Thank you for trying Sticky AMP!!

৮ মিনিটেই সুস্থ সারা দিন!

মডেল হয়েছেন িফটনেস িবশেষজ্ঞ দয়িতা। ছবি: খালেদ সরকার

সুস্থতার জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা প্রয়োজন। কিন্তু ব্যস্ত নগরজীবনে ব্যায়ামের জন্য আলাদা সময় কোথায়! দিনের শুরুতে মাত্র ৮ মিনিটের স্ট্রেচিং আপনাকে দিতে পারে প্রাণবন্ত দিন। আনতে পারে নতুন উদ্যম। তাই নিয়মিত করতে পারেন কিছু সহজ শারীরিক কসরত। স্বল্প সময় ব্যয়ে ফিট থাকার চমৎকার কয়েকটি কৌশল জানাচ্ছি আপনাদের।

ছবি: খালেদ সরকার

দেয়ালে ডাউন ডগ ভঙ্গিতে অবস্থান
দেয়ালের দিকে মুখ করে তিন ফুট দূরত্বে দাঁড়ান। দুই পা কিছুটা প্রসারিত থাকবে। ধীরে ধীরে কোমর সামনের দিকে বাঁকা করুন। হাতের তালু ও কপাল দেয়ালে ঠেকানোর চেষ্টা করুন। পা সোজা রেখে কনুই এবং আপনার ঘাড় ও মাথার অংশ নিচের দিকে নামাতে থাকুন। মেঝের সমান্তরাল হলে থেমে যান। ১ মিনিট এভাবে থাকুন। তারপর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরুন।
এই ভঙ্গি বাহুর পেশি শক্তিশালী করবে। হাঁটুর গুরুত্বপূর্ণ কিছু রক্তনালিকে উন্মুক্ত হতে সাহায্য করবে। ফলে আপনি প্রতি পদক্ষেপে বাড়তি জোর অনুভব করবেন। একই সঙ্গে এটি আপনার কর্মচাঞ্চল্য বাড়াবে। আপনাকে করবে আরও আত্মবিশ্বাসী।

ছবি: খালেদ সরকার

উল্টো শিশুর ভঙ্গি
হাঁটু ও পায়ের পাতার ওপর বসুন। হাঁটু কিছুটা ছড়ানো থাকবে। পায়ের গোড়ালিতে ভর করে আস্তে আস্তে কোমড়ের ওপর ভর করে সামনের দিকে শুয়ে পড়ুন। মাথা বাম দিকে কাত করে দিন। এবার আপনার কাঁধ ও মাথা মেঝেতে রাখুন। বাম হাত সামনের দিকে ছড়িয়ে দিন। হাতের তালু ছাদের দিকে মুখ করা থাকবে। আপনার ডান হাতের তালু থাকবে মাটিতে। এভাবে ৩০ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন। তারপর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরুন। বিপরীত পাশে একইভাবে ৩০ সেকেন্ডের কসরত করুন।
এই পজিশন শরীরের গ্রন্থি ও হাড়ের সংযোগস্থলের গতিশীলতা বাড়ায়। পাঁজরের পেশিগুলোকে উন্মুক্ত করে। রক্তসঞ্চালন ও ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।

পার্শ্ব শয়ন ভঙ্গি
বাম কাত হয়ে শুয়ে পড়ুন। বাম হাত দিয়ে মাথা উঁচু করে রাখুন। বাম পা সোজা রেখে ডান হাঁটু বাঁকা করুন। তারপর ডান পায়ের গোড়ালি টেনে নিতম্বের দিকে নিতে চেষ্টা করুন। চাপ বাড়াতে থাকুন। ডান পা যতটা সম্ভব প্রসারিত করুন। এভাবে ৩০ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন। তারপর স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে যান। অন্য পাশেও ৩০ সেকেন্ডের কসরত করুন।
শরীরের নিচের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পেশি ও কাঁধের জন্য খুব কাজের। যাঁদের হাঁটুতে নিয়মিত ব্যথা হয়, তাঁদের জন্য এটি চমৎকার টোটকা।

