Thank you for trying Sticky AMP!!

করোনাকালে প্রসূতিদের স্বাস্থ্যসেবা

করোনাসংকটের কারণে অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা গুরুতরভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শহর, গ্রাম—সব অঞ্চলেই অনেক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ ছাড়া পরিবহন সমস্যাও আছে। গ্রামাঞ্চলের স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেক দূরে গিয়ে ঘরে ঘরে স্বাস্থ্যসেবা দিতে হয়। প্রয়োজনীয় ওষুধ পৌঁছাতে হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় তাঁরা গণপরিবহনে আসা যাওয়া করতেন। এখন সেই সুযোগ নেই।

এই প্রেক্ষাপটে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার প্রসূতিদের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে প্রথম আলোতে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা উৎসাহব্যঞ্জক। স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী উপজেলায় ১ হাজার ৭৭১ জন প্রসূতির প্রত্যেকের ঘরে তিন মাসের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ যথাক্রমে আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ট্যাবলেট ইত্যাদি পৌছে দিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্যসেবাকর্মীরা। গজারিয়া ইউনিয়নের একজন স্বাস্থ্য সহকারী তাঁর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেছেন, ‘আমি ২১ জনের বাড়িতে গেছি। ওষুধ হাতে পাওয়ার পর আমি প্রত্যেক নারীর মুখে স্বস্তির ছাপ দেখেছি।’

ভৈরব উপজেলার প্রসূতিদের কাছে যাঁরা ওষুধ পৌঁছে দিয়েছেন, তাঁদের ধন্যবাদ জানাই। একই সঙ্গে আমাদের প্রত্যাশা, দেশের অন্যান্য উপজেলার প্রসূতিদের কাছে প্রয়োজনীয় ওষুধ পৌছে দেওয়া হবে। এ সময়ে তাঁদের নানা রকম শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। স্বাভাবিক অবস্থায় তাঁরা স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রে গিয়ে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতেন, কিন্তু করোনার সংকটের কারণে তা এখন সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদেরই রোগীর কাছে যেতে হবে।

রোগীদের চিকিৎসাসেবা না দেওয়ার কারণ হিসেবে অনেক স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র করোনাভাইরাসের দোহাই দিয়ে থাকে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অবগতির জন্য বলছি, ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রের একাধিক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যসেবাকর্মীও কোভিড–১৯ এ আক্রান্ত হয়েছিলেন। যদি তাঁরা সেই বাধা অগ্রাহ্য করে ঘরে ঘরে গিয়ে প্রসূতিদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারেন, ওষুধ পৌঁছে দিতে পারেন, তাহলে অন্যরা পারবেন না কেন?

করোনাকালে দেশে কয়েক লাখ প্রসূতি সন্তান জন্মদানের অপেক্ষায় আছেন। তাই তাঁদের নিয়মিত পরিচর্যা প্রয়োজন। নিয়ম অনুযায়ী প্রসূতিদের ৯ মাস স্বাস্থ্যসেবার আওতায় থাকতে হয়। এই সময়ে নিয়মিতভাবে আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ট্যাবলেট সেবন করতে হয়। আমাদের আশা থাকবে, দেশের সব উপজেলা স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র এ বিষয়ে উদ্যোগী ভূমিকা নেবে। আর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হলো, কাজটি ঠিকমতো হচ্ছে কি না, তা নিবিড়ভাবে তদারক করা।