Thank you for trying Sticky AMP!!

ব্যবসায়ীর জিডি

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের বনানীর বাসার ফোন নম্বর থেকে এক ব্যবসায়ীকে হুমকি দেওয়ার ঘটনা অত্যন্ত গুরুতর ও স্পর্শকাতর অভিযোগ। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়ার আগেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছ থেকে ব্যাখ্যা আসা প্রয়োজন। এর সুষ্ঠু কোনো ব্যাখ্যা না পাওয়া গেলে সরকারের ভাবমূর্তির জন্য তা খুবই ক্ষতিকর হবে।

জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য মন্ত্রীর বাড়িতে কারও নালিশ দিতে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। এমনকি সম্ভব হলে কারও পক্ষে তা মীমাংসা করে দেওয়াও দোষণীয় নয়। তবে মন্ত্রীর শ্যালকের বক্তব্য সত্য হলে ব্যবসায়ীর জিডি করার কথা নয়। কারণ, অভিযোগকারী ব্যবসায়ীর বিবরণ থেকে ধারণা করা যায়, তাঁদের মধ্যে শত্রুতার জের নেই। মন্ত্রীর শ্যালকের দাবি, তিনি উভয় পক্ষকে শুনে মীমাংসা করে দিয়েছিলেন। কিন্তু জিডিতে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আপাতদৃষ্টিতে বিশ্বাসযোগ্য বলেই প্রতীয়মান হয়।

অভিযোগকারী নির্দিষ্টভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা তাঁর শ্যালকের নাম-পরিচয় উল্লেখ করেননি। তাঁর এই আশঙ্কা স্বাভাবিক যে সে ক্ষেত্রে তিনি জিডি করতে পারতেন না। এটাও দেশের আইনের শাসনের প্রকৃত অবস্থা অনুভব করার জন্য একটি সূচক বটে। আমরা বুঝতে পারি, সাধারণ মানুষ ভয় পেয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নাম-ঠিকানা পর্যন্ত গোপন রাখছেন। মন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে মন্ত্রীর বাসায় বসে শ্যালকের সামাজিক দায়িত্ব পালনের দাবি নিশ্চয় প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। থানার ওসি স্বীকার করেছেন যে এই বিষয়ে আর অগ্রসর না হতে মন্ত্রীর বাসা থেকে বলা হয়েছে। আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই অভিযোগের গভীরতা ও ব্যাপকতা আশা করি উপলব্ধি করতে পারবেন। এটা এতটাই স্পর্শকাতর যে বিষয়টি সম্পর্কে তাঁর তরফের একটি ব্যাখ্যা অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে। এই বিষয়ে অহেতুক কালক্ষেপণ করা হলে তা জনমনে সন্দেহ-সংশয় আরও বাড়িয়ে দেবে। প্রশ্ন জাগবে, এ ঘটনা কেবলই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা কি না।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় যেতে কথিতমতে ব্যবসায়ীর অপারগতা প্রকাশ করার পরে তাঁকে গালিগালাজ ও হুমকি দেওয়া এবং জোর করে একটি স্ট্যাম্পে তাঁর সই রেখে দেওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ। আমাদের সরকারের প্রভাবশালীরা কথায় কথায় আইনের শাসনের কথা বলেন। কিন্তু দেশে কি নাজুক অবস্থা বিরাজ করলে ভুক্তভোগী মানুষ জমির বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য থানা-আদালত বাদ দিয়ে খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় যেতে পারেন, এ ঘটনা তা আমাদের আরেকবার স্মরণ করিয়ে দেয়।