Thank you for trying Sticky AMP!!

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে মৃত্যু

বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ায় অনেকেই ভিড় করছেন কক্সবাজারে। করোনাকালে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর যে প্রভাব পড়েছে, সেটা থেকে স্বস্তি পেতেই নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ যাচ্ছেন সমুদ্র দেখতে। কিন্তু সৈকতের অনেক জায়গায় গুপ্তখাল ও চোরাবালি রয়েছে। সেখানে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের জীবন রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সরঞ্জাম ও নিরাপত্তাকর্মীও নেই। সমুদ্রে কখন নামতে হবে, কোন অংশে নামলে জীবনের ঝুঁকি আছে, সে সম্পর্কে ভ্রমণকারীরা সচেতন নন। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে লাল নিশানা ওড়ানো হয়েছে। কিন্তু অনেকে সতর্কবার্তা মানছেন না। ফলে প্রাণহানি থামানো যাচ্ছে না। এসব দুর্ঘটনায় অমূল্য জীবন যাচ্ছে, পরিবারগুলোয় নেমে আসছে বিপর্যয়।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, জোয়ার-ভাটার হিসাব না করে সমুদ্রে গোসলে নামছেন ভ্রমণে আসা পর্যটকেরা। এতে দুর্ঘটনা ঘটছে। গত দুই দিনে সৈকতে ভেসে আসে তিনজনের মরদেহ। তাঁদের মধ্যে দুজন ভ্রমণে আসা পর্যটক বলে ধারণা করা হচ্ছে। কক্সবাজারসহ অন্যান্য সমুদ্রসৈকতকে দেশি-বিদেশিদের জন্য পর্যটকবান্ধব করে গড়ে তোলার দাবি দীর্ঘদিনের। এ জন্য নিরাপত্তাকে কেন্দ্রে রাখা জরুরি। কিন্তু নীতিনির্ধারকেরা এ ক্ষেত্রে উদাসীনতার নীতি দেখাচ্ছেন। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, গত ১০ বছরে কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন, ইনানী সৈকতে পানিতে নেমে মারা গেছেন অন্তত ২০০ পর্যটক। গত দুই মাসে শুধু কক্সবাজার সৈকতেই স্রোতের টানে ভেসে যাওয়ার সময় উদ্ধার করা হয়েছে অন্তত ৫৫ জনকে।

সৈকতে নিরাপত্তাবেষ্টনী নির্মাণ, আধুনিক উদ্ধার যান ক্রয়, অভিজ্ঞ ডুবুরি, পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগসহ নানান পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথা বারবার আলোচনায় আসে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নানা সচেতনতামূলক উদ্যোগ নেওয়া হয়। গত শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে ১০ দিনব্যাপী বিশেষ জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি। ফায়ার সার্ভিসের সদস্য, ডুবুরি, লাইফগার্ডের কর্মী, ট্যুরিস্ট পুলিশ মানুষকে সচেতন করছে। সমুদ্রে নামতে ১০টি নির্দেশনা মেনে চলার কথা বলা হচ্ছে। প্রশাসনের এ উদ্যোগ যথেষ্ট না হলেও ইতিবাচক। পর্যটকদের সচেতন করার কর্মসূচি সেখানে সারা বছরই জারি রাখতে হবে।

সৈকতে যারা দুর্ঘটনায় পড়ছে, তাদের বেশির ভাগই কিশোর বয়সী ও শিক্ষার্থী। বিধিনিষেধ না মানার একটা প্রবণতা তাদের মধ্যে থাকে। তাদের মনস্তত্ত্ব বুঝে বিশেষ সচেতনতামূলক কর্মসূচি নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করতে হবে। সৈকতের ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় শুধু লাল কাপড় ওড়ানোই যথেষ্ট নয়। বেষ্টনী নির্মাণসহ সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা প্রহরী রাখাও জরুরি। মনে রাখা দরকার, জীবনের নিরাপত্তা সবার আগে।