Thank you for trying Sticky AMP!!

ইমরান খান

ইমরান খান ছাড়া নবাগতদের পিটিআই কেমন করবে পার্লামেন্টে

ইমরান খান, শাহ মেহমুদ কুরেশি, পারভেজ এলাহি ও রাজনীতিতে হেভিওয়েটদের অনুপস্থিতিতে একঝাঁক আইনজীবী এবার পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে পিটিআইকে প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছেন। তাঁদের অনেকেই দলে নবাগত। যোগ দিয়েছেন ২০২২ সালের এপ্রিলে ইমরান খানের পতনের পর। পিটিআই সংসদে বিরোধীদলীয় বেঞ্চে বসতে যাচ্ছে।

অপেক্ষাকৃত মৃদুভাষী গহর আলী খান, আগুনে মেজাজওয়ালা শের আফজাল মারওয়াত এবং সাবেক পিপিপি নেতা সরদার লতিফ খোসার সমন্বয়ে তৈরি বিরোধী দল আগের বছরগুলোর তুলনায় সংসদে শক্তিশালী ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।

তবে দলের সিংহভাগ বিশ্বাসযোগ্য নেতা ও অনুগত কর্মী–সমর্থকেরা দলে নবাগতদের ওপর পূর্ণ আস্থা রাখতে পারছেন না। পিটিআইয়ের পাক্কা অনুসারী হিসেবে দাবি করেন, এমন অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁদের এই অস্বস্তির একটাই কারণ। আর তা হলো এই আইনজীবীরা ‘শর্টকাট’ উপায়ে দলে ঢুকেছেন।

যদিও দলের এই নবাগতদের ইমরান খানকে সহায়তা করা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই, পিটিআইয়ের সঙ্গে দশকের ওপর আছেন, এমন কর্মী ও সমর্থকেরা সংসদে নতুন মুখদের নিয়ে অস্বস্তিতে আছেন।

পিটিআই সাধারণ নির্বাচনে এত বেশিসংখ্যক আইনজীবীকে কেন মনোনয়ন দিল, তার পেছনে দুটি প্রধান কারণ আছে। প্রথমত, দলের সিংহভাগ নেতা কারাগারে অথবা আত্মগোপনে ছিলেন। ফলে তাঁরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেননি।

আদিয়ালা কারাগারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইমরান খান তাঁর প্রার্থীদের নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছিলেন। বলেছিলেন, নির্বাচনে প্রথম ও দ্বিতীয় সারির নেতারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারায় তাঁকে অনূর্ধ্ব-১৬ দল নিয়ে খেলতে হচ্ছে।

দ্বিতীয়ত, দলটির প্রতিষ্ঠাতার সঙ্গে পরিবারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজন ও আইনজীবী ছাড়া আর কারও যোগাযোগের সুযোগ ছিল না। ইমরান খানের সঙ্গে দলের অন্যদের যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছেন আইনজীবীরা। একমাত্র তাঁরাই আদিয়ালা জেলে প্রবেশের অনুমতি পেতেন। ক্রমে তাঁরা ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন।

আদালতের সহকর্মীরা যখন একযোগে সংসদে ঢুকবেন, তখন তাঁদের মধ্যে পেশাগত বিদ্বেষ দেখা দিতে পারে, এ শঙ্কা আছে কারও কারও। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, শের আফজাল মারওয়াত পিটিআইয়ের আইনজীবী দলকে ধারাবাহিকভাবে সমালোচনা করে এসেছেন। অল্প কদিন আগেই শোয়াইব শাহিন ও ব্যারিস্টার গহরকে তিনি যেভাবে বিঁধেছেন, তা সবারই মনে আছে।

নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অযোগ্য ঘোষিত হওয়ার পর ইমরান খান তাঁর স্থলাভিষিক্ত করেন শাহ মেহমুদ কুরেশিকে। পরে কুরেশি গ্রেপ্তার হলে ব্যারিস্টার গহর পার্টি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন। তবে দলের অভ্যন্তরীণ নির্বাচনে ব্যারিস্টার গহর চেয়ারম্যান পদে উন্নীত হলেও পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপে এ সিদ্ধান্ত বাতিল হয়ে যায়। সাধারণ নির্বাচনে দলটি তাদের প্রতীক ‘ব্যাট’ও হারায়।

আগামী মাসে দলের নেতৃত্ব নির্বাচনে আরেক দফা ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা ব্যারিস্টার আলী জাফরকে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দিয়েছেন। কিন্তু আলী জাফর তাঁর পেশাগত ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে দলকে নেতৃত্ব দিতে অক্ষম বলে জানিয়ে দিয়েছেন।

ডন–এর সঙ্গে কথোপকথনে ব্যারিস্টার ও সিনেটর জাফর বলেন, যেহেতু তাঁকে ইমরান খানের মামলাগুলোয় মনোযোগ দিতে হচ্ছে, তাঁর পক্ষে এমন চ্যালেঞ্জিং কাজ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাঁর মতে, ব্যারিস্টার গহরই চেয়ারম্যান হিসেবে থেকে যেতে পারেন।

Also Read: বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের নির্বাচনের তুলনা কেন

শুরুতে ধারণা করা হচ্ছিল, ব্যারিস্টার গহর ও মারওয়াত জাতীয় পরিষদে বিরোধীদলীয় নেতার আসনে বসবেন। তবে পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান দলের মহাসচিব ওমর আইয়ুব খানের নাম প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য প্রস্তাব করেন। আলী জাফরের মতে, জাতীয় পরিষদে তিনিই হতে পারেন প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা। জাফর বলছেন, ওমর আইয়ুব খানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। কারণ, তিনি একজন ঝানু ও অভিজ্ঞ রাজনীতিক।

আদালতের সহকর্মীরা যখন একযোগে সংসদে ঢুকবেন, তখন তাঁদের মধ্যে পেশাগত বিদ্বেষ দেখা দিতে পারে, এ শঙ্কা আছে কারও কারও। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, শের আফজাল মারওয়াত পিটিআইয়ের আইনজীবী দলকে ধারাবাহিকভাবে সমালোচনা করে এসেছেন। অল্প কদিন আগেই শোয়াইব শাহিন ও ব্যারিস্টার গহরকে তিনি যেভাবে বিঁধেছেন, তা সবারই মনে আছে।

আবার যেমন ইমরান খানের যে আইনজীবী প্যানেল রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিল, এর মধ্যে লতিফ খোসা ছিলেন না। তারপরও আপিল করা হয়েছে, এমন এক ঘোষণা দিয়ে বসেন খোসা। এ নিয়ে যারপরনাই বিরক্ত হন ব্যারিস্টার জাফর। তিনি তাঁর অসন্তোষ চেপে রাখতে পারেননি।

খোসার এ ঘোষণার কারণে কাগজপত্র ঠিকঠাক না করেই ব্যারিস্টার জাফরকে তাড়াহুড়া করে আপিল পেশ করতে হয়। নিবন্ধন অফিস ওই আপিলে বেশ কিছু অসংগতির কথা জানায়। ভুল সংশোধন করে আপিল করতে করতে আরও প্রায় এক সপ্তাহ পার হয়ে যায়।

● মালিক আসাদ ডন–এর আদালত প্রতিবেদক

পাকিস্তানের পত্রিকা ডন–এ প্রকাশিত, ইংরেজি থেকে সংক্ষিপ্তাকারে অনূদিত