Thank you for trying Sticky AMP!!

হঠাৎ জীবনে এমন ট্র্যাজেডি আসবে, ভাবতেও পারিনি

আজ মা দিবসে মাকে নিয়ে লিখেছেন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসেফিকের তড়িৎ ও বৈদ্যুতিন প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী মাহদিন আল মারুফ

মায়ের সঙ্গে লেখক

বন্ধুরা যখন জীবন গোছাতে ব্যস্ত; কে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে, কোন বিষয় বেছে নেবে এসব নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে, আমার তখন সময় কেটেছে বাবা হারানোর বেদনায়।

আমার জন্ম পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার তুষাখালী গ্রামে। গ্রামীণ মধ্যবিত্ত পরিবারেই বেড়ে ওঠা। এমন একটা পরিবারে স্বাভাবিকভাবেই বাবারাই থাকেন সবকিছুর কেন্দ্রে। আর্থিক বিষয় কিংবা ব্যক্তিগত কোনো সমস্যা বলার আগেই যেন সমাধান হয়ে যেত। কিন্তু হঠাৎ জীবনে এমন ট্র্যাজেডি আসবে, ভাবতেও পারিনি। বাবা মারা যান আমার এইচএসসি পরীক্ষার পরপরই। ফলে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার দেওয়ার কথা, সে সময়টাতে আমি স্বাভাবিক অবস্থায় ছিলাম না।

তখন যেন দ্বৈত ভূমিকায় আবির্ভূত হয়েছিল মা। মা-বাবা দুই ভূমিকাই তাকে পালন করতে হচ্ছিল। নতুন করে আমাকে সাহসী করে তোলে মা। বোঝানোর চেষ্টা করে, বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পারলে তার আত্মা বরং শান্তি পাবে। পরিবারের বড় ছেলে হিসেবে বারবার যে শুধু আমার দায়িত্ব মনে করিয়ে দিচ্ছিল তা নয়, আমাকে পথও দেখাচ্ছিল মা।

Also Read: মা, আজ মা দিবস

বাবা মারা যাওয়ার পর পরিবারের আয় বলতে ছিল শুধু বাসা ভাড়া। এই আয়েই বাসার খরচ, আমার ছোট বোন আর আমার লেখাপড়ার খরচ চালানো খুব কঠিন। কিন্তু মায়ের দেওয়া সাহসেই আজ আমি পড়াশোনা করছি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া যে একরকম দুরূহ বিষয়, মা কখনো সেটা বুঝতে দেয়নি। একদিন হয়তো আমিও বড় কিছু অর্জন করব। কিন্তু বাবা তা দেখতে পারবেন না। তবু তাঁর সন্তান হিসেবে আমার অর্জন হয়তো এই সমাজে আমার বাবার নামই উজ্জ্বল করবে। তখন হয়তো মা-ই আমাকে নিয়ে সবচেয়ে গর্বিত হবে। মায়ের মুখে গর্বের হাসি দেখতে পেলে পিতৃহারা সন্তানের আর কীই-বা চাওয়ার থাকে। আমিও সেদিনের অপেক্ষায়, যেদিন আমার মা আমাকে নিয়ে গর্ব করবে। নিজের জন্য কিছু করতে না পারি, তোমার জন্য হলেও আমি সফল হবই, মা। তুমি সব সময় ভালো থেকো।