Thank you for trying Sticky AMP!!

সচেতনতায় হ্যাপি ডিইউ

এই তরুণেরাই গড়েছেন হ্যাপি ডিইউ। ছবি: সংগৃহীত

গত কয়েক বছরে পত্রিকার পাতায় প্রায়ই চোখে পড়েছে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার খবর। তাঁদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম নয়। গত তিন বছরে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই ১১ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। গত বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের ছাত্র তরুণ হোসেন আত্মহত্যা করলেন, বিষয়টা ভাবিয়ে তুলেছিল একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র মুসাব্বির হোসেনকে।

সহপাঠীর আত্মহত্যার খবরে ক্যাম্পাসে যখন সবার মন ভার, তখন ভেবেচিন্তে মুসাব্বির হোসেন ফেসবুকে খুলে বসলেন ‘হ্যাপি ডিইউ’ নামে একটি গ্রুপ। যাঁরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত কিংবা যাদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা তৈরি হয়, তাঁদের পাশে দাঁড়ানোই এই দলের লক্ষ্য। পরবর্তী সময়ে মুসাব্বির হোসেনের সঙ্গে যুক্ত হন সফটওয়্যার প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান ও মো. আতিকুর রহমান, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের তাহমিনা আখতার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের কাইফা ইব্রাহিম, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শায়লা ইসলাম এবং মনোবিজ্ঞান বিভাগের সাদিয়া আফরোজ শামস। নানা বিভাগের শিক্ষার্থীরা এক হয়েছেন একটি উদ্দেশ্য নিয়ে। বোঝা যায়, বিষয়টির গুরুত্ব তাঁরা সবাই বুঝতে পেরেছিলেন।

এই গ্রুপের মাধ্যমে চাইলেই কেউ গুগল ফরমে নিজের নাম-পরিচয় গোপন রেখে মনের কথা জানাতে পারেন, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘মনের চিঠি’। এই বেনামি চিঠিগুলো হ্যাপি ডিইউ গ্রুপে তুলে দেওয়া হয়। চাইলে কেউ নিজের পরিচয় প্রকাশ করেও চিঠি লিখতে পারেন। এতে একজন হতাশাগ্রস্ত মানুষ তাঁর মনের কথা অন্যের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে পারেন। আবার গ্রুপের অন্য সদস্যরা তাঁকে যথাসম্ভব সহায়তা করতে চেষ্টা করেন। ইতিবাচক ভাবনার একটা চর্চা গড়ে ওঠে এই আলাপনের মধ্য দিয়ে। কখনো কখনো মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের নাম-ঠিকানা-যোগাযোগের নম্বর দিয়েও সাহায্য করেন গ্রুপের সদস্যরা।

হ্যাপি ডিইউর পক্ষ থেকে আর্থিকভাবে অসচ্ছল ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি দেওয়া শুরু হয়েছিল। তবে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে সেটা চালু রাখা সম্ভব হয়নি। এখন পর্যন্ত মনের চিঠির মাধ্যমে নিজের মনের কথা ভাগাভাগি করেছেন শতাধিক ব্যক্তি। তবে এই দলের সঙ্গে মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের যুক্ত করা গেলে গ্রুপের কার্যক্রম আরও বেগ পেত বলে মনে করেন দলের সদস্যরা।

বর্তমানে এটির পরিসর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ইতিমধ্যে আত্মহত্যা প্রতিরোধে হ্যাপি ডিইউর সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ রকম কিছু করার উদ্যোগ নিয়েছেন। আরও স্বেচ্ছাসেবক পেলে এবং কাজের পরিধি আরও বড় করা গেলে এই উদ্যোগকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডির বাইরে নিয়ে যেতে চান শিক্ষার্থীরা।