Thank you for trying Sticky AMP!!

ক্যাম্পাসে সেদিন দলে দলে মাছ ধরতে নেমেছিলেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

পানিতে থই থই করছে ক্যাম্পাস। প্রশাসনিক ভবনের সামনের লেক পুরো ডুবে গেছে

রাতে যে এত বৃষ্টি হয়েছে, বুঝতে পারেননি ছাত্ররা। সকালে হল গেটে এসে তাই অবাক বনে যান তাঁরা। পানিতে থই থই করছে ক্যাম্পাস। প্রশাসনিক ভবনের সামনের লেক পুরো ডুবে গেছে। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, চারুদ্বীপ, বঙ্গবন্ধু হলের চারপাশ, অনুষদ ভবনগুলোর নিচে কোথাও হাঁটু, কোথাও কোমরপানি। এত পানি ক্যাম্পাস আগে কখনো দেখেননি তাঁরা।

শৈশবে ত্রিশালে যে বটগাছের নিচে বাঁশি বাজাতেন, গান করতেন নজরুল, তার পাশেই গড়ে উঠেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। স্থানস্বল্পতার কারণে পরে পার্শ্ববর্তী শুকনি বিল ভরাট করে নির্মিত হয় বেশ কিছু বহুতল ভবন। একসময় এখানে যে একটি বিল ছিল, বর্তমানে এটি বুঝে ওঠাই কষ্টসাধ্য। তবে ৫ অক্টোবরের রেকর্ড বৃষ্টি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে আবার ছোটখাটো বিলে পরিণত করে।

স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় জাল, পলোর ব্যবস্থাও করে ফেলেন কেউ কেউ

আর ক্ষণস্থায়ী সেই বিলে মাছের মেলা বসে যায়। ক্যাম্পাসের আশপাশের পুকুর, ফিশারি, জলাশয় উপচে মাছগুলো ক্যাম্পাসে চলে আসে। হাতের কাছে এত মাছ, না ধরে কি থাকা যায়! কিন্তু কী দিয়ে ধরবেন এই মাছ? মাছ ধরার সরঞ্জাম তো কেউ হলে রাখেন না। অগত্যা মশারি, লুঙ্গি দিয়েই শুরু হয় মাছ ধরা। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় জাল, পলোর ব্যবস্থাও করে ফেলেন কেউ কেউ। শিক্ষার্থীদের মাছ ধরার এই আয়োজন হয়ে ওঠে ছোটখাটো এক ‘বাউত উৎসব’। তাঁদের ধরা মাছের মধ্যে ছিল শিং, চিংড়ি, কালবাউশ, পুঁটি, সরপুঁটি, কাতলা, কার্প আর পোনাজাতীয় বেশ কয়েক ধরনের মাছ। 

দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ক্যাম্পাসে জমা বৃষ্টির পানিতে হাঁটব বলে নিচে গিয়ে দেখি, ছোট পোনা মাছ এবং শিং মাছ ছোটাছুটি করছে। আমার সামনেই একজন টাকনুসমান পানি থেকে প্রায় দুই কেজি ওজনের একটি কাতলা ধরল। অনেকেই তখনই রুমের মশারি নিয়ে মাছ ধরতে নেমে পড়েছে। বন্ধুদের অনুরোধে আমিও নেমে পড়লাম। বিভিন্ন আকার ও জাতের প্রায় চার কেজি মাছ ধরেছিলাম আমরা। ছোট পোনাই বেশি। সরপুঁটি, সিলভার কার্প, তেলাপিয়া, চাষের শিং মাছই ছিল বেশি।’

ক্যাম্পাসে ধরা পড়া মাছ

মেয়েরাও পিছিয়ে ছিলেন না, মাছ ধরতে পানিতে নেমেছিলেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ও দোলনচাঁপা হলের মেয়েরা।

লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিভাগের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান নিজে না ধরলেও মাছের ভাগ পেয়েছেন। জানালেন, ‘আমার বন্ধু আমাকে মাছ দিয়েছিল। মাছ কাটার পর রান্নার উদ্যোগ নিই। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যুতের লাইন আন্ডারগ্রাউন্ড দিয়ে নেওয়া। জলাবদ্ধতার কারণে বিদ্যুতের সমস্যা তৈরি হয়। ফলে রুমে রান্না করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর হলের ডাইনিংয়ে রান্না করে খাই।’