বই দুটি ভাইবোন
ঢাকার বইমেলা। দুটি বই উড়ে গেল আকাশে। পাখির মতো উড়ছে। আপন বলল, ‘আপু, দেখ দুটি বই উড়ে যাচ্ছে।’ আপু মোহনা হাসে। ‘ধ্যাত বোকা, বই কি উড়তে পারে নাকি?’
আপন চুপ করে থাকে। আকাশের দিকে তাকায়। সত্যি দুটি বই উড়ে যাচ্ছে।
একটি বইয়ের নাম ফুলের গন্ধ, আরেকটা বইয়ের নাম পাখির কথা।
ওরা দুই ভাইবোন। ফুলের গন্ধ বোন। আর পাখির কথা ভাই। ওরা যাচ্ছে অনেক দূর। অনেক দূরের জেলা, জয়পুরহাট।
দুই ভাইবোন অনেক জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। যারা পড়তে পারে না। যারা চোখে দেখে না। দুই ভাইবোন ছুটে যায় তাদের কাছে। বই পড়ে শোনায়।
লালমনিরহাট পৌঁছে যায় তারা। মেয়েটির নাম আনিকা। চোখে দেখতে পায় না। পড়তে পারে না।
ফুলের গন্ধ আর পাখির কথা বলল, ‘আমরা এসে গেছি। এসে গেছি।’
‘তোমরা কারা?’
‘আমরা ভাইবোন। দুটি বই। আমরা এসেছি ঢাকা থেকে। বইমেলা থেকে। হাজার হাজার বই সেখানে। আমরা শুনেছি তুমি বই পছন্দ কর। আমরা কি তোমাকে আমাদের গল্প শোনাতে পারি?’
আনিকা বলল, ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ। তাড়াতাড়ি শোনাও। আমার দেরি সইছে না।’
‘কিসের গল্প শুনবে, রাজা-রানির? ভূতের? না জাদুর? না এলিয়েনের?’
আনিকা বলল, ‘এলিয়েনের।’
ফুলের গন্ধ বলল, ‘আমি শোনাই।’ পাখির কথা বলল, ‘আমি শোনাই।’ কে আগে শোনাবে সেই নিয়ে ওদের মধ্যে সে কি ঝগড়া।
আনিকা বলল, ‘তোমরা ঝগড়া করো। আমি যাই।’
‘না, না। আমরা ঝগড়া বন্ধ করছি।’ পাখির কথা বলল।
ফুলের গন্ধ বলল, ‘এক ছিল এলিয়েন। দূরের গ্রহ থেকে এসেছে।’
‘আমি দেখতে পাচ্ছি। এলিয়েনটা, দেখতে খুব সুন্দর।’ আনিকা বলল।
এলিয়েনটা বলল, ‘পৃথিবীটা কী সুন্দর। আমি এখানে থেকে যাব।’
আনিকা বলল, ‘তাই নাকি? তাহলে ওকে বলে দাও, ও যেন আমাদের বাড়িতে থাকে।’
ফুলের গন্ধ বলল, ‘ঠিক আছে, বলে দেব।’
‘এলিয়েনটার নাম ইটাবুলা।’ পাখির কথা বলে। আনিকা হেসেই খুন। বলে, ‘কেমন নাম রে বাবা।’
গল্পটা শেষ করে ফুলের গন্ধ বলে, ‘আমরা যাই। আমরা অন্য আরেক বাড়িতে যাব। টুটুল নামে একটি ছেলে আছে। ও চোখে দেখতে পায় না। ওকেও গল্প শোনাতে হবে। যাই।’
আনিকা বলল, ‘আবার কবে আসবে?’
পাখির কথা বলল, ‘খুব তাড়াতাড়ি আসব।’ ভাইবোন বই দুটি আকাশে উড়ে গেল। আনিকার মন খারাপ হয়ে যায়। হঠাৎ সে টের পেল, তার পাশে কে যেন বসে নড়াচড়া করছে।
‘এই কে তুমি?’ আনিকা জানতে চায়।
‘আমি ইটাবুলা, এলিয়েন।’
আনিকা তার সারা গায়ে হাত বুলিয়ে দিল। বলল, ‘আমার মনে হয় তুমি দেখতে খুব সুন্দর।’
ইটাবুলা বলল, ‘না, না। আমার থেকে তুমি হাজার গুণ সুন্দর।’
আনিকা হাসল। বলল, ‘কিন্তু আমি তো আমাকেই দেখতে পাই না!’
‘সে জন্যই তো আমি এসেছি। তোমার চোখ যাতে ভালো হয়ে যায়।’ ইটাবুলা বলে।
আনিকা চিৎকার করে বলল, ‘আমি দেখতে পাচ্ছি। আমি দেখতে পাচ্ছি। ওই তো পাখিটা। গাছের ডালে বসে লেজ নাড়ছে।’
একটু দূরে দাঁড়িয়ে ছিল ইটাবুলা। সে-ও ভীষণ খুশি। আনিকা দৌড়ে গিয়ে তার গলা জড়িয়ে ধরল।
বলল, ‘তুমি কোথাও যাবে না। আজ থেকে আমাদের বাড়িতেই থাকবে।’
আরও পড়ুন
-
মানুষের হাত-পা কেটে নিজেই ‘অস্ত্রোপচার’ করতেন মিল্টন সমাদ্দার: ডিবি
-
দ্বিতীয় টি–টোয়েন্টি: টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, অপরিবর্তিত একাদশ
-
ট্রেনের এলোমেলো সূচি আজও পুরো স্বাভাবিক হয়নি, দেরিতে যাত্রা রংপুরে
-
শুক্রবার ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়নি, ভুল করে ফেসবুকে পোস্ট হয়েছিল: মন্ত্রণালয়
-
ইজারার পুরো টাকা না দিয়েই গাবতলী পশুর হাট দখল, হাসিল আদায় ডিপজলের