Thank you for trying Sticky AMP!!

চল্লিশের পর নারীর যে স্বাস্থ্য পরীক্ষাগুলো করা জরুরি

স্বাস্থ্যসচেতনতার ক্ষেত্রে নারীরা একটু পিছিয়েই থাকেন। ঘরে–বাইরে সার্বক্ষণিক প্রচুর পরিশ্রম করেন নারীরা, সামলান মানসিক বা শারীরিক নানা চাপ। নারীকে মা হতে হয়, সন্তান প্রসব ও বুকের দুধ খাওয়াতে হয়। নানা কারণেই নারী তাই স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্মুখীন হন তুলনামূলকভাবে বেশি। একটা বয়সের পরে পুরুষের মতো নারীরও কিছু রোগবালাইয়ের ঝুঁকি বাড়ে, সেই সঙ্গে নারীদের বিশেষ কিছু সমস্যাও দেখা দিতে পারে। সব মিলিয়ে সব নারীরই স্বাস্থ্যসংক্রান্ত ব্যাপারে সচেতনতা জরুরি।

রোগ হলেই শুধু চিকিৎসা নিলে চলবে না, বরং রোগ হওয়ার আগেই প্রতিরোধব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। যেকোনো সমস্যা প্রাথমিক অবস্থাতেই ধরার চেষ্টা করতে হবে, নিজের যত্ন নিতে হবে এবং একটা স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।

চল্লিশের পরে প্রত্যেক নারীকেই চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে বিশেষ কিছু স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা জরুরি। যেমন একটা বয়সের পরে জরায়ুর প্রদাহ, ক্যানসার বা অন্যান্য জটিলতা বাড়তে পারে। এগুলো এড়াতে চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে কিছু পরীক্ষা–নিরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে। যেমন পেটের আলট্রাসনোগ্রাম বা প্যাপস স্মিয়ার পরীক্ষা। স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি যেকোনো বয়সেই আছে। কারও পরিবারে যদি স্তন ক্যানসারের ইতিহাস থাকে, তাহলে তো ঝুঁকি আরও খানিকটা বেশি। তাই ৪০ বছর বয়স হলেই নিয়মিত স্তনের আলট্রাসাউন্ড এবং ম্যামোগ্রাম পরীক্ষা করলে স্তন ক্যানসারের জটিলতা এড়ানো সম্ভব হয়।

নারীদের বয়স ৩০ পার হলেই আস্তে আস্তে হাড়ের ক্ষয়জনিত সমস্যা শুরু হতে থাকে। আর রজোনিবৃত্তির (মেনোপজ) সময় থেকে তা আরও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। অস্টিওপরোসিস, অস্টিওআরথ্রাইটিস ইত্যাদি সমস্যা নারীদের বেশি কাবু করতে পারে বলেই নিয়মিত হাড়ের অবস্থা জানার দরকার হয়। এক্সরে করে, রক্তে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডির পরিমাণ দেখে, বোন মিনারেল ডেনসিটি বা বিএমডি পরীক্ষা করে হাড়ের অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারে।

একটা বয়স পর্যন্ত পুরুষের তুলনায় নারীর হার্টের সমস্যা, যাকে ইস্কিমিক হার্ট ডিজিজ বলা হয়, কম থাকে। কিন্তু বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ইস্ট্রোজেন হরমোনের ঘাটতি হতে থাকলে নারীর হার্টের রোগ হওয়ার আশঙ্কা বাড়তে থাকে। তাই চল্লিশোর্ধ্ব নারীর নিয়মিত হার্টের পরীক্ষাসহ ডায়াবেটিস বা রক্তে চর্বির পরিমাণ দেখা দরকার।

এ ছাড়া মেনোপজের পরে অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি যেমন হতে পারে, তেমনি কান–মাথা গরম হয়ে যাওয়া, হাত–পা জ্বালাপোড়ার মতো সমস্যা দেখা যায়। যদিও বলা হয় বয়স একটা সংখ্যা মাত্র, কিন্তু বয়সের সঙ্গে সঙ্গে কিছু কিছু জটিলতা হতেই পারে। অনেক সময়ই নারীরা পরিবারের সবার যত্নআত্তি করলেও নিজেরা খানিকটা অবহেলিত থাকেন। কিন্তু একটা বয়সের পরে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা অবশ্যই করা উচিত। তাতে করে যেকোনো সমস্যা আগেভাগেই নির্ণিত হতে পারে এবং অনাবশ্যক জটিলতা এড়ানো সম্ভব হয়।


লেখক: ডা. শাহনূর শারমিন, সহযোগী অধ্যাপক, ঢাকা মেডিকেল কলেজ