Thank you for trying Sticky AMP!!

গেম খেলতে খেলতেই ঘুরে দেখা যাবে আইইউটির পুরো ক্যাম্পাস

বাঁ থেকে সামনুন, রামিসা ও ফারহান

৩০ একরের চোখজুড়ানো ক্যাম্পাস। পুরোটা ঘুরেফিরে দেখতেও বেশ খানিকটা সময় লেগে যায়। কিন্তু ঘোরাঘুরিটা যদি কম্পিউটারের ভেতরই সেরে ফেলা যায়, তাহলে? আরেকটু সহজ করে বললে, গেম খেলতে খেলতে যদি পুরো ক্যাম্পাসটা চক্কর দেওয়া যায়, মন্দ কী! ব্যতিক্রম এই কাজই করেছেন ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) তিন শিক্ষার্থী কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের রামিসা জামান, সামনুন আজফার ও শামস ফারহান।

খুঁজতে হবে পরীক্ষার খাতা

কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের কম্পিউটার গ্রাফিকস অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া সিস্টেমস কোর্সের ল্যাব প্রকল্প হিসেবে গেমটি বানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। নাম দিয়েছেন ‘অ্যামিডস্ট রেড’। নাম প্রসঙ্গে সামনুন আজফার বলেন, ‘আইইউটির স্থাপনাগুলো লাল ইটের তৈরি। শিক্ষার্থীরা ভালোবেসে বলে “রেড হ্যাভেন”। আর আমাদের গেমটা মূলত ক্যাম্পাস ঘুরে ঘুরে হারানো পরীক্ষার খাতা খোঁজার খেলা। তাই অ্যামিডস্ট রেড নামটি দেওয়া। এটি মূলত আইইউটির মানচিত্রভিত্তিক একটি ত্রিমাত্রিক গেম, যেখানে একমাত্র চরিত্র অ্যাটাক অন টাইটান অ্যানিমের এরেন ইয়েগার। গেমার এই চরিত্রকে নিয়ন্ত্রণ করবেন।

Also Read: ‘টুয়েলভথ ফেল’ মনোজের সঙ্গে সাদিকুরের যেখানে মিল

এরেনকে দিয়েই হারিয়ে যাওয়া পরীক্ষার খাতা খুঁজে বের করতে হবে। ১৫টি ভিন্ন ভিন্ন স্থানে লুকানো আছে খাতাগুলো। সুতরাং ইচ্ছা থাকুক বা না-থাকুক, গেমটি খেলতে গেলে আপনাকে অবশ্যই পুরো ক্যাম্পাস ঘুরতে হবে।’

তিন মাসেই গেম

গত অক্টোবরে গেম তৈরির কাজে হাত দেন শিক্ষার্থীরা। কোনো ধরনের পূর্ব-অভিজ্ঞতা ছাড়াই শুরু করেছিলেন। তৈরি হতে সময় লেগেছে প্রায় তিন মাস। এ সময় শুধু যে খাটতে হয়েছে তা নয়, নতুন করে শিখতেও হয়েছে অনেক কিছু। রামিসা জামান বলেন, ‘বেশির ভাগ ত্রিমাত্রিক মডেল আমি তৈরি করেছি। যেমন একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, অ্যানিমেটেড উইন্ডমিল, ল্যাম্পপোস্ট, মসজিদ, টাওয়ার, প্লাজা, লেকের রেলিং ইত্যাদি। ত্রিমাত্রিক মডেল বানানোর সুবিধার্থে প্রথমে বিভিন্ন জায়গার ছবি তুলে নিয়েছিলাম। ব্লেন্ডার, আনরিয়েল ইঞ্জিন—এসব সফটওয়্যারে আগে কখনো কাজ করা হয়নি। সবকিছু ঠিকমতো করতে ভালোই সময় লেগেছে।’ সামনুন আজফার এই প্রকল্পে ওয়ার্ল্ড ডিজাইনের কাজ করেছেন। কাজের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে তিনি বলেন, ঠিকঠাক জায়গায় ভবন ও লেক বসানোর জন্য ব্লেন্ডারে পুরো আইইউটির ফ্লোর প্ল্যানের মডেল করতে হয়েছে।

Also Read: সিনেমার মতো জীবনেও দিন শেষে সব ঠিক হয়ে যায়: শাহরুখ

আইইউটির মডেলকে কীভাবে গেম আকারে উপস্থাপন করা যায়, সেই দায়িত্ব সামলেছেন দলের অন্যতম সদস্য শামস ফারহান। তাঁর কাছ থেকে জানা গেল, সবচেয়ে কঠিন ছিল আনরিয়েল ইঞ্জিনের খুঁটিনাটি শেখা।

গেমটি যাদের জন্য

ইতিমধ্যেই ক্যাম্পাসে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে অ্যামিডস্ট রেড। শিক্ষক, সহপাঠী, শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রশংসায় ভাসছেন গেমের নির্মাতারা। বিশেষ করে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের আবেগে ভাসিয়েছে গেমটি। অন্তত গেমের মাধ্যমে হলেও তাঁরা এখন ঘুরে দেখতে পারেন ক্যাম্পাসের আনাচকানাচ। কম্পিউটার গ্রাফিকস অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া সিস্টেমস কোর্সের শিক্ষক ইশরাক আবেদীন জানান, শিক্ষার্থীদের এই যৌথ প্রচেষ্টা তাঁকে মুগ্ধ করেছে।

তবে গেমটি মূলত কাদের জন্য তৈরি? উত্তর দিলেন সামনুন আজফার, ‘এককথায় এই গেম আমাদের লাল স্বর্গের ভার্চ্যুয়াল ভ্রমণ, যা আমাদের অ্যালামনাইদের জন্য স্মৃতিচারণার একটা ভালো উপায়। এখন যাঁরা পড়ছেন, তাঁরাও ক্যাম্পাসকে দেখবেন নতুন আঙ্গিকে। আবার আইইউটিতে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্যও গেমটি আকর্ষণীয় হতে পারে।’

এখনই অবশ্য প্লে স্টোরে পাওয়া যাবে না এই গেম। তিন তরুণ মনে করেন, গেমটি বড় কোনো প্ল্যাটফর্মে তুলে দিতে হলে আরও কাজ করতে হবে। সে জন্য সময় প্রয়োজন। সামনে নতুন সেমিস্টার, সেদিকেই মনোযোগ দিচ্ছেন তাঁরা।