রাসায়নিকের দোকানে আগুন
রাসায়নিক কারখানা সরানোর দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভের ঘটনা আবাসিক এলাকায় শিল্প স্থাপন নিয়ে সমস্যাকে নতুন করে সামনে এনেছে।
মৃত্যুর ধরন যা-ই হোক, সরকারি খাতায় সেগুলো অপঘাত বা দুর্ঘটনা বলে চালানো হলেও এর সবই কর্তৃপক্ষের অবহেলাজনিত মৃত্যু। রাজধানীর তেজতুরী বাজারে রাসায়নিকের দোকানে আগুন লাগার ঘটনায় এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চারে। আবাসিক এলাকায় বিপজ্জনক কারখানা কিংবা দাহ্য পদার্থপূর্ণ দোকান বা গুদাম কোনোভাবেই থাকতে পারে না। পুরান ঢাকার নিমতলীর মর্মান্তিক ঘটনার পরও সরকার এ ব্যাপারে প্রায় কিছুই করেনি।
যে দোকানে আগুন লেগেছে, সেটিতে পোশাকশিল্পে ব্যবহার্য নানা রকম রাসায়নিক বিক্রি হতো। কোনো কারণে আগুনের সৃষ্টি হলে এ ধরনের দাহ্য রাসায়নিক পদার্থভর্তি ড্রাম বিস্ফোরিত হয়ে দোকানের মালিক-ব্যবস্থাপক-কর্মচারীসহ পথচারীরা পর্যন্ত অগ্নিদগ্ধ হন। স্পেকট্রাম গার্মেন্টস ধস, তাজরীন ফ্যাশনসের আগুন, রানা প্লাজা ধস থেকে শুরু করে পুরান ঢাকার নিমতলীর আগুনের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা কয়েক হাজার ছাড়িয়ে গেছে। একের পর এক ঘটনা ঘটছে, অথচ সরকারি সংস্থাগুলোর জবাবদিহি নেই, দায় নেই, আছে বরং দায়মুক্তির অবাধ সুযোগ।
পরিবেশের জন্য বিপজ্জনক কলকারখানা ঢাকা থেকে সরিয়ে নেওয়ার উচ্চ আদালতের নির্দেশনাও রয়েছে। আবাসিক এলাকায় কারখানা বা রাসায়নিকের গুদাম তৈরির বিরুদ্ধে নীতিমালাও রয়েছে। নিমতলীর আগুনের পর সরকারের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিরাও এগুলো কার্যকর করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা কেউই কথা রাখেননি!
জনবসতির মধ্যে কলকারখানা ও বাণিজ্যিক কারবার ঢুকে যাওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের মতো বড় নগরের অন্যতম সমস্যা। কেবল পরিবেশের ক্ষতিই নয়, এসব কারখানা জীবনেরও ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। এর সমাধানের দায়িত্ব মুখ্যত পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের। প্রতিকারের আইন যুগোপযোগী করার দায়িত্ব আইন মন্ত্রণালয়ের। এসব প্রস্তুতি থাকুক বা না থাকুক, প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা যদি মানুষের দুরবস্থা দেখে এগিয়ে না আসেন, তাহলে কিসের জন্য জনগণের করের অর্থে তাঁদের প্রতিপালন করা হচ্ছে, তা জানা দরকার। পরিকল্পিত আবাসন, শিল্পায়ন—কোনো কিছুই যে দেশে করা হয় না, সে দেশে মানুষের জীবন এ রকম ঝুঁকির মুখেই থাকবে। এসব অপমৃত্যুকে তাই দুর্ঘটনা না বলে উদাসীনতার কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড মৃত্যুই বলতে হবে।
আরও পড়ুন
-
সকাল ৯টার ট্রেন ছাড়েনি বেলা ২টায়ও, স্টেশনেই ঘুমিয়ে পড়েছেন ক্লান্ত মা-মেয়ে
-
পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল ভারত
-
সঠিক তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন করলে পূর্ণ সহায়তা দেওয়া হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
-
ঝড়বৃষ্টি হতে পারে ৬ দিন ধরে, বলছে আবহাওয়া অফিস
-
ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ: ভয়াবহ অভিজ্ঞতা জানালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা