Thank you for trying Sticky AMP!!

অবিলম্বে নালা নির্মাণের কাজ শেষ করা হোক

ঢাকা বা নারায়ণগঞ্জের মতো যেসব শহর নদীবেষ্টিত, সেসব শহরে জলাবদ্ধতা থাকার একটা যুক্তি থাকতে পারে। নদী ভরাট হয়ে গেলে কিংবা শিল্পকারখানার বর্জ্যে পানি আটকে গেলে বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু দেশের দ্বিতীয় প্রধান সমুদ্রসৈকতের পাশে গড়ে ওঠা কুয়াকাটা শহরে কেন জলাবদ্ধতা হবে?

১৯৯৮ সালে কুয়াকাটাকে পর্যটন কেন্দ্র ঘোষণা করে সরকার। এরপর ২০১০ সালে কুয়াকাটা পৌরসভা ঘোষণা করা হয়। যোগাযোগব্যবস্থাও আগের চেয়ে ভালো। স্বাভাবিকভাবে কুয়াকাটা সৈকতের প্রতি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আগ্রহ বেড়েছে। পর্যটনকে কেন্দ্র করে এখানে ব্যবসা-বাণিজ্যেরও বেশ প্রসার ঘটেছে। বেড়েছে সরকারের রাজস্ব আয়। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দা কিংবা পর্যটকদের সমস্যা দেখার কেউ আছে বলে মনে হয় না।

সম্প্রতি প্রথম আলোর পটুয়াখালী ও কলাপাড়া প্রতিনিধি সরেজমিনে দেখতে পান, পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার মোহাম্মদ উল্লাহ সড়ক, ইলিশ পার্ক সড়ক, হোটেল বিচ ভ্যালির সামনের সড়ক, হোটেল রেইনডোর সামনের সড়ক, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রাখাইন মহিলা মার্কেট চত্বর, হিড বাংলাদেশ সড়ক এবং অস্থায়ী পৌর ভবন এলাকা পুরোপুরি পানির নিচে। এ ছাড়া ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পাঞ্জুপাড়া এলাকার বাড়িঘর হাঁটুপানিতে ডুবে রয়েছে। কিছু আবাসিক হোটেল ও বসতবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। এসব এলাকায় জমে থাকা পানির সঙ্গে ময়লা-আবর্জনা মেশায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

এ অবস্থায় কোনো পর্যটক এখানে আসতে চাইবেন না। পৌরসভা ঘোষণার ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও পৌরসভায় অভ্যন্তরীণ সড়ক ও পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়নি। এটাই জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পর্যটন শহর কুয়াকাটাকে নিয়ে যে ‘মাস্টারপ্ল্যান’ করা হয়েছিল, তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। দখল হয়ে গেছে খাল ও জলাশয়।

কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়রের দাবি, পৌরসভায় জলাবদ্ধতা নিরসনে ৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩ কিলোমিটার নালা নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলছে। চার কিলোমিটার নালা নির্মাণের কাজ শেষ হলেও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধের কারণে বাকি কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। এর অর্থ প্রকল্পের কাজ শুরুর আগে স্থানীয় বাসিন্দাদের সম্মতি নেওয়া হয়নি। অনেক প্রকল্পই নেওয়া হয় স্থানীদের মতামত উপেক্ষা করে। পরে প্রকল্পের কাজ বিলম্বিত হলে কর্তৃপক্ষ ইচ্ছেমতো ব্যয় বাড়িয়ে নেয়। এতে কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদার লাভবান হলেও ভোগান্তি বাড়ে সাধারণ মানুষের। এ ক্ষেত্রেও সে রকম কিছু হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার। দ্বিতীয় প্রশ্ন, এসব স্থাপনা বা নির্মাণকাজ বর্ষাকালে করতে ঠিকাদার ও কর্তৃপক্ষের এত আগ্রহ কেন? কেন তা শুকনো মৌসুমে করেন না? স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে সৃষ্ট বিরোধ মিটিয়ে কুয়াকাটার নালা নির্মাণের কাজ অবিলম্বে শেষ করা হোক।