Thank you for trying Sticky AMP!!

স্কটল্যান্ডের গণভোট: যুক্তরাজ্যপ্রবাসী বাঙালিদের ভাবনা

.

স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার প্রশ্নে আগামী বৃহস্পতিবারের (১৮ সেপ্টেম্বর) গণভোট নিয়ে যুক্তরাজ্যে যে উত্তেজনা সষ্টি হয়েছে, তা প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে। ওয়েস্টমিনিস্টার ছাড়িয়ে বাংলাদেশিদের রেস্তোরাঁ, টেকওয়ে, গ্রোসারি আর বৈঠকখানা বেশ সরগরম। লন্ডন, বার্মিংহাম, মানচেস্টার, গ্লাসগো, উত্তর আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ ব্যাপারে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া গেছে। ওয়েস্টমিনিস্টার আর হলিরুড স্কটিশ সরকারের মতো বাংলাদেশিরাও দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।

স্কটল্যান্ডে থাকেন বাংলাদেশি কমিউনিটির জনপ্রিয় নেতা, বারান্দা রেস্টুরেন্টের স্বত্ত্বাধিকারী ও রেস ইকুইটি কাউন্সিলের চেয়ার ফয়সল চৌধুরী এমবিই। তিনি মনে করেন, স্কটল্যান্ড ইংলিশ হেরিটেজ এবং তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ এক জনপদ। বিশাল উঁচু ও আঁকাবাঁকা পাহাড় জনপদ একে করে তুলেছে পুরো ইউরোপের মধ্যে অপরূপ এক সুন্দরী কন্যা হিসেবে। অ্যালেক্স সামন্ডের এসএনপির না ভোটের প্রচারাভিযানে অভিবাসী কমিউনিটি যেভাবে আগ্রহ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন, সেখানে কিছুটা বোঝার মধ্যে ফাঁক রয়ে গেছে। স্কটল্যান্ড স্বাধীন হলে তাঁদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি হবে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, যাঁরা অবৈধভাবে আছেন তাঁরা রাতারাতি বৈধ হওয়ার সুযোগ লাভ করবেন। এ ধরনের সম্ভাবনা একেবারেইˆনেই বললেই চলে। তবে নতুন দক্ষ অভিবাসী ও ছাত্রছাত্রীদের জন্য সুযোগ তৈরি হবে। আবার ইউরোপের মধ্যে স্কটল্যান্ডে ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। শত বাধা বিপত্তির মধ্যেও দেশটি সমৃদ্ধ এক দেশে পরিণত হবে। এদিক থেকে একজন ব্যবসাবান্ধব ব্যক্তি হিসেবে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতাকে তেমন কোনো বিপদ বলে মনে করি না।

স্কটল্যান্ডের সাবেক কনসাল জেনারেল, বিশিষ্ট ক্যাটারার ও সমাজসেবী ড. ওয়ালী তছর উদ্দিন এমবিই বলেন, বাংলাদেশি ও অভিবাসী কমিউনিটির মধ্যে একটা ধারণা ব্যাপক ছড়িয়ে পড়েছে, স্কটল্যান্ড স্বাধীনতার পক্ষে ভোট দিলে বৈধ হওয়ার সুযোগ লাভ করা যাবে। স্কটল্যান্ড স্বাধীন হলেও বাস্তবে তা ঘটবে কি না সন্দেহ আছে। তবে ব্যবসা, বাণিজ্য, বিনিয়োগসহ নতুন নতুন কর্মসংস্থানের জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে। এতে আমাদের ক্ষতির কোনো কারণ নেই।
লন্ডনের কেন্দ্রে থাকেন সাংবাদিক নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমাদের ভাবতে হবে ভালো ভাবে। যেমন রানী বলেছেন, ভেবে চিন্তে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে। আমি তাঁর সঙ্গে একমত। স্কটল্যান্ড স্বাধীন হয়ে গেলে ব্রিটেন ভেঙ্গে যেমন ছোট হয়ে যাবে অন্যদিকে স্কটল্যান্ডও বিশ্ব মানচিত্রে ছোট দেশ হিসেবে পরিচিতি পাবে। আজকের প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে ছোট ও একলা হয়ে তেমন কোনো ভূমিকা রাখার সুযোগ খুবই সীমিত। আমি বরং একীভূত ব্রিটেনের ইউনিয়নের মধ্যে থাকার পক্ষে। আর জনমত জরিপে এখন পর্যন্ত না ভোট ৮ পয়েন্টে এগিয়ে। আমার ধারণা, স্কটিশরা শেষ মুহূর্তে ইউনিয়নের পক্ষেই রায় দিবেন। যুক্তরাজ্যে বেশিরভাগই রানীকেই তাদের ঐক্যের প্রতীক মনে করেন এবং মনেপ্রাণে শ্রদ্ধা করেন।
ম্যানচেস্টার ও বার্মিংহামে বসবাসরত বেশিরভাগ বাঙালিদের অভিমতও প্রায় একই। তবে স্বল্প সংখ্যক বিপরীতেও আছেন। আয়ারল্যান্ডের বিশিষ্ট বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ সমিতির নেতা আবদুর রব বলেন, ব্রিটিশ ইউনিয়ন ভেঙ্গে গেলে অন্যান্য দ্বীপ ও আইল্যান্ডসমূহের একই দাবিতে সোচ্চার হওয়ার পথ খুলে যাবে আগামী দশকের আগেই।

< salim932@googlemail.com >