Thank you for trying Sticky AMP!!

পুরুষের স্তনে পরিবর্তন

পুরুষের অস্বাভাবিক স্তন বৃদ্ধিকে গাইনেকোমাস্টিয়া বলে। কখনো কখনো এ থেকে নিঃসরণও হতে পারে। বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেদের এ অবস্থা খুবই বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। তবে অনেক ছেলের বয়ঃসন্ধিকালের স্তনের বৃদ্ধি দুই বছরের মধ্যে মিলিয়ে যায়।

গাইনেকোমাস্টিয়ার নানা কারণ আছে। তবে যৌন হরমোনের তারতম্য ও ভারসাম্যহীনতাই মূল কারণ। অনেক সময় স্তনে অতিরিক্ত চর্বি জমলে স্তন বড় দেখায়, তবে এটা গাইনেকোমাস্টিয়া নয়। গাইনেকোমাস্টিয়া এক পাশে বা দুই পাশে হতে পারে। ব্যথাও হতে পারে।

গাইনেকোমাস্টিয়া নবজাতক, বয়ঃসন্ধিকালে বা বয়ঃসন্ধিকালের আগে এবং বৃদ্ধ অবস্থায় বেশি দেখা দেয়। হরমোনসহ বিভিন্ন ধরনের ওষুধ গ্রহণ, রক্তে ইস্ট্রোজেন হরমোনের আধিক্য, টেস্টোস্টেরনের উৎপাদন কমে যাওয়া, অ্যানড্রোজেন রিসেপ্টরের ত্রুটি, দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ, লিভার সিরোসিস, এইচআইভি ইত্যাদি কারণে এই অস্বাভাবিক স্তন দেখা দিতে পারে। ২৫ শতাংশ ক্ষেত্রে এর কোনো কারণ জানা যায় না।

প্রথমেই খেয়াল করতে হবে কোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় এমনটি হচ্ছে কি না। সিমেটিডিন, ওমিপ্রাজল, স্পাইরোনোল্যাকটন, ইমাটিনিব মিসাইলেট, ফিনাস্টেরাইড এবং কিছু নির্দিষ্ট অ্যান্টি সাইকোটিক ওষুধ এ সমস্যা তৈরি করে। কিছু ওষুধ সরাসরি স্তন টিস্যুর ওপর কাজ করে আবার কিছু ওষুধ ডোপামিনের কাজে বাধা সৃষ্টি করে এবং পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে প্রোলাকটিনের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। শক্তিবৃদ্ধিকারী ফুড সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ব্যবহৃত অ্যান্ড্রোসটেনেডিওন ইস্ট্রোজেনের অতিরিক্ত কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়। প্রোস্টেট ক্যানসারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ যেমন অ্যান্টি অ্যানড্রোজেন এবং ডিএনআরএইচ অ্যানালগগুলো গাইনেকোমাস্টিয়া করে। মারিজুয়ানা গাইনেকোমাস্টিয়ার একটি কারণ।

অণ্ডকোষের টিউমার এবং হাইপারথাইরয়েডিজম রোগে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বেড়ে যায়। অ্যাড্রেনাল টিউমার অ্যান্ড্রোসটেনেডিওনের মাত্রা বাড়ায়। পুরুষ যৌন হরমোন টেস্টোস্টেরনের উৎপাদনের মাত্রা কমে গেলে গাইনেকোমাস্টিয়া হতে পারে। অণ্ডকোষের সমস্যা, হাইপোথ্যালামাস কিংবা পিটুইটারির রোগে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমতে পারে। অ্যানাবলিক অ্যান্ড্রোজেনিক স্টেরয়েডের অপব্যবহারও একই প্রভাব ফেলে। বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেদের কিছু হারবাল তেল ও লোশন বারবার মাখলে গাইনেকোমাস্টিয়া হতে পারে।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে গাইনেকোমাস্টিয়ার জন্য দায়ী ওষুধ বন্ধ করা হলে স্তন আগের অবস্থায় ফিরে যায়। তারপরও অবস্থা স্বাভাবিক না হলে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়। ছেলেদের স্তনে এ ধরনের পরিবর্তন লক্ষ করলে এ নিয়ে লজ্জা না পেয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়