Thank you for trying Sticky AMP!!

খাবার টেবিলের কিছু শিষ্টাচার সম্পর্কে জানা জরুরি

বয়স ৩০ হওয়ার আগেই খাবার টেবিলের এসব শিষ্টাচার শিখে নিন

কারও কারও হয়তো মনে হতে পারে, খাবার টেবিলে কী করব, আর কী করব না, খেতে বসে কনুইটা কোথায় রাখব, কিংবা কাটা বেছে খাব কি না, এসব তো আমার ব্যক্তিগত বিষয়, সেটা জানাটা এমন কী জরুরি। নিজের ঘরে বসে খাওয়ার সময় কথাটা হয়তো ঠিক। কিন্তু আপনি যখন রেস্তোরাঁয় বা পার্টিতে গিয়ে ঘরের মতো করে খেতে শুরু করবেন, কারও কারও কাছে সেটা দৃষ্টিকটু লাগতে পারে। আর আপনি যদি বাড়িতেও খাবার টেবিলে সচেতন থেকে খাওয়ার অভ্যাস করেন, তাহলে আপনার সেই অভ্যাস বাইরে খাওয়ার সময়ও কাজে দেবে। বিশেষ করে যদি আপনার কোনো শিশুসন্তান থাকে, তারা প্রতিদিন যা দেখে, তা–ই মনে রেখে অনুকরণ করে। তাই তাদের ঘরোয়া আয়োজনে খাবার টেবিল ও রেস্তোরাঁর শিষ্টাচার শেখানো খুব জরুরি। খাবার টেবিলের কিছু শিষ্টাচার সম্পর্কে চট করে একটু জেনে নেওয়া যাক।

খাওয়ার আগের শিষ্টাচার

আপনি টেবিলে আসার অনেক আগে থেকেই কিন্তু টেবিল ম্যানার শুরু হয়ে যায়। প্রটোকল স্কুল অফ টেক্সাসের প্রতিষ্ঠাতা শিষ্টাচার বিশেষজ্ঞ ডায়ান গটসম্যান বলেন, ‘কোনো ডিনার পার্টিতে দাওয়াত থাকলে সময়মতো পৌঁছানোর চেষ্টা করুন। সময়মতো যাওয়া মানে, অন্য অতিথিকে আপনি বসিয়ে রাখছেন না।’ এই সময়ে অনেকে ইফতার পার্টিতে যাবেন। রেস্তোরাঁয় রিজার্ভেশনের সময়সূচি অথবা ইফতারির দাওয়াতের সময়টা নিশ্চিত হওয়ার পরই আবহাওয়া, দিকনির্দেশনা এবং রাস্তার ট্রাফিকের মতো বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে ভুলবেন না। তাই গন্তব্যে যেতে কতটা সময় হাতে নিয়ে বের হবেন, আগেই সেটা হিসাব করে রাখুন।

আপনার সেল ফোন দূরে রাখুন

খেতে বসে ফোন সাইলেন্ড রাখুন

পথ চেনা না থাকলে জিপিএসের সাহায্যে নিন। নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছানোর পর আপনার সেলফোনটি হাতে না রেখে ব্যাগে বা সাইলেন্ট করে পকেটে রেখে দিন। টেবিলে বসেও আপনি যখন ফোন চেক করবেন, তখন মনে হতে পারে পাশে বসে থাকা ব্যক্তিটির চেয়ে ফোনটাই আপনার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। জরুরি হলে, আপনার ফোন ভাইব্রেশন মোডে দিয়ে রাখতে পারেন আর ফোন এলে দূরে গিয়ে কথা সেরে আসতে পারেন।

আসন পরিকল্পনা এলোমেলো করবেন না

খাবার টেবিলে আসন এলোমেলো করবেন না

কোনো ইভেন্টে বসার পরিকল্পনাটি যত্নসহকারে করা হয়, যা সাজাতেও সময় লাগে। তাই কোনো প্রয়োজনে চেয়ার থেকে উঠলে আপনার জন্য নির্ধারিত আসনে নেম কার্ড থাকলে সেটা সরিয়ে ফেলবেন না। হোস্ট অতিথিদের জন্য যেমন আসন পরিকল্পনা করেছেন, একজন ভালো অতিথি হিসেবে সেই অনুযায়ী আসন গ্রহণ করুন।

