Thank you for trying Sticky AMP!!

অনায়াসে ঘরসজ্জায় নতুনত্ব

যতই দামি আর বিচিত্র সব আসবাব ও অনুষঙ্গ দিয়ে ঘর সাজানো হোক না কেন, কিছুদিন পর সেই একই গৃহসজ্জা এক ধরনের একঘেয়েমি তৈরি করে। অফিস থেকে ফিরে বসার ঘরের সেই একই জায়গায় বসে চায়ের কাপ হাতে বসে জীবনের নিত্যনৈমিত্তিক ঝামেলাগুলোর ভাবনা যেন আরও একঘেয়ে হয়ে ভর করে মাথায়। গৃহিণীদের তো আরও বেশি বিষণ্নতায় পেয়ে বসে সেই একই আসবাব, একই ওয়াল হ্যাংগিং আর গাছগাছালি একইভাবে প্রতিদিন ঝেড়েমুছে রাখতে। ঘন ঘন নতুন আসবাব বা ঘর সাজানোর জিনিস কেনাটাও সম্ভব নয়। অথচ একটু পরিকল্পনামাফিক কিছু পদক্ষেপ নিলে অনায়াসেই এবং একদম কম খরচে বাড়ির সাজসজ্জায় আনা যায় নতুন অনুভব।

ঘরের আসবাবের স্থান পরিবর্তন

সব ঘরেরই আসবাবগুলো যেখানে রাখা আছে, সম্ভব হলে তা মাঝেমধ্যে অদল–বদল করলে ঘরটি সম্পূর্ণ অন্য রকম মনে হয়। বসার ঘরের সোফা বা পড়ার ঘরের বইয়ের তাকটি এদিক থেকে সেদিক বা এ দেয়াল থেকে সে দেয়াল-সংলগ্ন জায়গায় সরিয়ে রাখা যায়। খাবার টেবিলটি এক কোণ থেকে টেনে ঘরের একদম মাঝে এনে দেওয়া যায়। শোয়ার ঘরে আড়াআড়িভাবে রাখা খাটটি ঘুরিয়ে লম্বালম্বি রাখলেও এটি একদম অন্য রকম লাগবে।

শোয়ার ঘরে খাটের অবস্থান পরিবর্তন করতে পারেন

এ ক্ষেত্রে আরেকটি জিনিস খেয়াল করতে হবে যা হলো, ঘরের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু বা ফোকাল পয়েন্ট। যেমন বসার ঘরে টিভি বা খাবার ঘরে ডাইনিং টেবিলটিকে আগে সুবিধামতো এক জায়গায় স্থানান্তর করে সে অনুযায়ী বাকি আসবাব ও অনুষঙ্গ সাজিয়ে নিতে হয়। সুযোগ থাকলে পড়ার ঘরটির সব আসবাব শোয়ার ঘরের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি করে নেওয়া যায়। গ্রিল দেওয়া বারান্দাটি বানিয়ে নেওয়া যায় অস্থায়ী গেস্টরুম বা বাচ্চাদের খেলার ঘর।

বিচিত্র কুশনের ব্যবহার

কয়েক সেট কুশন কাভার রাখুন বাসায়। সেগুলোকেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করুন

সোফাসেট, ডিভান—এগুলো তো আর বারবার বদলানো যায় না। কিন্তু কয়েক সেট কুশন কাভার অনায়াসেই কেনা যায় এতে রাখা কুশনগুলোর জন্য। ঘরের আবহ অনুযায়ী মাঝেমধ্যেই এই কুশন কাভারগুলো বদলে নিয়ে ঘরে আনা যায় আনকোরা পরিবেশ। বিভিন্ন রং, ডিজাইন ও ফ্যাব্রিকের কুশন কাভারের মাধ্যমে এই বৈচিত্র্য আনার কোনো শেষ নেই।

