Thank you for trying Sticky AMP!!

সম্পাদকীয়

চালু হওয়ার অপেক্ষার শেষ হোক

একটি বার্ন ইউনিট যে কতটা জরুরি, সেটির গুরুত্ব আমরা বুঝতে পেরেছি সম্প্রতি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায়। চট্টগ্রামের মতো শিল্পকারখানা অধ্যুষিত বিশাল এলাকায় একটি বার্ন হাসপাতাল না থাকাটা অবশ্যই দুঃখজনক। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যে বার্ন ইউনিটটি আছে, সেটির পরিসরও খুবই স্বল্প। ফলে অনেক গুরুতর রোগীকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছিল। অন্যদিকে বগুড়ার ২৫০ শয্যা মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে বার্ন ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে, কিন্তু সেটি এখনো চালুই করা হয়নি। অথচ ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই বার্ন ইউনিট স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছিলেন, সে অনুযায়ী প্রায় সোয়া চার কোটি টাকা ব্যয়ে পৃথক ভবনও তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সেটি অনেকটা খোলসের মতো পড়ে আছে, ভেতরে কিছু নেই; মানে প্রয়োজনীয় জনবল ও উপকরণ নেই।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে বার্ন ইউনিটের জন্য নবনির্মিত ভবনটি হস্তান্তর করা হয়। সেখানে ১০ শয্যাবিশিষ্ট দুটি বিশেষায়িত ওয়ার্ড, অস্ত্রোপচারকক্ষ, পর্যবেক্ষণ ইউনিট, চিকিৎসকদের বিশ্রামকক্ষ, কর্তব্যরত চিকিৎসকদের চেম্বারসহ নানা সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে। সবকিছুই তৈরি থাকলেও বার্ন ইউনিটটি থেকে কোনো সেবা নিতে পারছে না পোড়া রোগীরা। চিকিৎসার জন্য তাদের জন্য যেতে হচ্ছে বগুড়ার আরেকটি হাসপাতাল শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে। সেখানেও প্রশিক্ষিত ও প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় পোড়া রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয় না। প্রায় ১০ শতাংশ রোগীকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। এর ফলে রোগীদের চিকিৎসাখরচ ও ভোগান্তি দুই-ই বেড়ে যায়।

ভবন বুঝে নেওয়ার পর থেকেই বার্ন ইউনিটটি চালুর জন্য সচেষ্ট থেকেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনীয় জনবল, অস্ত্রোপচারকক্ষসহ জরুরি চিকিৎসার যন্ত্রপাতি চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে এ পর্যন্ত পাঁচ দফা চিঠি পাঠিয়েছে তারা। দেওয়া হয় একটি চাহিদাপত্রও। এরপরও বার্ন ইউনিটটির জন্য কোনো চিকিৎসক, সেবিকা ও স্বাস্থ্যকর্মীর পদ সৃষ্টি করা হয়নি, মেলেনি কোনো যন্ত্রপাতি বরাদ্দও। সর্বশেষ মাস দুয়েক আগেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি পাঠানো হয়। এরপরও বার্ন ইউনিটটি চালু না হওয়ার পেছনে আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাফিলতিই দেখতে পাই। আমরা তাদের কাছে জানতে চাই, কবে বগুড়ায় বার্ন ইউনিটটি চালু হবে?