Thank you for trying Sticky AMP!!

রাজা আর টুনটুনিরা

ঘড়িতে তখন ঠিক সন্ধ্যা সাতটা। আর ক্যালেন্ডারে? ২৬ এপ্রিল ২০১৮। তাড়াহুড়ো করে ছায়ানট মিলনায়তনে ঢুকতেই কানে এল ছড়াগানের মন ভালো করে দেওয়া সুর। এক্সেল একাডেমির প্লে গ্রুপের ৬২ জন ছেলেমেয়ে অংশ নিয়েছিল সেদিনের অনুষ্ঠানে।

মম চিত্তে নিতি নৃত্যে...গান আর ঘুঙুরের তালে পুরো মিলনায়তন মুখর হলো শুরুতেই। এরপর সাদা টি-শার্ট পরা নতুন একটি দলকে দেখা গেল মঞ্চে। তাদের প্রত্যেকের টি-শার্টের মাঝখানে একটি করে বিশাল বৃত্ত এবং প্রতিটি বৃত্তের রংই আলাদা। সাতপাঁচ ভেবে যখন হরেক রঙের এই বাহারের কোনো কিনারা করতে পারছি না, তখন ‘রেড স্ট্যান্ড আপ, ইয়েলো সিট ডাউন’ ছড়ার তালে তালে নানা রঙের পার্থক্য তারা কিন্তু একদম ঠিকঠাকভাবে বুঝিয়ে দিল। শুধু রং চিনিয়েই ক্ষান্ত দেয়নি এক্সেল একাডেমির খুদে শিল্পীর দল। আরও তিনটি ছড়ার ছন্দে ছন্দে তারা একে একে জানিয়েছে সপ্তাহের বারগুলোর নাম এবং বৃত্ত, চতুর্ভুজ ও ত্রিভুজের পার্থক্য।

তারপর...মঞ্চটি হঠাৎই যেন রাজপুরী হয়ে গেল! দশ-দশ জন খুদে মহারাজ এসে হাজির সেখানে। লাল-হলুদ-সবুজ পাগড়ি পরনে এই রাজাদের ভিড়ে কে যে আসল রাজা, সেটা বোঝাই মুশকিল। তখন রবীন্দ্রনাথের সুরে সুরে তারা নিজেরাই জানিয়ে দিল, তাদের রাজত্বে সবাই রাজা। রাজারা বিদায় নিতেই মঞ্চে টুনটুনি পাখির বেশে এল তিনজনের একটি দল। কিন্তু বেগুন পাতায় বসে নাচতে গিয়ে টুনটুনিরা পড়ল এক বিপদে। কাঁটার খোঁচায় এক ছোট্ট টুনটুনির ফোড়া হলো। নাপিতের কাছে গিয়ে ফোড়াটা কাটাতে চাইলেও কতশত ঝামেলা আর অজুহাত। শেষ পর্যন্ত বুদ্ধিমান টুনটুনি কিন্তু ঠিকই ফোড়াটা কাটিয়ে নিল। উপেন্দ্রকিশোর রায়ের টুনটুনি ও নাপিতের গল্প যাদের পড়া হয়নি, তাদের বলে দিই, এই গল্পটা অবলম্বনেই নাটকটি উপস্থাপন করেছে তেরো জনের একটি দল। ছোট্ট টুনটুনির গলায় ‘নাপিতদা, নাপিতদা আমার ফোড়াটা কাটিয়ে দাও না’ শুনতে শুনতে ঠিক যেন গল্পের বইয়ের পাতায় হারিয়ে গিয়েছিল দর্শক। সবশেষে ‘স্নোফ্লেকস’ ছড়ার সঙ্গে সঙ্গে একরাশ শুভ্রতার বার্তা ছড়িয়ে ‘প্লেগ্রুপ শো’ নামের এই চমৎকার আয়োজনটি শেষ হলো।