Thank you for trying Sticky AMP!!

ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা

ঈদের ছুটিতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বড় শহর থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ সপরিবার গ্রামের বাড়িতে যায়। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, এই বাড়ি ফেরাটা স্বস্তিদায়ক হয় না। বিশেষ করে যানজটের কারণে লোকজনকে ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়। সড়ক-মহাসড়কে সুদীর্ঘ যানজটে বিপুলসংখ্যক মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে আটকে থাকে। তবে এবারের ঈদুল ফিতরে বাড়ি যাওয়ার সময় মানুষজন সেভাবে যানজটের কবলে পড়েনি। অন্যান্যবারের তুলনায় স্বস্তির সঙ্গে বাড়ি যেতে পেরেছে বেশির ভাগ মানুষ। এ ক্ষেত্রে কিছু সিদ্ধান্ত ও এর বাস্তবায়ন কাজ করেছে।

সরকার এবার ঈদের আগে তিন দিন এবং পরের তিন দিন মোট ছয় দিন সব সড়ক-মহাসড়কে মালবাহী ভারী ট্রাক, লরি ও কাভার্ড ভ্যান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এর পাশাপাশি মেয়াদোত্তীর্ণ বাস-ট্রাক চলাচলের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। শুধু তা-ই নয়, পুলিশ প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনগুলোও এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের ব্যাপারে বেশ তৎপর থেকেছে। পত্রপত্রিকার খবর অনুযায়ী, বেশ কয়েক জায়গায় নিষেধাজ্ঞা না মানার দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে রেকার দিয়ে আটক করা হয়েছে মেয়াদোত্তীর্ণ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান। ফলে সড়ক-মহাসড়ক যানজটমুক্ত ছিল। সরকার এর আগেও বেশ কয়েক বছর ঈদের আগে ও পরে মালবাহী ট্রাক, লরি ও ভ্যান চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। কিন্তু তাতে তেমন ফল মেলেনি। মানুষকে ঠিকই ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে। কারণ, তখন সিদ্ধান্তগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়নের উদ্যোগ ছিল না।

এখন ঈদের পর লোকজন কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন। আমরা চাই বাড়ি যাওয়ার মতো তাঁদের কর্মস্থলে ফেরাটাও স্বস্তিদায়ক হোক। এ জন্য হাইওয়ে পুলিশের বাড়তি তৎপরতা ও দায়িত্বশীলতা প্রয়োজন। ঈদের সময়ে সড়ক-মহাসড়কগুলোতে একই সময়ে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল করে। তাই দুর্ঘটনা, যান বিকল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি কারণে বিশৃঙ্খলা ও যানজট সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা যায়। এসব ব্যাপারে সতর্কতা অত্যন্ত জরুরি। 

১৬ কোটি মানুষের এই দেশে পর্যাপ্ত রাস্তাঘাটের অভাব রয়েছে। আবার রাস্তাঘাটের তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেশি। ফলে সড়ক-মহাসড়কে সারা বছরই যানবাহনের চাপ থাকে। ঈদের সময় এই চাপ অনেক বেড়ে যায়। এ জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা আনা। তাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত সড়ক ব্যবস্থাপনাকে আরও উন্নত করা এবং যানবাহন চালানোর নিয়মকানুন কঠোর করা। নিয়ম ভঙ্গকারীর জন্য শাস্তির ব্যবস্থা থাকতে হবে। তা না হলে নিয়ম ভাঙা হবেই।

এ ছাড়া সড়ক-মহাসড়কের পরিস্থিতির দিকেও খেয়াল রাখা উচিত। অনেক সময় দেখা যায়, সড়ক খারাপ হওয়ার কারণে যাত্রীদের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ঠিক সময়ে রওনা হলেও গন্তব্যে পৌঁছাতে অনেক দেরি হয়। এ জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, বিআরটিএ, মহাসড়ক পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে আরও তৎপর হতে হবে; তাদের দায়িত্বশীলতা বাড়াতে হবে। ঈদে নৌপথে যারা চলাচল করে, তাদের সুবিধা-অসুবিধার দিকেও নজর দিতে হবে।