Thank you for trying Sticky AMP!!

৫০০ টাকায় শুরু হওয়া ‘লীলাবতী’ এখন বেশ বড়

করোনার ঘরবন্দী সময়ে  ‘একটা কিছু করা’র তাগিদ থেকে ব্যবসা শুরু করেছিলেন অনেকে। কেউবা নিতে চেয়েছেন নতুন এক চ্যালেঞ্জ। করোনাকাল যাঁদের উদ্যোক্তা বানিয়েছে, তাঁদের মধ্য থেকেই কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছিলাম আমরা। এখনো শক্ত হাতে ব্যবসার হাল ধরে আছেন তাঁরা। এখানে পড়ুন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী শারমিন সুলতানার কথা

নিজের নকশা করা পোশাকে শারমিন সুলতানা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে পড়েন শারমিন সুলতানা। তবে উদ্যোক্তা হিসেবেই তিনি পরিচিত বেশি। শাড়ি, পাঞ্জাবি, পাটের ব্যাগ ইত্যাদি দেশীয় পণ্যের ওপর নিজ হাতে নকশা (হ্যান্ডপেইন্ট) করেন। নিজের ফেসবুক পেজ লীলাবতীর মাধ্যমে অনলাইনে সেগুলো বিক্রি করেন।

Also Read: ইউটিউব দেখে রঙিন মাছ চাষ শিখেছিলেন, এখন মাসে আয় ৫০ হাজার

শুরুটা হয়েছিল মাত্র ৫০০ টাকায়। করোনায় সবাই যখন ঘরবন্দী, শখের বশেই পোশাকের ওপর নকশা করতে শুরু করেন শারমিন। বাবা বিডিআরে চাকরি করতেন। সেই সুবাদে নানা জেলায় কেটেছে শারমিনের ছেলেবেলা। বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের হাতের কাজ কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে। তা ছাড়া বাসায় মা-ও নকশিকাঁথা সেলাই করতেন। এসব থেকে উৎসাহ নিয়েই তাঁর শুরু।

শারমিন বলেন, ‘দেশীয় কৃষ্টি ও সংস্কৃতির প্রতি আমার আগে থেকেই আগ্রহ ছিল। মা-খালাদের অনেক ধরনের হাতের কাজ করতে দেখতাম। মেলায় গেলেও দেখেছি। বড় হওয়ার পর বুঝলাম, এগুলো আমরা নিজেরাই বানাতে পারি। খুব বড় পর্যায়ে না গেলে অনেক সময় অতিরিক্ত কারিগরও লাগে না।’ রং-তুলির মাধ্যমে শারমিন ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন দেশীয় ঐতিহ্য। শাড়ি, পাঞ্জাবি, পাটের ব্যাগ, বিছানার চাদর, বাচ্চাদের পোশাক ইত্যাদির ওপর তিনি আঁকেন ফুল, লতা-পাতা, পাখি।

কাপড় কেনা থেকে শুরু করে সেলাই, নকশা, সব একা হাতেই করেন শারমিন। পেজটি একটু বড় হওয়ায় সাহায্য করার জন্য এখন দু-একজন বন্ধুকে নিয়েছেন। তবে বেশির ভাগ কাজ তাঁর একারই করতে হয়। শুরুতে বেশ অসুবিধায়ই পড়তে হতো। প্রথমত কাপড় চিনতেন না। কাপড় কোথা থেকে আনতে হবে, ক্রেতার কাছে কীভাবে কুরিয়ার করতে হবে, কিছুই জানা ছিল না। শারমিন বলেন, ‘কাপড় আনতে গিয়ে অনেকবার প্রতারণার শিকার হয়েছি। দেখা গেছে, আমি একধরনের কাপড় এনে সেটি ডিজাইন করে বিক্রি করতে চাচ্ছি। কিন্তু তাঁরা কাপড়টা খারাপ দিয়ে ফেলায় সেটা আর বিক্রি করতে পারিনি। তখন আবার অন্য জায়গা থেকে কাপড় আনতে হয়েছে। যে কারণে অনেকবার ক্ষতির মুখে পড়েছি।’

পাঞ্জাবিতে নকশা করছেন শারমিন

অনেক সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য অর্ডার আসে। কিন্তু শারমিন যেহেতু পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করেন, তাই সময়ের অভাবে বড় ফরমাশগুলো নিতে পারছেন না। তাঁর ক্রেতাদের একটা বড় অংশই শিক্ষার্থী। তাই পোশাকের দাম ৫০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে রাখার চেষ্টা করেন। তবে পাঁচ-ছয় হাজার টাকার পোশাকও শারমিনের কাছে আছে। স্নাতক করার পরও লীলাবতী নিয়েই কাজ চালিয়ে যেতে চান তিনি।