Thank you for trying Sticky AMP!!

সমাজতন্ত্রের ভবিষ্যৎ কী?

১৯৯১ সালে ভেঙে গিয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। সেই থেকে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার দুর্দিনের শুরু। সোভিয়েত ব্লকের পতনের পর থেকে হাতে গোনা কয়েকটি দেশে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু আছে। অবশ্য মুক্তবাজার অর্থনীতির সূতিকাগার পশ্চিমা বিশ্বে ইদানীং সমাজতন্ত্র নতুন রূপে আবির্ভূত হতে শুরু করেছে। তবে কি আবার ফিরতে চলেছে সমাজতন্ত্রের সুদিন?

ওপরের প্রশ্নটি উঠছে, কারণ বর্তমানে পশ্চিমা বিশ্বে সমাজতন্ত্রের ঢেউ উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ এই পশ্চিমা বিশ্বই একসময় সমাজতন্ত্রের প্রবল বিরোধী ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরপরই সমাজতন্ত্রী ও পুঁজিবাদী—এই দুই ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিল পুরো বিশ্ব। শুরু হয়েছিল স্নায়ুযুদ্ধ। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে একদিকে সমাজতন্ত্রের সমর্থনে নতুন নতুন দেশ সোভিয়েত ব্লকে যোগ দিয়েছিল, অন্যদিকে পুঁজিবাদও একেবারে পিছিয়ে ছিল না। এককথায় বলা যায়, দুটি সম্পূর্ণ বিপরীত ঘরানার অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে সেই সময় একটি বিরোধ দেখা দিয়েছিল। দুই পক্ষই নিজেদের ব্যবস্থাকেই মুক্তির একমাত্র পথ বলে মনে করত। ১৯৯১ সালের পর সেই স্নায়ুযুদ্ধের কার্যত অবসান হয়। তখন থেকে বিশ্বে পুঁজিবাদী মুক্তবাজার অর্থনীতির একাধিপত্য।

সেই একাধিপত্যের ক্ষতিকর প্রভাব এখন পড়তে শুরু করেছে। খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে সমাজতন্ত্রীরা। কিন্তু কেন মার্কিন মুলুকে সমাজতন্ত্রের উত্থান হচ্ছে? উত্তর হলো বৈষম্য। সমাজতন্ত্রের মূল উদ্দেশ্যই হলো মানুষে মানুষে বৈষম্য দূর করে সমতা প্রতিষ্ঠিত করা। এখন আমেরিকানরা তাদের সমাজে এত বেশি বৈষম্যের মুখোমুখি হচ্ছে যে বাধ্য হয়েই সমাজতন্ত্রের দিকে ঝুঁকছে তারা। আর এই বৈষম্য সৃষ্টি করছে পুঁজিবাদী মুক্তবাজার অর্থনীতি। এই বক্তব্যের পক্ষে একটি উপাত্তই যথেষ্ট। গত ৪০ বছরে আমেরিকায় আয়ের দিক থেকে শীর্ষ ১ শতাংশ মার্কিনের গড় আয় বেড়েছে প্রায় ২৪২ শতাংশ। মধ্য আয়ের মানুষের তুলনায় এই হার ছয় গুণ বেশি!

গ্যালাপের করা সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী মার্কিনদের মধ্যে সমাজতন্ত্রের প্রতি সহানুভূতি ব্যাপক হারে বেড়েছে। এই বয়সসীমার প্রায় ৫১ শতাংশ আমেরিকান মনে করেন, সমাজতন্ত্র একটি ইতিবাচক ব্যবস্থা এবং তাঁরা পুঁজিবাদকে আর ‘সঠিক পন্থা’ বলে মনে করছেন না। ফক্স নিউজের এক জরিপে দেখা গেছে, প্রাপ্তবয়স্ক আমেরিকানদের ৩৬ শতাংশ মনে করে, আমেরিকার এখন পুঁজিবাদ থেকে সরে সমাজতন্ত্রের পথে যাওয়া উচিত। অথচ ২০১২ সালে এমন মার্কিনের সংখ্যা ছিল মোটে ২০ শতাংশ। আরও আছে। হার্ভার্ড সার্ভের প্রতিবেদন বলছে, এখন মোটে ১৯ শতাংশ মার্কিন নিজেদের নিখাদ ‘পুঁজিবাদী’ বলে দাবি করছেন।

