Thank you for trying Sticky AMP!!

উদ্ভাবনে পিছিয়ে বাংলাদেশ

গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্স ২০১৮-এর প্রতিবেদনে এশিয়া মহাদেশে উদ্ভাবনের দিক থেকে বাংলাদেশের যে অবস্থান উল্লেখ করা হয়েছে, তা হতাশাজনক। প্রতিবেদন অনুযায়ী, উদ্ভাবনের দিক থেকে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি অন্য দেশগুলো হচ্ছে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, নেপাল ও কাজাখস্তান। আর উদ্ভাবনের দিক দিয়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছে সিঙ্গাপুর।

কেন বাংলাদেশ উদ্ভাবনের দিক দিয়ে পিছিয়ে আছে, সেটা ভাবনার বিষয় বটে। বাংলাদেশে যে নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন হয় না, তা নয়। আমাদের দেশে অনেক তরুণ নতুন চিন্তা ও সৃজনশীলতা নিয়ে এগিয়ে আসছেন। কিন্তু তাঁরা জানেন না তাঁদের ধারণা নিয়ে কোথায় যেতে হবে, তাঁরা যেটা উদ্ভাবন করতে যাচ্ছেন, তার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থই–বা কোথা থেকে জোগাড় হবে। অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা বাংলাদেশে উদ্ভাবনী চিন্তার প্রধান বাধা। আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে উদ্ভাবিত প্রযুক্তি বা পণ্যের বাজারজাত না হওয়া।

আমাদের দেশের অনেক তরুণ তাক লাগানো অনেক প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। রাজু নামে ভোলার এক কিশোর তৈরি করেছে জ্বালানিবিহীন মোটরসাইকেল। বগুড়ার যন্ত্রকৌশলী আমির হোসেন উদ্ভাবন করেছেন জ্বালানিবিহীন গাড়ি। মাত্র ২৫ টাকার কার্বন খরচ করেই এ গাড়ি টানা আট ঘণ্টা চলতে পারে, বহন করতে পারে যাত্রী ও মালামাল। ফরিদপুরের স্বল্পশিক্ষিত দরিদ্র যুবক হাবিবুর রহমান ইমরান এমন একটি গাড়ি উদ্ভাবন করেছেন, যেটা জলে-স্থলে সমানভাবে চলাচল করতে পারে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ ছাড়া বাল্ব জ্বালানো, মোবাইল–নিয়ন্ত্রিত হুইলচেয়ার বানানোসহ নানা প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন এ দেশের তরুণ বিজ্ঞানীরা। কিন্তু এসব উদ্ভাবন বাণিজ্যিক পর্যায়ে নেওয়ার কোনো উদ্যোগ নেই। উদ্ভাবনকে টেকসই করতে হলে অবশ্যই তাকে বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক করে তুলতে হবে। মানুষের কাছে এসব উদ্ভাবন পৌঁছে দিতে হবে। তা না হলে নতুন উদ্ভাবনে কেউ উৎসাহিত হবেন না।

এ ব্যাপারে সরকারের যে মনোযোগের ঘাটতি রয়েছে, তা তো বোঝাই যাচ্ছে। আমরা চাই সরকার এ দিকটিতে বিশেষভাবে নজর দিক। নতুন নতুন উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করতে বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি অন্যান্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকারকে এ ব্যাপারে একটি নীতিমালা তৈরি করতে হবে। পাশের দেশ ভারতে নতুন উদ্ভাবনকে এগিয়ে নিতে দীর্ঘমেয়াদি রোডম্যাপ রয়েছে। আমাদেরও এ রকম রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে। উদ্ভাবনের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে থাকা দেশ জাপানে উদ্ভাবনের জন্য সব ধরনের সুবিধাযুক্ত গবেষণাগার রয়েছে। সেখানে তরুণেরা গবেষণা করে নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করছেন।

আমাদের দেশেও এ রকম গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গুণগত মানের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। প্রযুক্তি শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে।