Thank you for trying Sticky AMP!!

কাজে স্বচ্ছতা না থাকায় এ পরিণতি

পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান নিহত হওয়ার পর কক্সবাজারের পরিস্থিতি এখন থমথমে। মাদকবিরোধী অভিযানের নামে এত দিন যেভাবে ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটত, তাতে এখানকার মানুষের উদ্বেগ থাকলেও কেউ ভয়ে কিছু বলতেন না। এখন প্রকাশ্যে এর সমালোচনা করছেন, ক্রসফায়ার বন্ধ করার কথা বলছেন। এ পরিস্থিতিতে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন কক্সবাজার চেম্বারের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী । সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কামরুল হাসান ও আব্দুল কুদ্দুস।

আবু মোর্শেদ চৌধুরী
প্রশ্ন

মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান নিহত হওয়ার পর কক্সবাজারের পরিস্থিতিকে কীভাবে দেখছেন।

উত্তর: যেকোনো হত্যাকাণ্ড খুবই দুঃখজনক। তার নিন্দা করার ভাষা নেই। কিন্তু এর পরে যা হয়েছে, তাতে মানুষ খুশি। মানুষের না বলা কথা, ক্ষোভ এখন তারা প্রকাশ করতে পারছে। এত দিন পুলিশের ভয়ে মানুষ কথা বলতে পারত না। তারা এখন মুখ খুলছে। মাদক নিয়ন্ত্রণের নামে সরকারের কোটি কোটি টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু মানুষ জানতে পারেনি মাদক নির্মূলের নামে এখানে কী হয়েছে।

প্রশ্ন

এ হত্যাকাণ্ডের পর বাহিনীগুলোর ভেতরে সমন্বয়হীতা কি আপনার চোখে পড়ছে?

উত্তর: আমার মনে হচ্ছে, এখানে বিশ্বাস ও অবিশ্বাসের একটা জায়গা তৈরি হয়ে গেছে। আসলে সবার কাজে প্রথম থেকে যদি স্বচ্ছতা থাকত, তাহলে আজকের এ পরিস্থিতি দেখতে হতো না। এটা ভুলে গেলে চলবে না যে দুটি সংস্থা রাষ্ট্র ও সাধারণ মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মুষ্টিমেয় কিছু লোককে বাঁচাতে গিয়ে যদি প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়, তাহলে খুবই খারাপ হবে। এটা কারও প্রত্যাশা হতে পারে না।

প্রশ্ন

আপনার দৃষ্টিতে এ মুহূর্তে জরুরি করণীয় কী।

উত্তর: সব খাতেই বেশির ভাগ লোকই ভালো। অল্প কিছু লোক অপকর্ম করে। যারা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত, দেশের স্বার্থে এদের আইনের আওতায় আনতে হবে। কাউকে অন্যায়ভাবে রক্ষা করা যাবে না।

প্রশ্ন

কক্সবাজারের মানুষ আপনি, জেলার ব্যবসায়ীদের নেতাও আপনি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, কক্সবাজার থেকে মাদক বন্ধ হয় না কেন?

উত্তর: আসলে মাদকের মূল জায়গায় আমরা কখনো হাত দিইনি। শুধু বাহক নিয়েই মাতামাতি করেছি। এ ধরনের একটি কারবারের সঙ্গে শুধু বাহক আর বিক্রেতাই নয়, আরও অনেক কিছু আছে। আমরা সেদিকে কখনো নজর দিইনি। বাংলাদেশে আগে লাখ লাখ ফেনসিডিল চলত, এখন চলে না কেন? নিশ্চয় এর বড় কারণ আছে। দেখুন, ইয়াবা আসে মিয়ানমার থেকে। এটা বন্ধ করতে হলে মিয়ানমারের সঙ্গে কথা বলতে হবে।

প্রশ্ন

মাদক নির্মূলে আপনার পরামর্শ কী।

উত্তর: আমার প্রস্তাব হলো একটি যৌথ দল গঠন করা। সব বাহিনীকে নিয়ে যদি একটি দল করা যেত, তাহলে সবাই একসঙ্গে কাজ করতে পারত। এখন যে যার মতো কাজ করে। এ ধরনের দল থাকলে সিনহার মতো কাউকে প্রাণ দিতে হতো না।

প্রশ্ন

রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো থেকে কীভাবে ইয়াবা ছড়াচ্ছে?

উত্তর: দেখুন, তারা হলো বাহক। এ দেশে তাদের কোনো নেটওয়ার্ক নেই। তারা শুধু ইয়াবা এনে কারও হাতে তুলে দিচ্ছে। তাদের কেউ না কেউ প্রশ্রয় দিচ্ছে। তবে এটা সত্য যে এত মানুষকে দিনরাত শুধু শুধু বসিয়ে রাখলে তারা কী করবে? সুযোগ বুঝে তারা নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়বে। সারা দুনিয়ার ইতিহাস সে কথাই বলে।

প্রশ্ন

কক্সবাজারকে বাসযোগ্য করতে হলে কী করা দরকার বলে আপনি মনে করেন।

উত্তর: এটা সীমান্ত ও পর্যটন এলাকা। এ ধরনের এলাকায় অপরাধপ্রবণতা বেশি থাকবেই। এখানে খণ্ড খণ্ড উন্নয়ন করে কিছুই হবে না। উন্নয়ন করতে হবে সমন্বিতভাবে। তাহলেই কক্সবাজারের চেহারা পাল্টে যাবে।