Thank you for trying Sticky AMP!!

আমাজন বন উজাড়ে দায় আছে এই ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোরও

ক্রমে কমছে দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন নদীর দুই পাশজুড়ে থাকা বিশাল বনভূমির পরিধি। আর তাতে দায় আছে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিরও। বিশ্বের নামীদামি সব ফ্যাশন ব্র্যান্ড দায়ী এই অরণ্য বিনাশে। প্রায় পাঁচ লাখ তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা যায়, কোচ, এলভিএমএইচ, প্রাডা, এইড অ্যান্ড এম, জারা, অ্যাডিডাস, নাইকি, নিউ ব্যালান্স, টেভা, ইউজিজি, ফেন্দি—এই ব্র্যান্ডগুলোর সরাসরি দায় আছে। আর সাড়া জাগানো এই গবেষণা নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য গার্ডিয়ান। প্রতিবেদনের শিরোনাম, ‘নিউ স্টাডি লিংকস মেজর ফ্যাশন ব্র্যান্ডস টু আমাজন ডিফরেস্টেশন’।

বিশ্বের নামীদামি সব ফ্যাশন ব্র্যান্ড দায়ী এই অরণ্য বিনাশে

এই গবেষণার অন্যতম গবেষক অ্যাঞ্জেলিনা রবার্টসন বলেন, ‘আমি কাজটি শুরু করেছিলাম নিতান্তই ব্যক্তিগত উদ্যোগে। জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের ঘাড়ের ওপর নিশ্বাস ফেলছে। এখন যদি আমরা সচেতন না হই আর হওয়ার সুযোগ পাব না। কেননা, তত দিনে আমাদের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে।’ বিশ্বের সবচেয়ে বড় চামড়াজাত পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জেবিএস অন্তত ৫০টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করে, যারা ফ্যাশন পণ্য উৎপাদন করতে গিয়ে পরিবেশে অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। যদিও এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর তারা একটি চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেছে। সেখানে তারা ২০৩৫ সালের মধ্যে তাদের ফ্যাশনবাণিজ্যকে ‘শূন্য বি-বনায়নে’ নিয়ে যাবে বলে কথা দিয়েছে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় চামড়াজাত পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জেবিএস অন্তত ৫০টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করে, যারা ফ্যাশন পণ্য উৎপাদন করতে গিয়ে পরিবেশে অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে

এই গবেষণার আরেক গবেষক গ্রেগ হিগস বলেন, ‘আমি বাণিজ্যিকভাবে চামড়া দিয়ে পোশাক, জুতা, ব্যাগ বানাব, প্রচুর লাভ হবে আর পরিবেশের ক্ষতি হবে না, এটা আসলে কঠিন। আমাদের ব্যক্তিগত জায়গা থেকে উচিত চামড়ার পণ্য বর্জন করা। যেভাবে বন উজাড় হচ্ছে, তাতে ফ্যাশন দুনিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বদের এখনই নীতিনির্ধারণ করতে হবে। এক্ষুনি মানে এক্ষুনি। প্রতিবছর ভোক্তার দুয়ারে চামড়ার যত পণ্য তারা পৌঁছে দিচ্ছে, তাতে ২০২৫ সাল নাগাদ বছরে ৪৩ কোটি গরু মারা পড়বে।’ এদিকে বিশ্বব্যাপী টেকসই পোশাক নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান স্লো ফ্যাশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট জাং–উন কিম বলেন, ‘সবকিছুরই তো বিকল্প আছে। আমরা বলছি, পরিবেশ আর প্রাণের বিনাশ না করেও আপনি একটা ফ্যাশনেবল জীবন যাপন করতে পারেন।’

এই প্রতিবেদনে ৮৪টি কোম্পানির উল্লেখ আছে, যারা আমাজন বনের, তথা পরিবেশের বিনাশে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। এর মধ্যে ২৩টি পোশাকের ব্র্যান্ড ইতিমধ্যে ইউনেসকোকে লিখিত দিয়েছে যে তারা পরিবেশবান্ধব টেকসই ফ্যাশনে আগ্রহী। আর সে জন্য তারা নতুন নীতিমালা গ্রহণ করতে প্রস্তুত।

এর মধ্যে ২৩টি পোশাকের ব্র্যান্ড ইতিমধ্যে ইউনেসকোকে লিখিত দিয়েছে যে তারা পরিবেশবান্ধব টেকসই ফ্যাশনে আগ্রহী

ব্রাজিলিয়ান ইন্ডিজেনাস পিপলস অ্যালাইন্সের নির্বাহী সমন্বয়ক সোনিয়া গুয়াজাজারা বলেন, ‘এটা কোনো চাপিয়ে দেওয়া বিষয় নয়। এটা ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির নৈতিক দায়িত্ব। তারা প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস করে, পরবর্তী প্রজন্মকে হুমকির মুখে ঠেলে, বিশ্বকে বসবাসের অযোগ্য করে নিজেদের ব্যক্তিগত অর্থনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি করতে পারে না। তারা কোনো অবস্থায় দায় এড়াতে পারে না। দিন শেষে আমাদের প্রাণিজ পণ্য আর প্লাস্টিক বর্জন করতেই হবে। এর কোনো মাফ নেই। আর এটা তারা ১০ বছরের মধ্যে করবে, ২০২৫ সালে মধ্যে করবে, এসব প্রলোভনে পা দেওয়া যাবে না। এটা তাদের আজই করতে হবে। আজই!’