Thank you for trying Sticky AMP!!

আগাম বন্যা ও বৃষ্টি

এবারও ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে হাওরে, এবারও কেউ কথা রাখছে না। বৃষ্টি ও আগাম বন্যার আগেই ধান কাটা না হলে শুধু কৃষকেরই সর্বনাশ হবে না, এই গুরুতর সময়ে খাদ্যনিরাপত্তা নষ্ট হতে পারে। কিন্তু লকডাউনজনিত পরিস্থিতিতে বিশেষ ব্যবস্থায় ধান কাটার কাজ কাগজে যতটা, বাস্তবে অতি সামান্য।

কাগজে–কলমে ৫ এপ্রিল থেকে সরকারিভাবে ধান কেনা শুরুর কথা। কিন্তু এর মধ্যে ৫ ভাগ জমির ধানও কাটানো যায়নি, আর সরকারি ক্রয়ের কোনো হিসাবও জনসমক্ষে নেই। দৃশ্যত এবার সরকারিভাবে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ভালো। মুশকিল হলো সরকারিভাবে খুব ধীরে ধীরে লক্ষ্যমাত্রার ধান মৌসুমের একেবারে শেষে কেনা হয়। তখন কৃষক থাকে পর্যুদস্ত আর চালকলমালিকদের হয় পোয়াবারো। এই পদ্ধতিতে কৃষক দাম পান না, লাভের গুড় খেয়ে নেয় মিলমালিক ও ফড়িয়ারা। অথচ সরকারি বিধানে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক ধান সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে কেনার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বাকিটা দেবেন চালকলমালিক। বাজারের নিয়ম হলো সরকার কেনা শুরুর কিছু পরে বেসরকারি ক্রয় শুরু হয়। সরকার না কিনলে চালকলমালিকেরা কিনবে না, ফড়িয়ারা কিনবে না।

হাওরাঞ্চলের ধান বেচার অন্যতম মোকাম ভৈরবে মোটেই ধানের ক্রেতা নেই। হাটে, মোকামে, নৌকায় ধান পড়ে থাকছে। ওদিকে ৯৫ শতাংশ ধানই মাঠে পাকছে। এদিকে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। কাটা ধান ভিজছে। আবহাওয়া পূর্বাভাস বলছে, ২৫-২৮ এপ্রিল বাংলাদেশ ও ভারতের আসামসহ পুরো এলাকায় তুমুল বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা। তার ফলে বন্যা শুরু হবে। আমাদের হাওর বেসিন হলো আসাম উপত্যকার বৃষ্টির পানি জমার এলাকা। সুতরাং এর আগেই শুধু কাটা নয়, বিক্রির মাধ্যমে সরকারি গুদামে তুলতে না পারলে অনেক ধান নষ্ট হবে। কিন্তু ধান কাটার শ্রমিক নেওয়ার ব্যবস্থা হয়নি। এই শ্রমিকদের সরকারি ব্যবস্থাপনায় হাওরাঞ্চলে নেওয়া এবং যতটা সম্ভব স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজে নিয়োজিত করা ছাড়া উপায় নেই।

ধান কাটা, বিক্রি এবং গুদামজাতকরণ—এই তিন ক্ষেত্রেই সমস্যা জমে জমে সংকট হচ্ছে। এবার বিশ্বের কোথাও থেকে চাল কিনতে পারা কঠিন হবে। সরকার কি বুঝতে পারছে যে সময়ের এক ফোঁড় আর অসময়ের দশ ফোঁড়ের পার্থক্য?