Thank you for trying Sticky AMP!!

ক্যানসারে আত্মবিশ্বাস জোগাবে যেসব বই

হঠাৎ ছন্দপতন। অসুস্থতার নানা উপসর্গ, পরীক্ষা-নিরীক্ষার হ্যাপা পেরিয়ে হাতে যখন রিপোর্ট আসে, তখন যেন গোটা আকাশই মাথায় ভেঙে পড়ে—ক্যানসার এমনই এক কঠিন অসুখ। তবে এ তো আর একমুহূর্তে নিঃশেষ হয়ে যাওয়া নয়, রোগের গতিপ্রকৃতি অনুযায়ী দেহে দেখা দিতে থাকে নানান বিরূপ প্রভাব। ক্যানসারের চিকিৎসা ব্যয়সাধ্য, চিকিৎসাপদ্ধতিও দেহ-মনের জন্য কষ্টকর। অস্ত্রোপচার, কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি—কত রকম ঝক্কি। রীতিমতো এক যুদ্ধ, সেই যুদ্ধের অভিজ্ঞতা নিয়ে অনেকেই পরে বই লিখেছেন। আত্মজীবনী ছাড়াও রয়েছে উপন্যাস। অন্য ক্যানসার রোগীদের অনুপ্রেরণার উৎস হয়েছে এসব বই। কারণ, এই চিকিৎসায় মনের জোরটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। ক্যানসারের রোগী, রোগীর স্বজন কিংবা পড়ুয়া, যে কেউই এই বইগুলো পড়তে পারেন।

‘ক্যানসারের সাথে বসবাস’

ক্যানসারের বিরুদ্ধেও ভিন্ন আরেকটা লড়াই লড়েছেন শহীদজননী জাহানারা ইমাম। সেই লড়াইয়ের গল্প নিয়েই এই বই। ঘাতক ব্যাধি যখন সঙ্গী হয়ে ওঠে, তখন কতটা সাহস নিয়ে একজন মানুষ সেই জীবনকে যাপন করতে পারেন, তার বাস্তব ছবি এ বই। কেবল একবার নয়, ১০ বছরে দুই দফায় ক্যানসারের সঙ্গে লড়ার দিনগুলোর সাবলীল বর্ণনা আছে।

‘হোয়েন ব্রিদ বিকামস এয়ার’

নিউরোসার্জন হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন পল কালানিথি। কিন্তু পুরোদস্তুর নিউরোসার্জন হিসেবে কাজ শুরুর আগে মাত্র ৩৭ বছর বয়সে মারা যান তিনি। পিঠের ব্যথাকে সাধারণ কিছু ভেবে পাত্তা দেননি। কিন্তু সেটাই ছিল ক্যানসারের প্রাথমিক উপসর্গ। সোজাসাপটা ভাষায় নিজের জীবনের দুঃসহ সময়ের কথা তুলে ধরেছেন পল কালানিথি। বইটি পড়তে গিয়ে আপনার কখনো মনে হবে না ‘আহা রে, বেচারা!’ বরং বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে এমনভাবে ঘটনাগুলোর বর্ণনা করেছেন যে আপনিও অবলীলায় ঢুকে পড়বেন বইয়ের পাতায়। যে কাউকে লড়াইয়ের সাহস দেবে এ বই।

‘ক্যানসার, ইউ পিকড দ্য রং গার্ল’

জানেন তো, হাসি দিয়ে ভয়কে জয় করা যায়। এই বইয়ে শর্মিষ্ঠা মুখার্জির রসবোধের (সেন্স অব হিউমার) পরিচয় পাবেন। আবেগপ্রবণ দিকগুলোর সঙ্গে কঠিন সত্যের দারুণ সমন্বয়ের উপায় জানতে চাইলে বইটি পড়তে হবে। 

‘দ্য রেইনবো ফিলিংস অব ক্যানসার’

আপনি হয়তো ভাবতে পারেন, ক্যানসারের সঙ্গে রংধনুর রঙের কী সম্পর্ক! কিন্তু বইয়ের জন্য এ নামই বেছে নিয়েছেন ক্যারি মার্টিন। তাঁর বয়স যখন সাত বছর, তখন তাঁর মায়ের ক্যানসার ধরা পড়ে। ওই বয়সে অমনভাবে ক্যানসারের সঙ্গে পরিচয়, নিদারুণ পীড়াদায়ক একটি বিষয়! মায়ের এমন অসুস্থতা তাঁর মনোজগতে কী প্রভাব ফেলেছিল, তাঁর দুনিয়াটা কোন রঙে রাঙানো ছিল—সবটাই পাবেন অনবদ্য এ বইতে।

‘দ্য ফল্ট ইন আওয়ার স্টারস’

থাইরয়েড ক্যানসারের চতুর্থ স্টেজে আছে হ্যাজেল। ফুসফুসেও ছড়িয়ে পড়েছে  ক্যানসার। এদিকে অস্টিওসারকোমায় পা হারিয়েছে তাঁর প্রেমিক অগাস্টাস। এটিও একধরনের ক্যানসার। জন গ্রিনের লেখা এই উপন্যাসে দুঃখ, আনন্দ, প্রেম—সবই রয়েছে। রোগ নিয়ে বেঁচে থাকা মানুষের জীবনের অনুভূতিগুলো আপনাকেও স্পর্শ করবে। খানিকটা সময় নিজের যন্ত্রণাও ভুলিয়ে দেবে এ বই।

‘ইউ আর নট অ্যালোন’

কৈশোরেই ক্যানসারে আক্রান্ত বাবাকে হারান ক্যারিয়াড লয়েড। সে সময় থেকেই এই কিশোরীর সঙ্গী হয় দুঃখ। পরে নিজের জীবনের দুঃখ আর শিক্ষাকে সামনে নিয়ে আসেন তিনি। দুঃখের সাগরে পথ হারাতে বসা যে কারও জন্যই বইটা নতুন ভাবনার জন্ম দেবে।

‘ক্যানসার ভিক্সেন’

কার্টুনিস্ট মারিসা আকোসেলা মারচেট্টো এ বই লিখেছেন নিজের জীবন থেকেই। ক্যানসারে আক্রান্ত এক মেয়ের মা কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে কথোপকথনকে এমনভাবে ছবিতে ছবিতে ফুটিয়ে তুলেছেন যে দুঃখের মধ্যেও আপনি হাসবেন। ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর আর্থিক সংকটের বাস্তবতাও তুলে ধরেছেন তিনি।