ছবি: খালেদ সরকার

পার্শ্ব কাঁধের শরীরচর্চা
মেরুদণ্ড সোজা রেখে মেঝেতে বসুন। দুই পা পরস্পর আড়াআড়ি বা ক্রস ভঙ্গিতে রাখুন। ডান হাত পাশে ছড়িয়ে দিন। হাতের তালু খুলে রাখুন। যাতে মনে হয় কোনো অদৃশ্য দেয়ালকে ধাক্কা দিচ্ছেন। মাথা বাম পাশ থেকে নিচের দিকে নামাতে থাকুন। যখন একটু টানটান অনুভব করবেন, তখন থেমে যান। বাম হাত মাথার ওপর রেখে বাম দিকে আস্তে আস্তে নামানোর চেষ্টা করুন। এভাবে ৩০ সেকেন্ড অপেক্ষা করতে হবে। তারপর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যান। বিপরীত পাশে পুনরায় ৩০ সেকেন্ডের কসরত করুন।
ভঙ্গিটি আপনার ঘাড় ও কাঁধের জন্য খুব উপকারী। এটি আপনার বাহুকে মজবুত করবে। কবজির চারপাশের পেশিকে সহজ করতে সাহায্য করে।

ছবি: খালেদ সরকার

উট-সংযোগ ভঙ্গি
হাঁটুর ওপর ভর করে পা ছড়িয়ে বসুন। নিতম্ব সোজা ওপরের দিকে উঠাতে চেষ্টা করুন। বুক ছাদমুখী রেখে মাথা পেছন দিকে নামিয়ে দিন। হাত দুই পায়ের গোড়ালির ওপর রাখুন। এভাবে ১ মিনিট থাকুন। তারপর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরুন।
ক্যামেল ব্রিজ ভঙ্গিটি নিতম্বের পেশিগুলোকে প্রসারিত করবে। ব্যাকপেইন, নিতম্ব ও হাঁটুর ব্যথা থেকে সুরক্ষা দেবে আপনাকে।

ইগল ডানা ও গোমুখ ভঙ্গি
দুই পা একত্রে সামনে ছড়িয়ে বসুন। এবার পা দুটো আড়াআড়িভাবে রাখুন। ডান পা বাম পায়ের ওপরে থাকবে। হাত ওপরে উঠিয়ে কনুই আড়াআড়ি করে ধরুন। যাতে দুই হাতের তালু মুখোমুখি অবস্থায় থাকে। এভাবে ৩০ সেকেন্ড থাকুন। বিপরীত দিকে একই পদ্ধতিতে ৩০ সেকেন্ড কসরত করুন।
ভঙ্গিটি শরীরের উপরাংশের পেছন দিকে পেশি ও তন্ত্রিকে চঞ্চল করবে। ঠিক করবে আপনার অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বিন্যাস। মেরুদণ্ড দীর্ঘায়িত করতে এই ভঙ্গি চর্চার পরামর্শ দেওয়া হয়। মনোযোগ বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখতে পারে ইগল আর্মস পজিশন।

ছবি: খালেদ সরকার

অর্ধচন্দ্রিকা অবস্থান
মেঝেতে পা ছড়িয়ে দাঁড়ান। মেরুদণ্ড ও পা সোজা রেখে ধীরে ধীরে সামনের দিকে বাঁকা হোন। ডান হাত দিয়ে ডান পা ধরে থাকুন। হাঁটু বাঁকা করে ডান হাত সামনে রাখুন। ডান পায়ের সামনে যেন অন্তত দুই ফুট জায়গা থাকে। ডান পা ও ডান বাহুর ওপর ব্যালেন্স করে ডান পা পুরোপুরি সোজা করুন। একই সঙ্গে আপনার বাম পা মেঝে বরাবর ওঠাতে হবে। তারপর বাম পা প্রসারিত করুন। বাম নিতম্ব সোজা ঘুরিয়ে নিতে হবে। বাম বাহু ছাদের দিকে থাকবে। এবার আপনার মুখ ঘুরিয়ে বাম হাত দেখার চেষ্টা করুন। এভাবে ৩০ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন। বিপরীত দিকে একইভাবে ৩০ সেকেন্ড ব্যায়াম করুন।
ভঙ্গিটি নিম্নাংশের পেশি, পা ও মেরুদণ্ডকে শক্তিশালী করে। মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও বিরক্তি দূর করে। ব্যাকপেইন থেকে মুক্তি পেতে এই ভঙ্গি বেশ কাজের।

বিশেষজ্ঞের পরামর্শমতো লিখেছেন নীরব মাহমুদ