এসব জরিপের ফলাফলে একটি বিষয় স্পষ্ট, মার্কিন রাজনীতির ধারায় একটি পরিবর্তন আসছেই। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচিত হওয়ার বছরেই চমক দেখিয়েছিলেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বার্নি স্যান্ডার্স। ট্রাম্প ও হিলারি ক্লিনটনের তুলনায় প্রাইমারি ভোটে বেশিসংখ্যক তরুণ-তরুণীকে আকৃষ্ট করতে পেরেছিলেন তিনি। এবার সেই ঘরানার আরেক রাজনীতিক নতুন করে আলোড়ন তুলেছেন। তিনি হলেন আলেক্সান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্তেজ। নিউইয়র্কে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন কর্তেজ।

শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, যুক্তরাজ্যেও শক্ত ভিত গড়ে তুলতে পেরেছেন বামপন্থীরা। ব্রেক্সিট প্রশ্নে লেবার পার্টির জেরেমি করবিন জোরালো বক্তব্য রেখে চলেছেন। আবার ফ্রান্সে ২০১৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ২৪ বছরের কম বয়সী ভোটারদের এক-তৃতীয়াংশ ভোট দিয়েছে কট্টর বামপন্থীদের। অর্থাৎ বলা যায়, পুরো পশ্চিমা বিশ্বের রাজনৈতিক মঞ্চেই সমাজতন্ত্র ধীরে ধীরে জায়গা দখল করতে শুরু করেছে।

কিন্তু এই নতুন ধারার সমাজতন্ত্র আসলে কেমন? যুক্তরাষ্ট্রের স্যান্ডার্স-কর্তেজরা নিজেদের ‘ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট’ বলে অভিহিত করছেন। যুক্তরাজ্যের করবিনরাও প্রায় একই ধারার। এটি ঠিক সোভিয়েত ঘরানার কড়া নিয়মের সমাজতন্ত্র নয়। এঁদের বলা হচ্ছে ‘মিলেনিয়াল সোশ্যালিস্ট’। অর্থাৎ, একবিংশ শতাব্দীর নতুন ধারার সমাজতন্ত্রী তাঁরা।

মিলেনিয়াল সোশ্যালিস্টরা মনে করেন, পশ্চিমা সমাজব্যবস্থায় বৈষম্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। বর্তমান পশ্চিমা অর্থনীতিও শুধু বৈষম্য টিকিয়ে রাখার কাজই করছে। এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা অতি ধনীদের পক্ষে, সরকার এখন আর সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে না। এই সমাজতন্ত্রীদের মতে, সমতা বিধানের জন্য রাষ্ট্রকে উদ্যোগী হয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে মুক্তবাজার অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন, শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে সরকারি অনুদান বাড়ানোর কথা। এমনকি অতি ধনীদের ওপর বেশি করারোপ করে মধ্য ও নিম্নবিত্তদের বাড়তি সুবিধা দেওয়ার আলোচনা চলছে। তরুণদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন পশ্চিমা সমাজতন্ত্রীরা।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, মিলেনিয়াল সোশ্যালিস্টরা কিছু নির্দিষ্ট বিষয়কে পাদপ্রদীপের আলোয় এনে প্রচারণা শুরু করেছেন। অন্তত এটুকু বলা যায় যে এই বিষয়গুলো তরুণসমাজকে আগ্রহী করে তুলেছে। তবে মনে রাখতে হবে, সমাজতন্ত্র একটি জটিল অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। তাত্ত্বিকভাবে এটি শুনতে যত ভালোই লাগুক না কেন, এর প্রয়োগ সময়সাপেক্ষ ও কঠিনসাধ্য।

কোথায় আছে সমাজতন্ত্র?
বর্তমানে সমাজতন্ত্রী দেশ বা রাষ্ট্রের সংখ্যা বেজায় কম। উদাহরণ দিতে গেলে আসবে কয়েকটি নাম। এগুলো হলো চীন, ভিয়েতনাম, কিউবা, উত্তর কোরিয়া, ভেনেজুয়েলা ও লাওস। মনে রাখতে হবে, সমাজতন্ত্রী দেশ আর সমাজতন্ত্রী সরকার এক নয়। যেমন: মেক্সিকোয় সমাজতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় এসেছে ঠিকই, কিন্তু সেখানকার সরকারব্যবস্থা গণতান্ত্রিক।

