখে আমিও শিখে গেছি। এখন শোলার কাজ করে আমাদের লেখাপড়া থেকে শুরু করে চলে পুরো পরিবার।’
সারা বছর টুকটাক শোলার কাজ থাকলেও মৌসুম হচ্ছে অগ্রহায়ণ থেকে বৈশাখ। তখন দম ফেলার সুযোগ পান না পরিবারের কেউ। সকাল নয়টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত শুধুই কাজ।
শান্তা জানান, শোলার কাজের জন্য তাঁদের আলাদা কোনো জায়গা নেই। সবাই মিলে বাড়িতে কাজ করেন। আর তা বেশির ভাগ বিক্রি হয় শহরের মধ্য কান্দাপাড়া এলাকায় গৌপীনাথ আখড়া সড়কে কাকা নকুল সাহার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গৌরাঙ্গ শঙ্খ ভান্ডারে। সেখান থেকে তা কুমিল্লা, নোয়াখালী, সিলেটসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করা হয়। নিয়মিত এ প্রতিষ্ঠান থেকে সারা বছর দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রায় ২৫-৩০ জায়গায় শোলার সামগ্রী সরবরাহ করা হয়।
নকুল সাহা বলেন, গত আশির দশক থেকে আমাদের পরিবারের একমাত্র পেশা হচ্ছে শোলার সামগ্রী তৈরি করা। এ থেকে যা আয় হয়, তা দিয়ে আমরা অনেক ভালো আছি। মৌসুমে ন্যূনতম ১০ লাখ টাকা আয় করা যায়। শান্তার সঙ্গে কাজ করেন তাঁর মা আরতি সাহা, ভাই তনিক সাহাও। শান্তার বাবা শ্রীধর সাহা বলেন, ‘শোলাই আমাদের জীবন বদলে দিয়েছে। পরিবারের সবার পেশা এখন এটাই। আমরা কেউ কাউকে আলাদা করে দেখি না।’