Thank you for trying Sticky AMP!!

ভূমিকম্প হতে পারে যখন-তখন, কী করবেন

ভূমিকম্পের সময় বাসায় থাকলে দ্রুত টেবিলের নিচে আশ্রয় নিতে পারেন

দুর্ঘটনা রোজ ঘটে না। কিন্তু স্বাভাবিক সময়েই প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হয় সেই বিপদের জন্য। বড় ধরনের ভূমিকম্প হতে পারে যখন-তখন। ঠেকানোর উপায় তো নেই। তাই ক্ষয়ক্ষতি কমাতে স্বাভাবিক সময়ে অবশ্যই এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে রাখতে হবে। ভূমিকম্প কখন হবে, তা আগে থেকে জানার সুযোগ নেই, প্রস্তুত থাকতে হবে সব সময়ের জন্য।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক এবং মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান শিকদার মনে করেন, ভূমিকম্প হলে কী করতে হবে, তার মহড়াও করা উচিত মাঝেমধ্যে। কীভাবে বেরোতে হবে, বেরোনোর সুযোগ না থাকলে কোথায় কীভাবে অবস্থান নিতে হবে—সবকিছুই অনুশীলন করতে হবে। আর ভূমিকম্পের সময় অবশ্যই মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে।

Also Read: ভূমিকম্প হলে কী করবেন, কী করবেন না

ভূমিকম্পের সময়

ভূমিকম্প হচ্ছে যখন টের পেলেন, তখন আপনার অবস্থান যদি নিচতলা বা দোতলায় হয়, যেখান থেকে ১০-১৫ সেকেন্ডের মধ্যে বেরিয়ে যেতে পারবেন, তাহলে মাথা বাঁচিয়ে বেরিয়ে পড়ুন। বেরিয়ে দ্রুত আশপাশের কোনো ফাঁকা জায়গায় অবস্থান নিন; কিন্তু আপনি যদি বহুতল ভবনে থাকেন, যেখান থেকে বেরিয়ে ফাঁকা জায়গায় পৌঁছতে সময় লাগবে, তাহলে ভবনের ভেতরেই থাকুন। ভবনের বিম বা কলামের সংযোগস্থল তুলনামূলক নিরাপদ জায়গা। এ ছাড়া কাঠের খাট, টেবিল বা বেঞ্চের নিচেও থাকতে পারেন। এ রকম জায়গায় মাথায় বালিশ বা ব্যাগ চেপে কিংবা দুহাতে মাথা ঢেকে, উপুড় হয়ে বসে থাকতে হবে কম্পন থাকা অবধি। সিঁড়িকোঠায়ও এভাবে আশ্রয় নিতে পারেন।

যা করবেন না

  • জানালা, বারান্দা বা ছাদ থেকে লাফ দেবেন না। এতে মৃত্যুও হতে পারে।

  • জানালা, কাচের টেবিল, স্লাইডিং ডোর বা শোকেসের কাছে থাকবেন না।

  • ঝুলন্ত বস্তুর নিচে থাকবেন না। কার্নিশ বা আলমারির ওপর ভারী বস্তু থাকতে পারে। এগুলোর কাছেও দাঁড়াবেন না।

  • লিফট ব্যবহার করবেন না।

  • বয়স্ক, অসুস্থ ব্যক্তি কিংবা পোষা প্রাণী ফেলে যাবেন না।

ভূমিকম্প থেমে গেলে

সম্প্রতি ভূমিকম্পে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের পাঠকক্ষের দরজার কাচ ভেঙে যায়।

বড় ধরনের ‘আফটার শক’–এর ঝুঁকি থাকে বলে প্রথম কম্পন থেমে যাওয়ার পর সবারই খোলা জায়গায় গিয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করা উচিত। মুঠোফোনের রেডিও বা ইন্টারনেটে সংবাদ জানতে চেষ্টা করুন—কখন ঘরে ফেরা নিরাপদ বা কোনো নির্দেশনা রয়েছে কি না। ভবনে চিড় বা ফাটল দেখা দিলে কিংবা অন্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিন।

পূর্বপ্রস্তুতি

এলাকা বা প্রতিষ্ঠান থেকে অনেকে মিলে ফায়ার সার্ভিস থেকে ভূমিকম্পবিষয়ক প্রশিক্ষণ নিয়ে রাখুন। বাড়ির সবার সঙ্গে সেই প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিন। দুর্ঘটনাকবলিত হয়ে আটকা পড়লে ৭২ ঘণ্টা চলার মতো শুকনা খাবার রাখুন বাসায় ও প্রতিষ্ঠানের সুবিধাজনক স্থানে। উদ্ধারকারী দলকে সংকেত দেওয়ার জন্য বাঁশি এবং লাল কাপড় রাখুন। জাতীয় জরুরি সেবার নাম্বার ৯৯৯ এবং ফায়ার সার্ভিসের হটলাইন নাম্বার ১৬১৬৩ সব সময় খেয়াল রাখুন। ভূমিকম্পে অগ্নিদুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। গ্যাসের লাইন তো শহরজুড়ে ছড়িয়ে আছে মাটির নিচ দিয়েই। নিজের বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানের গ্যাস এবং বিদ্যুৎ–সংযোগ ঠিকঠাক আছে কি না, বিদ্যুৎ-ক্ষমতার অতিরিক্ত ব্যবহার হচ্ছে কি না, এসব বিষয়ে খেয়াল রাখুন। অগ্নিনিরাপত্তাবিষয়ক প্রশিক্ষণও জরুরি। জাতীয় ভবন নির্মাণ বিধিমালা মেনে ভবন নির্মাণ করুন, ফায়ার সার্ভিস থেকে অনাপত্তিপত্র নিন। নিয়মমাফিক অগ্নিনির্বাপণ–ব্যবস্থা রাখুন। এলাকায় ভূমিকম্পের প্রথম ঝাঁকুনির পর আশ্রয় নেওয়ার মতো খোলামেলা জায়গা না থাকলে তুলনামূলক নিরাপদভাবে নির্মিত হয়েছে, এমন ভবনের নিচে আশ্রয় নিতে হতে পারে। এলাকার এই ভবনগুলোকে চিহ্নিত করে রাখতে হবে। যেসব ভবন সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়, সেগুলো তুলনামূলক নিরাপদ। তাই তেমন ভবন আপনার কাছাকাছি আছে কি না, খোঁজ রাখুন।

Also Read: লিফটের আদবকেতা