Thank you for trying Sticky AMP!!

কুয়েতে দূতাবাসে ভাঙচুর

নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রবাসী শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ও আকামা (কাজের অনুমতিপত্র) আদায় নিয়ে কুয়েতের বাংলাদেশ দূতাবাসে যে ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে, তা অনাকাঙ্ক্ষিত ও উদ্বেগজনক।

প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, কুয়েতে কর্মরত তিন থেকে চার শ প্রবাসী গত বৃহস্পতিবার দূতাবাসে আসেন বকেয়া বেতন না পাওয়ার নালিশ নিয়ে। তাঁরা লেসকো নামে একটি কোম্পানিতে কাজ করলেও তিন মাস ধরে বেতন পাননি। মালিকপক্ষ তাঁদের কাজের অনুমতিপত্র নবায়ন না করে নতুন শ্রমিক নিয়োগ করছে বলেও অভিযোগ আছে। সমস্যাটি পুরোনো এবং শ্রমিকেরা বিষয়টি নিয়ে অনেক আগে থেকে দূতাবাসে ধরনা দিয়েও কোনো সদুত্তর পাননি। ফলে তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু বেতন না পাওয়া শ্রমিকদের ক্ষোভ আমলে না নেওয়ায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে।

শ্রমিকের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ প্রথমে ওই কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে এবং কোম্পানির একজন কর্মকর্তা এসে লিখিতভাবে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বকেয়া বেতন পরিশোধ ও আকামা নবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ পর্যন্ত হয়তো ঠিকই ছিল। কিন্তু কোম্পানির ওই প্রতিশ্রুতিতে শ্রমিকেরা আশ্বস্ত না হয়ে কোম্পানির কর্মকর্তাকে দূতাবাস ত্যাগ করতে দিতে চাননি। শ্রমিকেরা কেন আশ্বস্ত হতে পারেননি বা কোম্পানির কর্মকর্তাকে দূতাবাস ত্যাগ করতে দিতে চাননি, সেই প্রশ্নের জবাব না খুঁজে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ কার্যত অঘটনকে ত্বরান্বিত করেছে। শ্রমিকদের আপত্তি উপেক্ষা করে দূতাবাসের কর্মকর্তা কোম্পানির প্রতিনিধিকে গাড়ি পর্যন্ত তুলে দিতে গেলে হামলার ঘটনা ঘটে।

শ্রমিকদের আক্রমণে কাউন্সেলরসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা আহত হন। এটি দুঃখজনক। কিন্তু তিন মাস ধরে শ্রমিকদের বেতন না দিয়ে নিয়োগদাতার জবরদস্তিও কম দুর্ভাগ্যজনক নয়। দূতাবাস কর্মকর্তাদের ওপর আক্রমণ কিংবা বিদেশি কোম্পানির কর্মকর্তাদের আটক রাখার ঘটনা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক—এ কথা স্বীকার করে নিয়েও বলা যায় যে, দূতাবাস কর্তৃপক্ষ বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে পারেনি। ভাঙচুরের পর তারা শ্রমিকদের গ্রেপ্তার করাতে পুলিশ ডেকেছে। আগে পুলিশের সহায়তায় কোম্পানির কর্মকর্তাকে বের করানোর চেষ্টা করলে হয়তো অঘটনটি এড়ানো যেত।

দূতাবাস কর্তৃপক্ষ নির্দোষ কোনো শ্রমিককে হয়রানি না করার জন্য কুয়েত সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে। কিন্তু তাদের মনে রাখা উচিত, এ ধরনের বিক্ষোভে দোষী-নির্দোষ ব্যক্তি ভাগ করা কঠিন। এটি ছিল শ্রমিকদের স্বতঃস্ফূর্ত ক্ষোভের প্রকাশ। বকেয়া না পাওয়া শ্রমিকদের পাইকারি হারে গ্রেপ্তার না করিয়ে দূতাবাস কর্তৃপক্ষের উচিত হবে ত্রিপক্ষীয় (দূতাবাস, কুয়েত সরকার ও কোম্পানি) বৈঠকের মাধ্যমে সমস্যার সুরাহা করা।

আশা করি, কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রবাসী শ্রমিকদের বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিতে দেখবে; নিজেদের ব্যর্থতার দায় শ্রমিকদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করবে না।