Thank you for trying Sticky AMP!!

কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথ

ঈদ শেষে দক্ষিণাঞ্চল থেকে ঢাকামুখী মানুষকে ফিরতে হয় মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ঘাট ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট হয়ে। স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য সময়ের তুলনায় এই সময় এই নৌপথে যাত্রীদের চাপ একটু বেশি থাকে। ঈদে যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে ২০টি ফেরি, ৮৭টি লঞ্চ ও দেড় শতাধিক স্পিডবোট চলাচল করছে। কিন্তু এই নৌপথে যাত্রী পরিবহনে যে অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

প্রথম আলোয় শনিবার প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, প্রতিটি নৌযানে অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হচ্ছে এবং বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। ১৫-১৮ জন ধারণক্ষমতার স্পিডবোটে নেওয়া হচ্ছে ২০ থেকে ২৪ জন। ১২০ টাকা ভাড়া হলেও যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ২০০ টাকা। লাইফ জ্যাকেট পরার নিয়ম থাকলেও বেশির ভাগ যাত্রী তা পরছে না। এভাবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে উত্তাল পদ্মা। লঞ্চগুলোতেও ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। ছাদে তোলা হচ্ছে যাত্রীদের, যা কিনা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। লঞ্চের ভাড়া ৩০ টাকা হলেও ঈদের কথা বলে আদায় করা হচ্ছে ৪০ টাকা।

আমাদের প্রশ্ন, এই যে এত বিশৃঙ্খলা, কিন্তু তা দেখার কি কেউ নেই? সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন তাহলে কী করছে? এসব দেখার দায়িত্ব তো তাদেরই। এভাবে লাইফ জ্যাকেট পরা ছাড়া স্পিডবোটে করে যে নদী পার হচ্ছে যাত্রীরা, তাতে যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, তা হলে তার দায় কে নেবে? গত তিন বছরে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌ-রুটের পদ্মা নদীতে স্পিডবোট দুর্ঘটনায় অন্তত ৩০ জন প্রাণ হারিয়েছে। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে আমাদের দেশে লঞ্চডুবির ঘটনা তো বিরল কিছু নয়। তা হলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকার পরও কী করে লঞ্চ-স্পিডবোটে অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হচ্ছে?

আসলে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথে এ রকম অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনা নতুন কিছু নয়। বহু বছর ধরেই এটা হয়ে আসছে। ঈদের সময়ে অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি আর চাঁদাবাজি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় সাংসদ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা কাঁঠালবাড়ি ঘাটটি নিয়ন্ত্রণ করেন। তাই দীর্ঘদিনেও এ নৌপথে চলাচলকারী লঞ্চ, স্পিডবোট, ট্রলার ও ফেরিঘাটে সংঘটিত যাবতীয় অনিয়ম দূর করতে পারেনি প্রশাসন। ফলে লোকজনকে ব্যাপক দুর্ভোগ ও হয়রানির শিকার হতে হয়। কিন্তু এ রকম তো বেশি দিন চলতে পারে না।

এখন সময় হয়েছে সরকারের এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার। ফেরিঘাট বা নৌপথের নিয়ন্ত্রণ কোনো সাংসদের হাতে থাকতে পারে না। সরকারকে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির ব্যাপারে সজাগ থেকে তা নির্মূলের ব্যবস্থা করতে হবে।