এখনকার সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে চীন। মাও সে–তুংয়ের দেশে এখন আর মাওবাদ উচ্চকণ্ঠ নয়। অর্থনৈতিক সংস্কারের পর থেকে চীন পরিবর্তনের পথে হেঁটেছে। সমাজতন্ত্র ব্যক্তিগত সম্পদ বিলুপ্ত করার কথা বলে। কিন্তু কমিউনিস্ট চীনে সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন এসেছে। বলা হচ্ছে, পুঁজিবাদ ও মুক্তবাজার অর্থনীতির কিছু ধারণাকেই কাজে লাগিয়েছে চীন। দেশটি অর্থনৈতিক উন্নতিতে পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। এই পরিবর্তনের পথ ধরেই চীনে ৮০০ মিলিয়ন মানুষকে দারিদ্র্যের কশাঘাত থেকে বের করে আনা হয়েছে, বৈষম্যও তুলনামূলক কম। তবে হ্যাঁ, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো চীনেও গণমাধ্যমের ওপর কড়াকড়ি আছে। তাই চীনের অনেক সংবাদই সহসা সংবাদমাধ্যমে পাওয়া যায় না।

চীনের মতো উন্নতির পথে আছে ভিয়েতনামও। যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের শিকার হয়েও খুব কম সময়েই ঘুরে দাঁড়িয়েছে এই দেশ। সেখানে একদলীয় কমিউনিস্ট শাসন আছে। গণমাধ্যমের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ থাকায় ভিয়েতনামের ভেতরের অনেক খবর জানা দুঃসাধ্য। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২০ সালের মধ্যে দেশটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিতে পরিণত হবে।

তবে ভেনেজুয়েলা, উত্তর কোরিয়া ও লাওসের অবস্থা খুবই খারাপ। তিনটি দেশই অর্থনৈতিকভাবে দুরবস্থায় আছে। পরমাণু অস্ত্র দিয়ে বিশ্বের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উত্তর কোরিয়া, ধুঁকছে দুর্ভিক্ষে। ওদিকে ভেনেজুয়েলা অভ্যন্তরীণ সংকটে টালমাটাল। নিকোলাস মাদুরোর দেশ এতটাই অর্থনৈতিক সংকটে আছে যে অভাবের তাড়নায় সেখানকার ৩০ লাখ মানুষ দেশ ছেড়ে চলে গেছে। মুদ্রাস্ফীতির দরুন এক ডজন ডিমের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ডলারে! আর লাওস পূর্ব এশিয়ার দরিদ্রতম দেশ।

চীন-ভিয়েতনামের মতো করে প্রথাগত সমাজতন্ত্রের পথ থেকে কিছুটা সরে যাচ্ছে কিউবাও। ফিদেল কাস্ত্রোর দেশ এখন সোভিয়েত আমলের সংবিধান পরিবর্তন করতে চাইছে। সে ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত সম্পদকে যেমন স্বীকৃতি দেওয়া হবে, তেমনি সবকিছুতে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণও কিছুটা আলগা করা হচ্ছে। অর্থাৎ, কিউবা তার কিছু নাগরিককে ধনী হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে। তবে বহাল থাকছে কমিউনিস্ট পার্টির একদলীয় শাসনব্যবস্থা।

সুতরাং, এই কথা বলা যায় যে বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় টিকে থাকতেই নিজেদের চিরাচরিত কাঠামোয় পরিবর্তন আনছে চীন-কিউবা। সাবেক সোভিয়েত বা মাওবাদী কঠোর নিয়মকানুন বদলে সমাজতন্ত্র ও পুঁজিবাদের মাঝামাঝি একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। এতে যেমন সমাজতন্ত্রের নীতি প্রতিফলিত হচ্ছে, তেমনি আমলে নেওয়া হচ্ছে মুক্তবাজার অর্থনীতির কিছু সুবিধাও।

