Thank you for trying Sticky AMP!!

অস্ত্রোপচারে সন্তান জন্মের পর মায়ের দেখাশোনা

জন্মের পর সন্তান সবার মনোযোগ কেড়ে নেয়, এমনকি মায়েরও। এ সময় বেশির ভাগ নতুন মা নিজের যত্ন–আত্তির কথা ভুলে যান, ভুলে যাই আমরা পরিবারের অন্যরাও। কিন্তু যে মায়ের সিজারিয়ান অপারেশনের (সন্তান প্রসবে অস্ত্রোপচার) মাধ্যমে সন্তান হয়েছে, তাঁর পুরোপুরি সুস্থ হতে কিছুটা সময় লাগবেই। তাঁর সেলাইয়ের স্থান বা ঘা শুকানো থেকে শুরু করে আরও নানা দিক রয়েছে। যেকোনো শল্যচিকিৎসার পর ছয় থেকে আট সপ্তাহ সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক সচেতনতা ও যত্নের অভাবে অনেকেই এ নিয়ে নানা জটিলতায় ভোগেন।

: অনেকেরই ধারণা, সিজারিয়ানের পর বেশি হাঁটাহাঁটি ভালো নয়, বিশ্রামে থাকতে হবে। আসলে এ ধারণা ভুল। পরদিন থেকেই হালকা হাঁটাচলা শুরু করা উচিত। এতে বরং নানা জটিলতা কমে। নিজে নিজে বাথরুমে যাবেন। প্রথম কয়েক দিন বেল্ট ব্যবহার করলে এই হাঁটাহাঁটি আরেকটু স্বচ্ছন্দ হয়।

: প্রথম কয়েক ঘণ্টা নরম খাবার, যেমন স্যুপ, জাউ দেওয়া হয়, যাতে বমি না হয়। এরপর দ্রুতই স্বাভাবিক খাবারে ফিরে আসা উচিত। ইতিমধ্যে মা হয়তো বুকের দুধ খাওয়াতে শুরু করেছেন। তাই যথেষ্ট পুষ্টিকর খাবার ও আমিষসমৃদ্ধ সুষম খাবার খেতে হবে। সিজারিয়ানের পর কোষ্ঠকাঠিন্য একটি বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়। তাই আঁশযুক্ত খাবার, ফলমূল, শাক–সবজি, ইসবগুলের ভুসি ইত্যাদি খাওয়া উচিত।

: সেলাই বা কাঁচা জায়গার আলাদা যত্ন প্রয়োজন। প্রতিদিন হালকা গরম পানি দিয়ে জায়গাটা পরিষ্কার করে (যেমন গোসলের সময়) একটি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে নেবেন। কাপড়ের ঘষা যাতে না লাগে, সে জন্য হালকা সুতির নরম পোশাক পরবেন। প্রথম দিকে ফোলা ও কালো দেখাতে পারে, তবে ছয় থেকে আট সপ্তাহের মধ্যে ঠিক হয়ে আসে। যদি জায়গাটা লাল হয়ে যায়, পুঁজ বা পানি বের হয়, ফুলে যায়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। কাটা জায়গায় একটু অসাড় অনুভূতি বা ব্যথা অনেক দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। হাঁচি–কাশি দেওয়ার সময় জায়গাটাতে হাত বা বালিশ চাপা দিয়ে সাপোর্ট দেওয়া ভালো। কখনো চিকিৎসক মলম ব্যবহার করতে দিতে পারেন।

: স্বাভাবিক চলাফেরা করলেও পেটে চাপ পড়ে, এমন ধরনের কাজ বা ব্যায়াম, বেশি সিঁড়ি ওঠা–নামা ও ভারী জিনিস উত্তোলন না করাই ভালো। পর্যাপ্ত বিশ্রামও দরকার। সঠিক জীবনাচরণ দ্রুত মাকে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে সাহায্য করবে।

ডা. শামীমা ইয়াসমিন, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগ, বিএসএমএমইউ