পর্দায় বৈচিত্র্য

ঘরের আবহ সম্পূর্ণ পাল্টে দেওয়া যায় পর্দায় বৈচিত্র্য এনে

ঘরের আবহ সম্পূর্ণ পাল্টে দেওয়া যায় পর্দায় বৈচিত্র্য এনে। সবগুলো পর্দাই এক মাপে কিন্তু বিভিন্ন ডিজাইনে তৈরি করলে মাঝেমধ্যে মিক্সড অ্যান্ড ম্যাচ করে মিলিয়ে–মিশিয়ে বিভিন্ন ঘরে অদল–বদল করে পর্দাগুলো টাঙানো যেতে পারে। পর্দাগুলো খুব ভারী কাপড় দিয়ে তৈরি না করে ভাঁজমুক্ত বা রিংকেল ফ্রি কাপড় দিয়ে বানানো এবং রিং বসানো হলেই অদল-বদল করতে সুবিধা হয়। আজকাল পর্দায় নানা আলগা লাগানো যায়, এ রকম ফ্রিল ও এক্সটেনশনের চল হয়েছে, যেগুলো মাঝেমধ্যে বদলে নিয়ে ঘরে অভিনবত্ব আনা যায়।

ঘরের লাইটিং পরিবর্তন

একটি মাত্র নতুন টেবিল বা ফ্লোর ল্যাম্প অথবা ঝাড়বাতি চিরচেনা ঘরটিকে পাল্টে দিতে পারে

একটি মাত্র নতুন টেবিল বা ফ্লোর ল্যাম্প অথবা ক্ষেত্রবিশেষে ঝাড়বাতি চিরচেনা আগের ঘরটিকে একেবারে অচেনা রকম ভালো লাগায় ভরিয়ে তুলতে পারে। আবার ঘরের বাতিতে নানা রকম শেড লাগানো যায়, বাতির রঙেও আনা যায় বৈচিত্র্য। ঘরের ঠিক কোন জায়গা থেকে আলো পড়লে ঘরটি কেমন দেখাবে, তা একটু খেয়াল করলে পুরোনো ঘরই নতুন আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠতে পারে। শোয়ার ঘরে একটু কায়দামতো আলো-আঁধারি অথবা বসার ঘরে পরিবারের ফটো গ্যালারির ওপর বিচ্ছুরিত সঠিক ফোকাল লাইটের ব্যবস্থা করলে ঘরে আসবে নিত্যনতুন রূপ। সময় বিশেষে, কোনো উৎসব উপলক্ষে মোমবাতির আলোতেও অন্য রকম করে তোলা যায় একঘেয়ে বসার ঘরটি।

নানা রকম অনুষঙ্গের ব্যবহার

এ রকম পুরোনো জিনিসপত্রে সাজানো যেতে পারে ঘর

ঘর সাজানোর সব উপকরণ গাদাগাদি করে একসঙ্গে না সাজিয়ে বুদ্ধি করে কোনটির সঙ্গে কোনটি মেশালে ভালো লাগতে পারে, তা একটু খেয়াল করে কিছু জিনিস তুলে রাখা ভালো। কয়েক মাস পরপর পালা করে পরিকল্পনামতো কম্বিনেশন করে শো পিস, ওয়াল হ্যাংগিং, ফুলদানি—এগুলো সাজালে নতুনত্ব আসে ঘরে। কয়েক দিন পরপর বাড়ির হাউস প্ল্যান্ট, সাকুলেন্টস, অর্কিডের সজ্জায়ও একটু পরিবর্তন আনা খুবই সহজ। পারিবারিক ফটো গ্যালারির ছবিগুলোর ক্রম বদলে নেওয়া যায় অনায়াসে। টেবিল কভার, টেবিল রানার, শতরঞ্জি, দেয়ালঘড়ি—এগুলো মাঝেমধ্যে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সাজালেও ঘরে নতুন এক আবহ তৈরি করা যায়।

এ রকম ক্যাকটাসও বদলে দিতে পারে আপনার চিরচেনা ঘরটিকে

চিরচেনা ঘরে একঘেয়েমি দূর করে যদি এভাবে বুদ্ধি করে একটু নতুন ছোঁয়া আনা যায়, দিন শেষে ঘরে ফিরে দেহ-মনে আসে সজীব অনুভূতি। ছুটির দিনে পরিবারের সবাই মিলে চা অথবা লুডুর আড্ডাতেও আসে চনমনে ভাব, যদি একটু নবরূপে সেজে ওঠে বসার ঘরটি।