Thank you for trying Sticky AMP!!

১৯৬৯ সালে আলাদা হয়ে যাওয়া দুই দেশের দুই বন্ধুর যেভাবে যোগাযোগ ঘটিয়ে দিলাম

সবে কাজে বেরিয়েছি, ঠিক তখনই মুঠোফোনে খুদে বার্তা। পাঠিয়েছেন ভারতের ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগ। গৌতম রায় নামের এক ভদ্রলোক বাংলাদেশে তাঁর এক বন্ধুকে খুঁজছেন। বন্ধুর নাম বলেছেন সাফিউদ্দীন আহমেদ। অনার্স শেষ করে কলকাতা ছেড়ে পাকাপাকি বাংলাদেশে চলে আসেন ভদ্রলোক। এখানে কোনো কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজির শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৪ সালে এই বন্ধুর সঙ্গে কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজে অনার্স করেছেন গৌতম রায়। এরপর ১৯৬৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স করেন। এখন বন্ধুর খোঁজ জানতে চান সাবেক এই ব্যাংকার।  

ভাবছিলাম, কী করে খুঁজব। গুগল করি। সাফিউদ্দীন আহমেদ নামে ঢাকায় ইংরেজিতে শিক্ষকতা করছেন, এমন কেউ আছেন কি না, খোঁজার চেষ্টা করি। 

Also Read: ৫৫ বছর পর মুঠোফোনের পর্দায় ভেসে উঠল আমার বন্ধু গৌতমের মুখ

কলকাতার দৈনিক ‘বর্তমান’–এ দুই বন্ধুর মিলনের গল্প

প্রথমেই পাওয়া গেল বাংলাদেশের প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী সফিউদ্দীন আহমেদকে। অনেক ঘাঁটাঘাঁটি করে একজন লেখককেও পাওয়া গেল। কিন্তু সেই লেখক বাংলায় পড়াশোনা করেছেন। আরও কয়েক দফা গুগলে সার্চ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের একটি লিংক পেলাম। সেটি দেখেই মনে হলো, ইংরেজি বিভাগ থেকেই শুরু করা যাক। প্রথম ফোনটা করি এই বিভাগের স্নাতক ভাগনি নাজিয়া ইসলামকে। তার কাছেই জানতে চাই সাফিউদ্দীন আহমেদ নামে ইংরেজি বিভাগে তাদের কোনো শিক্ষক আছেন কি না। সে জানায়, শফি আহমেদ নামে একজন শিক্ষক তাদের পড়িয়েছেন। তবে তিনি অবসরে গেছেন।

নাজিয়া তার শিক্ষকের ফেসবুক লিংক পাঠাল। প্রোফাইলে ঢুকেই দেখি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন শফি আহমেদ। অনেকখানিই নিশ্চিত হয়ে যাই, ইনি সেই ‘সাফিউদ্দীন আহমেদ’!

Also Read: যেভাবে মা–বাবার সঙ্গে সুভাষের যোগাযোগ ঘটিয়ে দিলেন বাংলাদেশের শামসুল হুদা

শফি আহমেদের একটি ছবি ডাউনলোড করে তাৎক্ষণিক গৌতম রায়কে পাঠিয়ে দিই। গৌতম রায় জানান, ছবির মানুষটিকে তিনি চিনতে পারছেন না। তখন আমাকে তিনি তাঁর ছাত্রজীবনের কিছু ছবি পাঠান। এর মধ্যে শফি আহমেদের ফোন নম্বরও হাতে পাই। সরাসরি তাঁকে ফোন করি। গৌতম রায়ের কথা বলতেই উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন, ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ, গৌতম আমার বন্ধু।’ মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় ৫৫ বছর আগে ছিন্ন হওয়া বন্ধুত্বের সম্পর্ক জোড়া দিয়ে দিলাম আমরা।

লেখক: সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ অ্যামেচার রেডিও সোসাইটি