এখানে কী হচ্ছে?
উপমহাদেশে সমাজতান্ত্রিক রাজনীতির ধারা বেশ পুরোনো। সমাজতন্ত্রের বিভিন্ন ধারা সারা বিশ্বেই রয়েছে। তেমনি এ দেশেও সমাজতন্ত্রীরা নানা ভাগে বিভক্ত। মূল ধারা দুটি—একটি হলো সাবেক সোভিয়েতপন্থী, আর অন্যটি মাওবাদী। তবে এর বাইরেও আরও নানা দল-উপদল আছে।

১৯৯১ সালে ভেঙে গিয়েছিল সোভিয়েত ব্লক। শেষের দিকে অর্থনৈতিক সংকটে পড়েই এর দফারফা হয়েছিল। সৃষ্টি হয়েছিল বৈষম্যও। অথচ এই সমাজতন্ত্রে ভর করেই একদা সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রবল প্রতিপত্তির অধিকারী হয়েছিল। অর্থাৎ, এই ব্যবস্থাকে কোনোভাবেই ‘পুরোপুরি ব্যর্থ’ বলা যাবে না।

কিন্তু কেন এতে ঘুণ ধরেছিল? এর কারণ হিসেবে বিশ্লেষকেরা সেই আমলাতন্ত্র ও সম্পদের বৈষম্যকেই দায়ী করেছেন। যে বৈষম্য দূর করতে সোভিয়েত ইউনিয়নের জন্ম হয়েছিল, সেই বৈষম্যেই মুখ থুবড়ে পড়েছিল তা। একই সঙ্গে তৎকালীন কঠোর নিয়মকানুনের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ দেখা দিয়েছিল।

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটিয়ে উপমহাদেশে ভারত ভাগ হয়। জমিদারি প্রথার বিলুপ্তিও ঘটে। পরে বাংলাদেশের জন্ম হয়। এই পুরো সময় সমাজতন্ত্রীদের অবদান কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না। তবে ওই সময়ের বৈষম্য আর আজকের বৈষম্যের ধরন ও তীব্রতা কিন্তু এক নয়। আমাদের দেশের সমাজতন্ত্রী দলগুলো সেই সত্য অনুভব করতে পারছে কি না, সেটি একটি প্রশ্ন। অন্তত ভোটের রাজনীতিতে সমাজতন্ত্রীরা যে এখনো ঠিক সুবিধে করতে পারছে না, তা নির্বাচনের ফলাফল থেকেই স্পষ্ট। আবার আন্দোলনের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ কোনো অর্জনও সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে না। সুতরাং এটি মেনে নিতেই হবে যে কোথাও গলদ রয়েই যাচ্ছে।

শুধু রাজনীতি নয়, যেকোনো ক্ষেত্রেই সফল হতে হলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের পরিবর্তন খুব জরুরি। হালনাগাদ হতেই হয়, তা না হলে পিছিয়ে পড়তে হয়। আন্তর্জাতিকভাবে যেভাবে সমাজতন্ত্রের বিভিন্ন ধারা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে, দুঃখের বিষয় হলো এ দেশে তা এখনো শুরুই হয়নি। এখনো সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা বেশি হচ্ছে। সোভিয়েত ঘরানা ও চীনা ঘরানার মধ্যে কোনটি ভালো—সেই বিতর্কও চলমান। অথচ দুটি ঘরানাই এখন আগের চেয়ে অনেক পরিবর্তিত হয়ে গেছে। প্রশ্ন হলো, এই ভূখণ্ডের মানুষ সমাজতন্ত্রকে কীভাবে চায়, সেটি কি জানা সম্ভব হয়েছে? সে–সংক্রান্ত কোনো জরিপ বা গবেষণা কি দলগুলো করছে?

রাজনীতির প্রধান উপাদান জনগণ। তাই জনমানুষের মনোভাব জানতে ওপরের প্রশ্নটির উত্তর জানা জরুরি। এ জন্য জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর বিকল্প নেই। তা না হলে সমাজতান্ত্রিক ধারা বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও তা দিয়ে বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা সম্ভব হবে না। উল্টো মিটিং-মিছিলেই স্থবির থাকবে সমাজতান্ত্রিক ভাবনা।