Thank you for trying Sticky AMP!!

অবৈধ ভাটায় ইট পুড়ছে

সম্পাদকীয়

ইট তৈরির জন্য ভাটা স্থাপনসংক্রান্ত একটি আইন দেশে কার্যকর রয়েছে। আইনটির নাম ‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন’। সেই আইন অনুযায়ী লাইসেন্স ছাড়া ইট তৈরি করার সুযোগ নেই। লাইসেন্স ছাড়া কেউ ইটভাটা চালু করলে শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। এ জন্য অনধিক এক বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অথবা দুই দণ্ডই হতে পারে। আইন যদি কার্যকর না হয়, তাহলে আইন থেকেও কোনো লাভ নেই। ঠাকুরগাঁওয়ে তারই প্রমাণ মিলছে।

প্রথম আলোর খবর বলছে, জেলায় ইটভাটার সংখ্যা ১১৯টি এবং এর মধ্যে নিষিদ্ধঘোষিত স্থায়ী চিমনিবিশিষ্ট ভাটা ৭০টি। এ ভাটাগুলোর কোনোটিরই জেলা প্রশাসনের অনুমতি সনদ (লাইসেন্স) নেই। আর পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছে মাত্র তিনটির। এর মধ্যেও দুটি নবায়ন করা হয়নি। পরিবেশের ছাড়পত্র বা লাইসেন্সের তোয়াক্কা না করে ভাটাগুলোতে ইট পোড়ানো শুরু হয়েছে।

প্রশ্ন হচ্ছে, এ ইটভাটাগুলোর পরিবেশ ছাড়পত্র বা জেলা প্রশাসনের অনুমতি নেই কেন? এটা পরিষ্কার যে ইটভাটা স্থাপনের ক্ষেত্রে যে নিয়মনীতি মেনে চলা উচিত, তা এ ভাটাগুলো পূরণ করতে পারছে না। এ ইটভাটাগুলো যে বায়ুদূষণের জন্য মারাত্মকভাবে দায়ী, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। শীতকালে বাংলাদেশের বায়ুর মান সামগ্রিকভাবেই নিচে নেমে যায় এবং ইটভাটাগুলোকে বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ঠাকুরগাঁওয়ে গত তিন বছরে স্থানীয় অধিবাসীরা অন্তত ২০টি ইটভাটার বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেছে। এসব ইটভাটা সাময়িকভাবে বন্ধ করা হলেও পরে আবার চালু হয়েছে।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন কার্যকর করা বা জারি রাখা যাদের দায়িত্ব, সেই জেলা প্রশাসন এ ক্ষেত্রে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ঠাকুরগাঁওয়ের ডিসি কে এম কামরুজ্জামান সেলিম এ প্রসঙ্গে যা বলেছেন, তা বিস্ময়কর ও দায়িত্বহীন। তিনি বলেছেন, ‘সারা দেশে সব ভাটাই একইভাবে চলে। এটা নতুন কিছু নয়, অবৈধ কিছু না।’ তাঁর এ ধরনের মন্তব্যে আইনের প্রতি শ্রদ্ধার কোনো লক্ষণ মেলে না। জেলার ১১৯টি ইটভাটার একটিরও লাইসেন্স নেই, যেটা দেওয়ার দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের; তারপরও ডিসি কী করে এগুলোকে ‘অবৈধ কিছু না’ বলে মন্তব্য করেন!

জেলার ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সভাপতি মুরাদ হোসেনের দাবি, প্রয়োজনীয় সব কাগজ জমা দেওয়ার পরও পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন থেকে ইট পোড়াতে অনুমোদন সনদ দেওয়া হচ্ছে না। তবে তিনি বলেছেন, জেলা পরিষদের মৌখিক অনুমতি নিয়ে ইট পোড়ানোর কাজ শুরু হয়েছে। আইনে মৌখিক অনুমতি দেওয়ার কোনো সুযোগ আছে কি? আমরা এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করছি।