Thank you for trying Sticky AMP!!

কবির ছবি

‘মাই কফি মগ’, শিল্পী: শামসেত তাবরেজী

 ‘মুহূর্তমা’ আসলে কী? উত্তর হলো, মুহূর্তের অনুভূতি। একই নামে একটি কাব্যগ্রন্থ আছে শামসেত তাবরেজীর। এবার তিনি একই শিরোনামে ছবির প্রদর্শনীও করলেন। কবি শব্দে যে রূপ আঁকেন, সে রূপ রঙে আঁকলে তার স্বাদ হয় কেমন, তা বোঝা যাবে দ্বীপ গ্যালারিতে চলমান তাবরেজীর প্রদর্শনীতে গেলে। আশির দশকের সুকবিদের একজন শামসেত তাবরেজী। হঠাৎ কী খেয়াল হলো, আঁকতে শুরু করলেন ছবি! কবিতার মতো তবরেজীর ছবিও যে শিল্পবিভায় উজ্জ্বল, তা কিন্তু ছবিতে নজর রাখলেই বোঝা যায়। এ প্রদর্শনীতে মুহূর্তের নানাবিধ অভিব্যক্তি তিনি এবার ফুটিয়ে তুলেছেন শব্দরূপ থেকে রঙের রূপে।

তাঁর কাজগুলোতে পাওয়া যায় জ্যামিতিক ফর্ম বিন্যাস। তবে কোনো কোনো কাজে বিক্ষিপ্তভাবে রং লেপনে একধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু বিমূর্ত ধারার এই ছবিগুলো সময়ের অস্থিরতার কথাও তো প্রকাশ করে। বিমূর্ত চিত্রের বড় সুবিধা হলো, শিল্পী তাঁর চেতনা, চিন্তন ও কল্পনার রূপের ব্যাখ্যা সুবিধামতো দাঁড় করাতে পারেন। দর্শকও তা পারেন অবশ্য। এ প্রদর্শনীতে তাবরেজী তাঁর ছবির বিষয়চিন্তা, কল্পনা ও বক্তব্য নিজে যেমন ব্যাখ্যা করেছেন, তেমনি কখনো আবার দর্শকের ওপরে ছেড়েও দিয়েছেন ব্যাখ্যার ভার। কোনো কোনো ছবি—যেমন ‘টারনিস টাইম’ বা ‘ডগইয়াস’—এগুলোতে পাওয়া যায় তাবরেজীর জীবনের আখ্যান। গত শতকের আশি–নব্বই দশকের  রাজনৈতিক অস্থিরতা, স্বৈরশাসনের কালো অধ্যায়—এসব প্রসঙ্গ বিভিন্নভাবে প্রকাশিত হয়েছে এই শিল্পীর ছবিতে। এমনকি বর্তমান সময়কেও তিনি ‘অন্ধকার’ হিসেবে চিত্রিত করতে চান। ফলে কালো রং প্রকট হয়ে ওঠে এই কবি–শিল্পীর ক্যানভাসে। আবার ‘টিরানিস’ অর্থাৎ কবি তাঁর ছবির ক্ষেত্রে ‘কাল’ ও ‘কালো’ বানানভেদের ক্লেশ এড়িয়ে এক অর্থে দেখার পক্ষপাতি। মোদ্দাকথা, শামসেত তাবরেজীর ছবি আমাদের মনে ভাবনার উদ্রেক করে। সব চিত্রজমিনে ঘুরপাক খায় আমাদের চোখ।

কিন্তু তাঁর ছবির সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে বললে বলতে হবে, অনেক ছবিতেই ‘ফোকাস পয়েন্ট’ অনুপস্থিত। এ ছাড়া প্রত্যেক কাজে প্রায় একই ধরনের রং ব্যবহার—এগুলো কি স্বল্প শব্দের কবিতা লেখার মতো ব্যাপার হয়ে গেল কিছুটা?

২৭ জুলাই শুরু হওয়া প্রদর্শনীটি শেষ হবে ২২ আগস্ট।