Thank you for trying Sticky AMP!!

সাপ উদ্ধারের গল্প

সাপ ও গুইসাপ উদ্ধারের পর ছেড়ে দেওয়া হলো। ছবি: লেখক

ফোন এসেছিল ২২ জুন দুপুরে। পাবনা সদরের গয়েশপুর ইউনিয়নের পার-নলমুড়া গ্রামে দুটি সাপ আটকা পড়েছে। আমাদের প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণীবিষয়ক সংগঠন নেচার অ্যান্ড ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন কমিউনিটির (এনডাব্লিউসিসি) সদস্য আশিকুর রহমান খবরটা দিলেন। সংগঠনের সভাপতি এহসান আলী বিশ্বাসকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর গাড়িতেই রওনা হলাম সেখানে। উদ্যেশ্য, প্রাণী দুটির জীবন রক্ষা করা।

জায়গামতো পৌঁছে দেখি মাছ ধরার বাঁশের ফাঁদ বড় দোহারে আটকা পড়েছে দুটি সাপ। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ইছামতি নদে পাতা মাছ ধরার এই ফাঁদে আটকা পড়েছে সাপ দুটি। ভিড় করে সাপ দুটি নিয়ে আলোচনায় ব্যস্ত গ্রামবাসী। জানতে পারলাম, এলাকাবাসী সাপ দুটি মারতে এলে স্থানীয় তরুণ মইনুল হাসান তাঁদের বাধা দেন। তারপরই ফোন দেন আমাদের।

দুটি ফাঁদের একটিতে মাঝারি ধরনের সোনা গুইসাপ ও অন্যটিতে প্রায় সাত–আট ফুট দৈর্ঘ্যের একটি দাঁড়াশ সাপ। দুটিই মূলত নিরীহ প্রজাতির নির্বিষ ও উপকারি সাপ। দাঁড়াশ সাপ প্রচুর পরিমাণে ইঁদুর খেয়ে ফসল রক্ষা করে। এ জন্য একে কৃষকের বন্ধুও বলা হয়। কিন্তু মানুষ তবুও মেরে ফেলার জন্য উদ্​গ্রীব।

গুইসাপটি নদের পাশেই অবমুক্ত করা হলো। কিন্তু দাঁড়াশ সাপটি সেখানে ছাড়া নিয়ে আপত্তি তোলেন এলাকাবাসী। অবশেষে খাঁচাসহ গাড়ির ছাদে তুলে লোকালয় থেকে দূরে ফাঁকা মাঠে সাপটিকে ছাড়ার জন্য রওনা হলাম। মানুষের বসতি থেকে বহু দূরে বিস্তৃর্ণ এক কৃষিজমি দেখে থামানো হলো গাড়ি। বাঁশের খাঁচাটি নামিয়ে মাঠে গিয়ে দাঁড়াশ সাপটিকে অবমুক্ত করা হলো। সাপটি মুক্তির আনন্দে মাঠ–পানি পেরিয়ে একটি পাটের জমিতে চলে গেলো। এখানেই কৃষকের বন্ধু হয়ে জমির ইঁদুর খেয়ে হয়তো নিশ্চিন্তে বসবাস করতে পারবে সাপটি।