Also Read: আজ ইফতারের টেবিলে থাকুক ঘরে বানানো এসব পদ

খাবারের জন্য অপেক্ষা করুন

রেস্তোরাঁ বা বাড়ি, যে দাওয়াতেই যান না কেন, নিমন্ত্রণকর্তাকে নিজের মতো সব গুছিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিন। তিনি টেবিলে না আসা পর্যন্ত বসার জায়গাটা এলোমেলো করবেন না। টেবিলে খাবার আসামাত্রই নিজের মতো খাওয়া শুরু করবেন না। নিমন্ত্রণকর্তা খাওয়া শুরু করার অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। আবার আপনি যদি নিমন্ত্রণকর্তা হয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই খাবার পরিবেশনের সময়টা খেয়াল রাখুন। কেউ যেন খাবার সামনে নিয়ে আপনার জন্য অতিরিক্ত সময় অপেক্ষায় না থাকেন।

খাবার টেবিলে আসার পর সবার পাওয়া নিশ্চিত হলে তারপর খেতে শুরু করুন

প্রয়োজনে উঠতে হলে

বসার পর অনেক সময় জরুরি কোনো প্রয়োজন টেবিল থেকে ওঠার দরকার হতে পারে। হাত ধোয়া বা ওয়াশরুম ব্যবহার করার জন্য উঠতে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আপনার টেবিলে থাকা ন্যাপকিনটি চেয়ারের সিটে ছড়িয়ে রাখুন, অবশ্যই টেবিলে নয়। ন্যাপকিন এভাবে রাখলে লোকে বুঝতে পারবে যে কেউ এখানে বসেছেন।

পানীয় খাওয়ার শিষ্টাচার

যে টেবিলে খেতে বসেছেন, সেখানে হয়তো শুরুতে গ্লাসে গ্লাসে পানীয় ঢেলে দেওয়া হচ্ছে। ধরা যাক আপনার গ্লাসেই প্রথমে পরিবেশন করা হলো। তারপরও আপনি আগেই পান করা শুরু করবেন না। সবার গ্লাস পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। টেবিলে যদি কোনো হোস্ট থাকেন, তাহলে তাঁর ইঙ্গিত না পাওয়া পর্যন্ত নিজের গ্লাসে চুমুক দিবেন না। আপনি পানি বা কোনো পানীয় পান করা শেষে গ্লাসটি কখনোই উল্টে রাখবেন না; এটা খুবই খারাপ শিষ্টাচার।

Also Read: ঈদের দুপুরে খাবার টেবিলে

কীভাবে খাবার হস্তান্তর করতে হয়

সবার সঙ্গে খেতে বসার সময় খাবার হস্তান্তর করুন নির্দিষ্ট নিয়মে

টেবিলে খাবার পরিবেশনে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে যেতে হবে। টেবিলে যদি কোনো একজন এমন একটি খাবার চান, যা তাঁর নাগালের বাইরে এবং আপনি কাছাকাছি থাকেন, তবে তাঁর কাছে খাবারটি হস্তান্তর করার আগে নিজের জন্য কিছুটা তুলে নেওয়া থেকে বিরত থাকুন। প্রয়োজনে অন্যরা নেওয়ার পরে সেটি ফেরত চেয়ে নিন।

খাওয়া শেষ হয়নি কিন্তু বিরতি নিচ্ছেন

নানা কারণেই খাবারের মাঝপথে বিরতি নিতে হতে পারে। তাই টেবিল ছেড়ে ওঠার আগে আপনার ছুরি ও কাঁটা চামচটি আপনার প্লেটের মাঝখানে রাখুন। এটা এমনভাবে রাখবেন যেন দেখতে উল্টা ভি (V)–র মতো হয়। রেস্তোরাঁর শিষ্টাচারের ক্ষেত্রে এটিও মনে রাখতে হবে। এই নিয়ম না মানলে ওয়েটার টেবিল থেকে আপনার আধখাওয়া প্লেট তুলে নিতে পারেন আর এতে আপনি বিরক্তিও প্রকাশ করতে পারবেন না।

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট