Thank you for trying Sticky AMP!!

নীড় ছোট ক্ষতি নেই

বাড়িটি হয়তো খুব বেশি বড় নয়। কিন্তু অন্দরসজ্জায় কিছু কৌশল অবলম্বন করলে ছোট পরিসরকেও প্রশস্ত দেখায়। নান্দনিকতার ছোঁয়ায় সাজাতে পারেন আপনার ছোট নীড়। লিখেছেন শ্বাশ্বতী মাথিন

মাঝারি আকারের ফ্ল্যাটটি চমৎকারভাবে গুছিয়েছেন শাহানা হুদা

বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছেন শাহানা হুদা। তাঁর ফ্ল্যাটের আয়তন ১ হাজার ৩৩০ বর্গফুট। ১৬–১৭ বছর ধরে এই বাসায় আছেন তিনি। মাঝারি আকারের ফ্ল্যাটটি চমৎকারভাবে গুছিয়েছেন তিনি। বসার ও খাবার ঘরের মাঝে কোনো দেয়াল রাখেননি। সম্পূর্ণ খোলা। বসার ঘরের পাশের বারান্দার অংশটিকে দোলনা দিয়ে এমনভাবে সাজিয়েছেন, মনে হয় বসার ঘরেরই অংশ। ঘরের এক পাশে সোফা আর মাটিতে বসার জন্য দুটি উঁচু গদি। দেয়ালে করেছেন সাদা রং। একটু ভিন্নতা আনার জন্য খাবারের জায়গার একটি দেয়ালে করেছেন অ্যাকোয়া রং। সেখানে বিভিন্ন ধরনের ছবির ফ্রেম। রঙিন এই দেয়ালের পাশে যেসব আসবাব রয়েছে, সব সাদা। খাবার টেবিলটি ভাঁজ (ফোল্ডিং) করা যায়, ফলে বেশি অতিথি এলে জায়গা দিতে অসুবিধা হয় না।

এই বাসায় খুব বেশি বড় আসবাবের ব্যবহার করা হয়নি

ঘরে তেমন ঢাউস আসবাব রাখেননি। এই জায়গাটুকু ভালোভাবে ব্যবহার করতে রান্নাঘরে কাঠের বদলে স্লাইডিং দরজা ব্যবহার করেছেন। বসার ঘরের একটি দেয়ালে ঝোলানো হয়েছে দাদার দেওয়া আয়না আর নানার দেওয়া ওয়াল হ্যাঙ্গিং। দাদির একটি টিনের ট্রাংককে রং করে সেন্টার টেবিল হিসেবে ব্যবহার করেছেন। ভেতরে কিছু বই। বাসাটি পুরোনো ও নতুন আসবাবের সংমিশ্রণে।

শাহানা হুদার কাছে ঘর হলো শান্তির জায়গা

শাহানা হুদা বলেন, ‘ঘর হলো শান্তির জায়গা। ঘরে প্রবেশ করে আরাম লাগতে হবে। যেহেতু আমার মাঝারি বাসা, তাই ছোট ও মাঝারি আসবাব দিয়ে সাজানোর চেষ্টা করেছি। আসবাবগুলোকে এমনভাবে তৈরি করেছি, যেন একটি দিয়ে একাধিক কাজ চলে। নতুন ফার্নিচার কিনতে যাইনি। পুরোনোগুলোকেই রং করে নতুন চেহারা দিয়েছি। বাসা যেন বড় দেখায়, তাই রং নির্বাচন ও জায়গার ব্যবহারে সতর্ক ছিলাম। হালকা রং ব্যবহার করেছি দেয়ালে। আমার মনে হয়, ছোট বাসায় অল্প আসবাব রেখে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা গেলে দেখতে বেশ ভালো লাগে।’

খাবার ঘরের দেয়ালে এই ধরণের রঙের ব্যবহার ঘরকে বড় দেখাবে

প্রতিদিন বাড়ছে শহরমুখী মানুষের সংখ্যা। তাই অল্প জায়গায় বেশি আবাসনের প্রয়োজন পড়ছে। ফ্ল্যাট বা বাসাগুলো ছোট হয়ে যাচ্ছে। এস কে ডেকোরের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা অন্দরসজ্জাবিদ সাইমুল করিম বলেন, ‘কম জায়গার বাসা সাজাতে বড় আসবাব একদমই ব্যবহার করা যাবে না। এমন আসবাব ব্যবহার করতে হবে, যেগুলোতে একটি দিয়ে অনেক কাজ করা যায়। যেমন বেড কাম সোফা, ডাইনিং টেবিল কাম রিডিং টেবিল, সেন্টার টেবিল কাম রিডিং টেবিল ইত্যাদি। বসার ঘরে সোফার বিকল্প হিসেবে বড় বড় কুশনও ব্যবহার করা যায়।’ বাসায় এমনভাবে জানালাগুলো তৈরি করতে হবে, যেন আলো-বাতাস আসে বেশি। আলো থাকলে ঘর বড় লাগে। এমন বাসায় কয়েক স্তরের পর্দা ব্যবহার না করাই ভালো। এক স্তরের পর্দাই আদর্শ। দেয়ালের রংগুলো যতটা সম্ভব হালকা করতে হবে। সাদা, চাপা সাদা, গোলাপি, হালকা সবুজ, হালকা নীল ইত্যাদি রং ভালো। আবার ভিন্নতা আনতে চাইলে খাবার ঘরের দেয়ালে প্রাণবন্ত রং ব্যবহার করতে পারেন—লেমন, হলুদ, টার্কিশ ব্লু ইত্যাদি। আর বসার ঘরে করলেন প্যাস্টেল রং। যেমন ছাই, সিলভার, সোনালি। এগুলো ব্যবহার করলে ঘর বড় দেখাবে। জায়গা বাঁচাতে দেয়ালকে কাজে লাগাতে পারেন। দেয়ালঘেঁষা বুকশেলফ বা শোকেস তৈরি করুন। এতে অনেক বই বা জিনিস আঁটবে।

ছোট বাসাও রুচিসম্মত ও সুন্দর করে সাজানো যায়

আসলে কিছু বিষয় খেয়াল রাখলে ছোট বাসাও রুচিসম্মত ও সুন্দর করে সাজানো যায়। এ জন্য আসবাব যে খুব দামি হতে হবে, তা-ও নয়। পুরোনো আসবাবকেও নতুন করে রং দিয়ে সাজানো যায়। কেবল খেয়াল রাখতে হবে যেন ঘরটি জিনিসপত্রে ঠাসা না হয়। ঘরে ঢুকলে যেন প্রশান্তি লাগে।