Thank you for trying Sticky AMP!!

'আব্বার মৃত্যুর সময় তামিমই ছিল পাশে'

>আজ বাবা দিবস। প্রথম আলোর ইউটিউব চ্যানেলে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ১০ ক্রিকেটারের বাবাদের ১০টি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। এবারের বিশ্বকাপ দলে থাকা চার ক্রিকেটারের বাবা নেই। তাঁদের মা ও ভাইয়েরা বললেন বাবাদের সঙ্গে ক্রিকেটারদের নানান স্মৃতিকথা।

বহু বার নিজের ক্যারিয়ারে বাবার অবদান নিয়ে কথা বলেছেন জাতীয় দলের ওপেনার তামিম ইকবাল। বাবা ইকবাল খানের অনুপ্রেরণাতেই এতদূর এসেছেন দেশসেরা এই ওপেনার। বাবার সঙ্গে তামিমের সম্পর্কটাও ছিল ভীষণ বন্ধুত্বপূর্ণ। বাবা দিবসে সেসব স্মৃতি নিয়েই কথা বললেন বড় ভাই নাফিস ইকবাল।

‘তামিমের জন্য আব্বা এক–দুই দিনের কিছু ম্যাচ আয়োজন করতেন। ছোটখাটো টুর্নামেন্ট করতেন। সেখানে ছোট–বড় মিলে খেলার ব্যবস্থা থাকত। তামিম ছিল আব্বার প্রাণ। আব্বার সঙ্গে ওর খুব খাতির ছিল। খাওয়াদাওয়া, খেলাধুলা এমনকি পেট্রোল পাম্পে যাওয়ার সময়ও আব্বা তামিমকে সঙ্গে নিয়ে যেতেন।’

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ওপেনার তামিম ইকবালের সঙ্গে তাঁর প্রয়াত বাবা ইকবাল খানের কথা বলতে গিয়ে নাফিস ইকবাল ফিরে গেলেন ২০ বছর আগে। তামিমের অগ্রজ ও বাংলাদেশ দলের সাবেক ক্রিকেটার নাফিস ইকবাল খান তামিমের মতো বাবাকে অতটা কাছে পাননি। কারণ, নাফিসের ছোটবেলার কিছু সময় কেটেছে ঢাকায় নানার বাড়িতে।

৯ জুন চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ির বিখ্যাত খানবাড়িতে বসে বাবার স্মৃতিচারণ করে গেলেন নাফিস ইকবাল। তিন ভাইবোনের মধ্যে নাফিস সবার বড়। নাফিসের চেয়ে পাঁচ বছরের ছোট তামিম। সবার ছোট বোন। কিন্তু তিনজনের মধ্যে তামিমের সঙ্গেই ক্রীড়াবিদ বাবা ইকবাল খানের সবচেয়ে বেশি সখ্য ছিল।

নাফিস ইকবাল বলেন, ‘আমি ছোটবেলায় ঢাকায় পড়তাম। তাই চট্টগ্রামে আব্বা ছিলেন তামিমের সার্বক্ষণিক সঙ্গী। তামিমকে ক্রিকেটার হিসেবে তৈরি করার পেছনে আব্বার অনেক অবদান। খেলাধুলা শেষে বিকেলে আগ্রাবাদের সারাহ রেস্তোরাঁয় পরোটা–মাংস খেতে চলে যেতেন আব্বা। সঙ্গে থাকত তামিম। এ ছাড়া তামিমের যত বায়না ছিল আব্বার কাছেই। এমনও সময় গেছে, আম্মা ঢাকায় চলে যাচ্ছেন, তামিম কিন্তু চট্টগ্রামে আব্বার সঙ্গে থেকে গেছে।’

ইকবাল খান ছিলেন ফুটবলার। একসময় ক্রিকেটও খেলেছেন। ২০০০ সালে মারা যান তিনি। মারা যাওয়ার সময়ও চট্টগ্রামে ছিলেন কেবল তামিম। মা নুসরাত ইকবাল ও ছোট বোন ছিলেন ঢাকায়। নাফিস ছিলেন যশোরে। একই কথা তামিম ইকবালও তাঁর সাক্ষাৎকারে বলেছেন।

বাবার মারা যাওয়ার সময়ের স্মৃতিও মনে করলেন নাফিস, ‘একটা স্মৃতি খুব মনে পড়ছে আমার। তামিম সব সময় ঘুমুতো আব্বার বুকের ওপর। খালি গায়ে আব্বা শুয়ে থাকতেন। দেখা যেত তামিম আব্বার বুকের ওপর চিত হয়ে শুয়ে আছে। এটা এক দিনের চিত্র নয়। অনেক সময় এই দৃশ্য দেখা যেত। আব্বার মৃত্যুর সময়ও তামিমই ছিল পাশে। তখন সে অনেক ছোট।’

ক্রীড়াবিদ ইকবাল খানের কবর কাজীর দেউড়ির বাড়ির পাশেই। যখনই চট্টগ্রাম আসেন তামিম ইকবাল, ছুটে যান বাবার কবরের পাশে। কবর জিয়ারত করেন। ফেরার সময়ও কবর জিয়ারত করেন। এটাই তামিমের রুটিন বলে জানালেন নাফিস, ‘তামিম আজ জাতীয় দলে খেলছে। আমিও খেলেছি। কেবল আব্বা দেখে যেতে পারেননি। এটাই আমাদের আফসোস।’